পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ميالا لا বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ, আষাঢ়। আলঙ্কারিক সাহিত্যের যথেষ্ট চুক্তিলাভ হইয়াছিল, তাহ তাৎকালিক প্রস্তরলিপি পড়িয়া ও বুঝিতে পারা যায় ৷ হইতে পারে যে, মৃচ্ছকটিক অতি প্রাচীন না হইলেও, কালিদাসাদির পুৰ্ব্বে ৪র্থ বা ৫ম শতাব্দীতে রচিত হইয়াছিল। এ অনুমানস্থাপনার অমুকুলেও কোন প্রমাণ পাই নাই ; বরং যত ভাবিয়া দেখি, ততই মনে হয় যে, মৃচ্ছকটক অপেক্ষাকৃত আধুনিক । কারণগুলি এই – ১ . নাটকব্যবহৃত-প্রাকৃতভাষা-সংবলিত যে সকল গ্রন্থের সময় একপ্রকার নির্ণীত হইয়া গিয়াছে, তাহার কোনখানিই যষ্ঠ শতাব্দীর পুর্ববর্তী নহে । যে সাহিত্য ৫ম বা ৬ষ্ঠ শতাব্দীর পূর্ববৰ্ত্তা বলি প্রমাণিত হইয়াছে, তাহার কোনখানিতেই এই শ্রেণীর প্রাকৃতভাষা দেখিতে পাওয়া যায় না । প্রাকৃতভাষা যে ঐ সময়ের পূর্বে গ্রন্থে ৰ্যবহৃত হইবার উপযোগী হয় নাই, তাহ। ১৩০৯ সালের পৌষমাসের প্রবাসীতে একটি ক্ষুদ্র নিবন্ধে লিখিয়াছি । এরূপ স্থলে যদি প্রমণ করিতে পার না বায় যে, চতুর্থ শতাব্দীতে অথবা তৎপুৰ্ব্বে এই ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রাকৃতভাষ প্রচলিত ছিল, তাছা হইলে মৃচ্ছকটিকের প্রাচীনত্ব প্রমাণ করা যা না । ই ! পালির সহিত প্রথমত সংস্কৃতের যত নৈকট্য ছিল, প্রাকৃতের সহিত ততটা ছিল না। ষে প্রাকৃত যত একালের, তত ত্বাহীর সন্ধিত সংস্কৃতভাষার দুরত্ব। মৃচ্ছকটক যদি কালিদাসের সময়ের পূর্ববর্তী হয়, তাহা হইলে মৃচ্ছকটিক-ব্যবহৃত প্রাকৃতের, সংস্কৃতের অধিক অনুরূপ কুইবার কথা । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেখিতে পাই যে, কালিদাসের সময়ের প্রত্যেক প্রাকৃতশব্দেরই একটি অক্ষরূপ ব্যুৎপাদক সংস্কৃতশব্দ আছে ; কিন্তু মৃচ্ছকটিকে এমন অনেক প্রাকৃতশব্দ পাওয়া যায় যে, যাহার সংস্কৃত প্রতিশব্দ দিতে হইলে, স্বতন্ত্র একটি শব্দ ব্যবহার করিতে হয় । ছিনলিয়াপুত্ত ( পুংশ্চলীপুত্র ), গোড় ( পদ ), মগ্‌গিছং ( প্রার্থয়িতুম্ ), ফুেলছ ( ক্ষিপতু ), পোট ( উদর ), হড়ক ( হৃদয় ), পিটছ ( বাংলা পেটে বা মারো ) প্রভৃতি সম্পূর্ণরূপ ভিন্ন শব্দ—কালিদাস, ভবভূতি বা ক্রহর্ষে পাওয়ু, যায় না । যে সকল সংস্কৃতভাঙা শব্দ প্রাকৃতে ব্যবহৃত, তাহাতে এই একটা লক্ষণ দেখিতে পাওয়া যায় যে, শব্দগুলি যত প্রাচীন সময়ের, তত সেগুলি সংস্থতশব্দের কাছাকাছি । কালিদাসের সময়ে আত্মা, আত্মনঃ প্রভৃতির স্থলে অক্সা, আৰ্ত্তন প্রভূতি দেখিতে পাই ; কিন্তু সপ্তম শতাব্দীর মৃত্নাবলীতে অল্পী, অপ্লন প্রভৃতি একালের ‘আপন’শব্দের কাছাকাছি শব্দ পাই । মৃচ্ছকটিকে ও তাহাই ; বরং সংস্কৃতের "ত’এর স্থলে “প’ খুব বেশীপরিমাণে ব্যবহৃত । ‘কৰ্ত্তন করিব।” কথার প্রাকৃতে “কল্পেম দেখিতে পাই । তাহার পর বুড়া ( বৃদ্ধ ), হলয়ং (হৃদয়ং ), বইল্প ( বলীবর্দ ) প্রভূতি শব্দ দেখিলে এই প্রাকৃত যে রন্থাবলীর প্রাঙ্কতেরও পরবর্তী, এইরূপই মনে করা সঙ্গত । পাঠকের দেখিতে পাইবেন যে, মৃচ্ছকটিকের যে সকল প্রাকৃতশব্দ উদ্ধৃত করিয়াছি, তাছার সকল গুলিই একালের বাংলা, উড়িয়া, মারাঠা প্রভূতি ভাষায় ব্যবহৃত শব্দের সম্পূর্ণ নিকট