পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় সংখ্যা । ] প্রাচীন-জর্ববলপুর-প্রসঙ্গ । S8S অনতিদূরে গিরিশৃঙ্গের উপর অস্থাপি এই রমণীয় ভবন বিদ্যমান রহিয়াছে । জববলপুরযাত্রী প্রায় সকলেই এই স্থান দেখিতে যান ; কিন্তু কাহার দ্বারা বা কোন সময়ে ইহা নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল, অনেকেই তাহার অনুসন্ধান করেন না । প্রকাও শিলাখণ্ডের শু পরাশি ভেদ করিয়া সপের দ্যায় বক্রগতি পথ অবলম্বনে এস্থানে আরোহণ করিতে হয়। অনেকদুর এই গিরিপথ অতিক্রম করিলে প্রস্তররাশিবেষ্টিত এক রমণীয় ক্ষুদ্র সরোবর ও তাহার সমীপে একটি সামান্ত গৃহের ভগ্নাবশেষ দেখিতে পাওয়া যায়। ইহ পূৰ্ব্বে বোধ হয় দ্বাররক্ষকের আবাসস্থান ছিল । আরও কিঞ্চিৎ উদ্ধে মদনমহলের সোপান । এই ত্রিতল প্রাসাদ অষ্ট শতাব্দীর ঝঞ্জাবাত ও ভূমিকম্প মস্তকে বহন করিয়া এখনও অভগ্ন অবস্থায় কেবলমাত্র একখানি শিলাখণ্ডের উপর সমভাবে দণ্ডায়মান আছে । প্রস্তরখণ্ড ও সমতল নহে, গোলাকার বর্জুলের স্থায় ; তাহার উপরে অপুৰ্ব্ব কৌশলে মূলভিত্তিশূন্ত এই অট্টালিকা স্থাপিত। এরূপ নিৰ্ম্মাণপ্রণালী বোধ হয় আধুনিক স্থাপত্যবিদের বুদ্ধির অগম্য । গৃহের ছাদ ও দেওয়াল ইষ্টক ও প্রস্তরে মিশ্রিত। যে শিলাখণ্ডের উপর অট্টালিকা গ্রথিত, তাহার সংলগ্ন আর একটি সুবৃহৎ শিলার উপরেও বাটীর কিয়দংশ বিস্তৃত। এই দুই শিলার সন্ধিস্থলে কয়েকপংক্তি সোপান এখনও পুৰ্ব্ববৎ রহিয়াছে । ইহা অবলম্বনে এক সঙ্কীর্ণ পথে প্রবেশ করিয়া কয়েক পদ অতিক্রম করিলে একটি ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠ দৃষ্ট হয়। সোপানসাহায্যে আবার দ্বিতলে আরোহণ করিলে সম্মুখে স্বপ্রশস্ত ছাদ, তাহার পর বারাও ও একটি বৃহৎ ঘর। স্নানাগার ইহারই সংলগ্ন ও তাহার পশ্চাতে আর একটি ক্ষুদ্র ঘর। ছাদ হইতে ত্রিতলে উঠিবার সোপান । ত্রিতলের কক্ষটি সৰ্ব্বাপেক্ষ বৃহৎ ; দৈর্ঘ্যে বিংশতি ফুটের অধিক এবং প্রস্থে প্রায় দশফুট হইবে। তাহার সম্মুখে আবার একটি দালান। উদ্ধে নীল অনন্ত আকাশসম্মুখে যতদুর দৃষ্টিগোচর হয়, বিন্ধ্যাচলের শৈলশ্রেণী বিস্তৃত—নিম্নে স্থদুরে ক্ষুদ্র নগরী ও সংসারের কোলাহল । * . . " প্রবাদ এইরূপ যে, গড়মণ্ডলের নৃপতিগণ দারুণ গ্রীষ্মের সময় মদনমহলে আসিয়া বাস করিতেন। এখনও এই অট্টালিকার, চতুদিকে ভগ্নাবশেষ নিরীক্ষণ করিলে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, ইহা পূৰ্ব্বে গিরিহুর্গের ন্তায় সুদৃঢ়রূপে রক্ষিত ছিল । কোন কোন স্থলে ভগ্ন পাষাণময় প্রাচীর ও সিংহদ্বার এখনও বর্তমান রহিয়াছে। চারিদিকে প্রাচীরসংলগ্ন রক্ষীদিগের আবাসগৃহ এখনও কিয়দংশ দৃষ্ট হয়। প্রাচীরের নিকটে একটি ভূগর্ভস্থ প্রকোষ্ঠ ও উহাতে অবতরণ করিবার সোপান এখনও ভগ্নাবস্থায় পতিত আছে । ইহা" বোধ হয় উত্তরপশ্চিম প্রদেশের ‘তয়খানা'র দ্যায় রাজাদিগের মধ্যাহ্লক বিশ্রামাগার ছিল । পাষাণময় প্রদেশে এরূপ হৰ্ম্ম্যরাজি নিৰ্ম্মাণ করা কিরূপ ব্যয় ও আয়াস সাধ্য, তাহ এস্থান দেখিলেই উপলব্ধি হইবে । কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ইহা এক্ষণে জনশূন্ত—বন্যজন্তুর বাসস্থান। যে পৰ্ব্বতশৃঙ্গোপরি মদনমহল নিতি