পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১২ এই হঃসহ সংবাদের মৰ্ম্ম ক্ষণকাল গ্রহণ করিতে সমর্থ হন নাই । তিনি মাতাকে ষে ভৎসনা করিলেন, তাহা তাহার মহাছৰ্গতি স্মরণ করিয়া আমরা সম্পূর্ণরূপে সমরোপযোগী মনে করি । “তুমি ধাৰ্ম্মিকবর অশ্বপতির কন্যা নহ, তাহার বংশে রাক্ষসী । তুমি আমার ধৰ্ম্মবৎসল পিতাকে বিনাশ করিয়াছ, ভ্রাতাদিগকে পথের ভিখারী করিয়াছ, তুমি নরকে গমন কর।” ষধন কাতরকণ্ঠে ভরত এই সকল কথা বলিতেছিলেন, ভখন অপর গৃহ হইতে কৌশল্য। স্থমিত্রাকে বলিলেন—“ভরতের কণ্ঠস্বর শুনা যাইতেছে, সে আসিয়াছে, তাহাকে আমার নিকট ডাকিয়৷ আন ।” কৃশাঙ্গী সুমিত্রা ভরতকে ডাকিয়ী আনিলে কৌশল্য বলিলেন, “তোমার মাতা তোমাকে লইয়া নিষ্কণ্টকে রাজ্যভোগ করুন, তুমি আমাকে রামের নিকট পাঠাইয়া- দেও।” এই কটুক্তিতে মৰ্ম্মবিদ্ধ ভরত কৌশল্যার নিকট অনেক শপথ করিলেন ; তিনি এই ব্যাপারের বিন্দুবিসর্গও জানিতেন না,~—বহুপ্রকারে এই কথা জানাইতে চেষ্টা করির নিদারুণ শোক ও লজ্জায় অভিভূত ভরত নিজের প্রতি অজস্ৰ, অভিসম্পাতবৃষ্টি করিতে লাগিলেন। বলিতে বলিতে শোকে মুহমান হইয়া তিনি অজ্ঞান হইয়া পড়িয়া গেলেন । করুণাময়ী অম্বা কৌশল্য ধৰ্ম্মভীরু কুমারের মনের অবস্থা বুঝিতে পারিলেন,—র্তাহাকে স্বঙ্কে লইয়া কাদিতে লাগিলেন । ভরতের শোক এবং ঔদাসীন্ত ক্রমেই যেন বাড়িয়া চলিল। শ্মশানঘাটে মৃত পিতার কণ্ঠলগ্ন হইয়া কাদিতে কাদিতে বলিলেন, বঙ্গদশন । [ ৩য় বর্ষ, আষাঢ় । “পিত, আপনি প্রিয় পুত্রজ্জ্বল্পকে বনে পাঠাইয়া নিজে কোথায় যাইতেছেন ?” অশ্রুপুর্ণকাতরভৃষ্টি রাজকুমারকে বশিষ্ঠ তাড়না করিতে করিতে পিতার ঔদ্ধদৈহিক কাৰ্য্য সম্পাদনে প্রবৃত্ত করাইলেন, শোকবিহবলতায় ভরত নিজে একেবারে চেষ্টাশুম্ভ হইয়া পড়িয়াছিলেন । প্রাতে বন্দিগণ ভরতের স্তবগান আরম্ভ করিল, ভরত পাগলের স্তায় ছুটির তাছাদিগকে নিষেধ করিয়া দিলেন । “ইক্ষাকুৰংশের প্রথানুসারে সিংহাসন জ্যেষ্ঠ রাজকুমারের প্রাপ্য, তোমরা কাহার ধন্দন-- গীতি গাহিতেছ?” রাজমৃত্যুর চতুৰ্দ্দশ দিবসে বশিষ্ঠ প্রমুখ সচিববৃন্দ ভরতকে রাজ্যভার গ্রহণ করিতে অনুরোধ করিলেন । ভরত বলিলেন—“রামচন্দ্র রাজা হইবেন, অযোধ্যার সমস্ত প্রজাম গুলী লইয়া আমি তাহার প। ধরিয়া সাধিয়া আনিব, নতুবা চতুর্দশ ৰৎসরের জন্তু আমিও বনবাসী হইব ।” শক্রয় মস্থরাকে মারিতে গেলেন এষং কৈকয়ীকে তর্জন করিয়া অনুসরণ করিলে, ক্ষমার অবতার ভরত তাহাকে নিষেধ করিলেন । সমস্ত অযোধ্যাবাসী রামচন্দ্রকে मृ1 জানিতে ছুটিল ৷ শৃঙ্গবেরপুরীতে গুহকের ভরতের সাক্ষাৎকার হইল । ভরতকে গুহক প্রথমে সন্দেহ করিয়াছিল, কিন্তু ভরতের মুখ দেখিয় তাহার হৃদয়ের ভাব বুঝিতে বিলম্ব হইল না । ইঙ্গুদীমূলে . তৃণশয্যায় রাম শুধু একটু জল পান করিয়া রাত্রিযাপন করিয়াছিলেন, সেই তৃণশয্যা রামের বিশালবাহপীড়নে নিষ্পেষিত হইয়াছিল,