مانند বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ, শ্রাবণ । ক্রমশ মন্থর হইয়া আসিল । পরিশ্রাত্ত হইয়া যখন ইহুদীমূলে তিনি নিত্রিত হইয়া পড়িলেন, তখন তৃণশয্যাশায়িনীর সুন্দর বর্ণ অতিপক্লিষ্ট ও অনশনজনিত মুখস্ত্রীর বিষণ্ণতা দেখিয়া রামচন্দ্র অদৃষ্টকে ধিক্কার দিতে লাগিলেন । কিন্তু কষ্ট স্থায়ী হয় না,— প্রভাতে চিত্রকুটের শৃঙ্গে বনতরুর পুষ্পসমৃদ্ধি দেখাইয়া রামচন্দ্র সীতাকে আদর করিতে লাগিলেন,—সীতা সেই আদরে ও সোহাগে পুনরায় ফুল্লা হইয়া উঠিলেন, পদ্ম উত্তোলন করিয়া সীতা মন্দাকিনীসলিলে স্নান করিলেন, তটিনীর মন্দমারুত-চালিত-তরঙ্গধ্বনি তাহার নিকট সর্থীর আহবানের স্তায় মৃদুমনোরম বোধ হইতে লাগিল,--তিনি স্বামীর পাশ্বে স্বভাবের. রম্যশোভা দর্শন করিয়া অযোধ্যার মুখ অকিঞ্চিৎকর মনে করিলেন । বনবাসের ত্রয়োদশ বৎসর অতিবাহিত হইল, রাজবধু বনদেবতার মত বন্যফুল পরিয়া রামের মনে হর্ষ উৎপাদন করিতেন ; কেবল একদিন রামের জ্যানিনাদকম্পিত শান্তু বনভূমির চাঞ্চল্য দেখিয়া সাধবী রামচন্দ্রকে বলিয়াছিলেন, “তুমি অহেতুবৈর ত্যাগ কুর ; তুমি পারিব্রাজ্য অবলম্বন করিয়া বনে অসিয়াছ, এখানে রাক্ষসদিগের সঙ্গে শত্রুত৷ করা সময়োচিত নহে ; তোমার নিষ্কলঙ্ক চরিত্রে পাছে -নিষ্ঠুরতা বৰ্ত্তে, আমার এই আশঙ্কা —“কদৰ্য্যকলুষ" বুদ্ধির্জায়তে শস্ত্রসেবনাৎ । পুনর্গত্ব। ধ্যায়াং ক্ষত্ৰধৰ্ম্মং চরিষ্যসি ।” ‘ક્ષિણ कश्वन शबिक्छ यनरब्रांद्र निकल्ले बनिग्रां সীতা কথাবার্তায় নিযুক্ত থাকিতেন, কথন গদগদনার্দী গোদাবরীতীরে স্বীয় অঙ্কে দ্যস্ত মস্তক মৃগয়াশ্রাস্ত শ্রীরামচঞ্জের মুখে ব্যজন করিতেন, কখন স্থকেশী তাহার কর্ণন্তলম্বিত চুর্ণকুন্তল কণিকারপুষ্পদামে সাজাইয়া দিতেন, —অযোধ্যার রাজলক্ষ্মী বনলক্ষ্মীর বেশে এইভাবে স্বামীর সঙ্গে সময় অতিবাহিত করিয়াছিলেন । স্বতীক্ষঞ্চষির সঙ্গে দেখা করিয়া রাম অগস্ত্যাশ্রমে গমন করিলেন । তখন শীতকাল আসিয়া পড়িয়াছে- তুষারমিশ্র জ্যোৎস্ন। ও মৃদুস্বৰ্য্য, নিম্পত্র তরু ও যবগোধূমাকীর্ণ প্রশস্তর বনের বৈচিত্র্য সম্পাদন করিয়াছে, বিরাধরাক্ষসের হস্ত হইতে নিস্কৃতি পাইয়। সীতা স্বামীর সঙ্গে ক্রমশ দাক্ষিণাত্যের নিম্নপ্রদেশে উপস্থিত হইলেন । তীব্র বন্যপিপ্ললীর গন্ধে বন্তবায়ু আকুলিত হইতেছিল ; শালিধান্তসকল খর্জুরপুষ্পাকৃতি পূর্ণতণ্ডুল শীর্ষসমুহে আনম্র ও কনকপ্রভ হইয়া শোভা পাইতেছিল । বনোন্মত্তা মৈথিলী নদীপুলিনের হিমাচ্ছন্ন প্রাস্তরে, কাশকুসুমশোভিত বনান্তে মুক্তবেণী পৃষ্ঠে দোলাইয়৷ ফলপুষ্পের সন্ধানে বেড়াইতে থাকিতেন, কখন বt তাপসকুমারীগণের নিকট স্পৰ্দ্ধা করিয়া বলিতেন, “আমার স্বামী পরস্ত্রীমাত্রকেই মাতুবৎ গণ্য করেন । ধৰ্ম্মপ্রাণ স্বামীর গুণকীৰ্ত্তন করিতে র্তাহার কণ্ঠ আবেগে উচ্ছ - সিত হইয়া উঠিত । পঞ্চবটীতে উপস্থিত হইয়া সীতা একেবারে রঙ্গিনীশূঙ্গ হইয়। পড়িলেন, সেখানে নিকটে কোন ঋধির আশ্রম ছিল না । এই স্থানে স্বপণখার নাসাকর্ণচ্ছেদ ও রামের শরে খরদূষণ দি চতুর্দশসহস্র রাক্ষস নিহত হুইল । লওকারণ্যের রাক্ষসগণের মধ্যে অভূতপূৰ্ব্ব মহুষ্যভয়ের
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৭৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।