>b’8 সমবেত হইয়া সৰ্ব্বসাধারণের জন্ত কোন কার্কের মীমাংসা ও শেষনিষ্পত্তি করিবার কোন উপায় নাই। - মুসলমানদিগের সম্বন্ধে গ্রন্থকার এইঙ্ক বলেন ৪— - বঙ্গদেশ ও দীক্ষিণাত্যের দিকে অগ্রসর হওয়া যায়, ততই কাট-ছাট পরিচ্ছদের পরিবর্তে সেলাই-হীন ধুতি-কাপড়ের ব্যবহার দেখিতে পাওয়া যায়। দর্জির শিল্প; বুটাদার কাজ, এদেশে মুসলমানকর্তৃকই প্রথম প্রবর্তিত হয়। শীতদেশের উপযোগী লম্ব জাম বা চাপ্ৰকান এবং রেশমি কিংবা মখমলের জরির-কাজ-কর আঁটা-সঁটি ফতুয়া এখন ভারতবর্ষের সর্বত্রই ব্যাপ্ত হইয়াছে ॥. মুসলমানের প্রথম এদেশে পাগড়ি প্রবৰ্ত্তিত করে। এক্ষণে হিন্দুরাও বর্ণ ও শ্রেণী ভেদে বিবিধ-আকারের পাগড়ি গ্রহণ করিয়াছে । দাড়িরাখা অভ্যাসটি মুসলমানেরাই এদেশে অনিয়াছে । এই অভ্যাসটি এখন আর মুসলমানজাতির মধ্যে বদ্ধ নাই । যদিও দুই বৃহৎ মুসলমান-সম্প্রদায় মুসলমান ধৰ্ম্মের সারাংশ ভারতবর্ষে অবিৰুতভাবে রক্ষণ করিয়া আসিয়াছে এবং যদিও তাহারা মুখে পৌত্তলিকতার প্রতি ঘোরতর স্থণা প্রকাশ করিয়া থাকে, তথাপি তাহাদের ধর্মের বাছ অনুষ্ঠানে—বিশেষত শিয়াসম্প্রদায়ের মধ্যে—হিন্দুধৰ্ম্মের প্রভাব কিছু-কিছু প্রবেশ করিয়াছে দেখিতে পাওয়া যায়। মুসলমান ধৰ্ম্ম আসলে যার-পর-নাই সাদা-সিধা এবং পৃথিবীর তাবৎ ধৰ্ম্মের মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষ অতীন্দ্রিয় ও স্বশ্নধারণা-সাপেক্ষ । কিন্তু ভারতবর্ষে আসিয়া উহা স্থতাবশেষ-চিকু-পূজা বজত্বশজ । t৩য় বর্ষ শ্রাবণ ও মূর্তিপুজার সহিত যেন একটু জড়িত হইয়? পড়িয়াছে। মুসলমান ফকির ভারতে আসিয়া কতকটা হিন্দুসন্ন্যাসীর ধরণধারণ অবলম্বন করিয়াছে। শিয়ারা মোহরম্-উৎসবের সময় “তাজিয়া” বাহির করে এবং পরিশেষে উহ। পুড়াইয়া হিন্দুদিগের দ্যাল্প নদীজলে বিসর্জন করে । আহমদাবাদের সন্নিকটে প্রাচীরবেষ্টিত একটি পুণ্যবৃক্ষ আছে, মুসলমানের। তাহার অত্যন্ত ভক্ত ; তাহারা সেই বৃক্ষের তলায় বলয়াদি স্থাপন করে ; এবং তাঁহাদের বিশ্বাস, রাত্রিযোগে বৃক্ষটি শাখাহস্ত বাড়াইয়t ঐ বলয়গুলি গ্রহণ করে । কোন কোন মুসলমান-পীরের সমাধিমন্দিরে হিন্দুর তীর্থযাত্র করে। আজমীরে এইরূপ একটি সমাধিমন্দির আছে ; সেখানে দুইটি উৎসৰ-মেল। হইয়া থাকে ;–একটি হিন্দুদিগের, আরএকটি মুসলমানদিগের । অন্তান্ত নৈবেস্থসামগ্রীর মধ্যে পুষ্পমুকুটসকল সেখানে অৰ্পিত হয়। হিন্দুমন্দিরের প্রবেশদ্বারে যেরূপ দীপাবলী দৃষ্ট হয়, তাহারি অনুকরণে ঐ মসজিদের বহিঃস্থিত মিনার স্তম্ভের ধুমমলিন কুলুঙ্গিসমূহে দীপ জালানো হইয়। থাকে ; ধনী তীর্থযাত্রীদিগের ব্যয়ে প্রকাওপ্রকাও কড়ায় চাউল, দুগ্ধ, ফল ও গরমমশলাদি মিশ্রিত একপ্রকার পায়স প্রস্তুত করিয়া মসজিদের রক্ষিবর্গকে বিতরণ করা হয় । ইহাতে লক্ষটাকা ব্যয় হইয়া থাকে । কিন্তু হিন্দু ও মুসলমান ধর্মের মধ্যে কোন-কোন অংশে যে এইরূপ • সংস্পর্শ ও সংস্রব দৃষ্ট হয়, উহা আসলে অভ্যস্তরিক নছে—উহা বাহ্যিক মাত্র । প্রকৃতপক্ষে, মুসলমানদিগের ভারতাক্রমণের আরম্ভ হইতে
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৮৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।