ኃ ፃ,9 সীতা অীর সহ করিতে পারিলেন না, সাশ্রচক্ষে বলিয়া উঠিলেন, “অমৃতং বিষসংপৃক্তং ত্বয়া বানর ভাষিতম্।” তৎপরে হকুমান রামের করতুষণ অঙ্গুরীয় অভিজ্ঞানস্বরূপে সীতাকে প্রদান করিলেন— “গৃহীত্ব প্রেক্ষমাণ সা ভৰ্ত্ত : করবিভূষিতম্। ভর্তারমিব সম্প্রাপ্ত সা সীতা মুদিতাভবৎ ।” তখন সেই চারুমুখীর বহুদিনের দুঃখ ঘুচিয়া যে আনন্দরেখায় গণ্ডস্বয় উল্লসিত হইয়া উঠিয়াছিল, তাহ আমরা চিত্রিত করিতে পারিব না, সেই অঙ্গুরীর স্থখম্পর্শে বহুদিমের স্বতি, বই সুখদুঃখ, সেই গদগদনাদি-গোদাবরীপুলিনের রামসঙ্গ, কত অাদর ও স্নেহের কথা মনে পড়িল, তাহার কৃষ্ণপক্ষান্ত চক্ষুর কোণ হইতে অজস্র অশ্রুবিন্দু পতিত হইতে লাগিল। হনুমান সীতাকে পৃষ্ঠে করিয়া রামের নিকট লইয়া যাইতে চাহিলে সীতা স্বীকৃত হইলেন না । “রাক্ষসেরা পশ্চাৎ অমুসরণ করিলে আমি সমুদ্রের মধ্যে পড়িয়া যাইব, আর স্বেচ্ছাপুৰ্ব্বক আমি পরপুরুষ স্পর্শ করিব না ।” আর একদিনের চিত্র মনে পড়ে,—রাক্ষসগণ নিহত হইয়াছে, সীতাকে বিভীষণ রামের নিকট লইয়া যাইতে আসিলেন । নানা রত্ন ও বিচিত্র বস্ত্র দেখিয়া পাংশুগুষ্ঠিতসৰ্ব্বাঙ্গী সীতা বলিলেন—“অস্বাত দ্রষ্টুমিচ্ছামি বঙ্গদর্শন। [ಅ T # / ভৰ্ত্তীরং রাক্ষসেশ্বর ” হনুমান সীতার সঙ্গিনী রাক্ষসীদিগকে তাড়না করিতে গেলে ক্ষমাশীল। সীতা বায়ণ করিয়া বলিলেন, “প্রভুর নিয়োগে ইহারা যাহা করিয়াছে, তজ্জন্ত ইহারা দওtহঁ। নহে po - তাহার পর বিশাল সৈন্তসংঘের সম্মুখে রাম সীতাকে অতি কঠোর কথা বলিলেন, লজ্জায় লজ্জাবতী যেন মরিয়া গেলেন, কিন্তু তেজস্বিনীর মহিমা ফুরিত হইয়া উঠিল ;–রামের কঠোর উক্তি প্রাকৃতজনৈাচিত, ইহা বলিতে সাধীর কণ্ঠ দ্বিধাকম্পিত হইল না—তিনি পতির পদে অশেষ প্ৰণতি জানাইয়া মৃত্যুর জন্ত প্রস্তুত হইলেন এবং উদ্যত অশ্র মার্জন। করিয়া অধোমুখে স্থিত স্বামীকে প্রদক্ষিণপুৰ্ব্বক জলস্ত চিতায় প্রবেশ করিলেন । তৎপরে কষিতস্থবৰ্ণপ্রতিমার স্থায় এই দেবীকে উঠাইয়া অগ্নি রামের হস্তে অপণ করিয়া বলিলেন,—“যিনি আজন্মশুদ্ধা, তাহাকে আর আমি কি শুদ্ধ করিব।” এই সতীচিত্র বাল্মীকি চিরজীবন্ত করিয়া রাখিয়াছেন, ইহার বিশাল আলেখ্য হিন্দুস্থানের গৃহে গৃহে এখনও স্থশোভিত রহিয়াছে, অলক্ষিতভাবে সীতার পত্নীত্ব হিন্দুস্থানের পত্নীকুলের মধ্যে অপূৰ্ব্ব সতীত্ববুদ্ধির সঞ্চার করিয়া আমাদের দেশকে পবিত্র করিয়া রাখিয়াছে। ঐদীনেশচন্দ্র সেন।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৮১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।