পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

2byte कश्चमनि । [ ૭૬ বধ শ্রাবণ। বিলক্ষণ প্রতীতি হয়, ভারতের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রাস্ত পৰ্য্যন্ত মুসলমানদিগের মধ্যে পরস্পর কথা-চালাচালি হইয়া থাকে । ভারতের সীমান্ত প্রদেশের পরপারে যে-সকল ঘটনা সঙ্ঘটিত হয়, অতীব নিরক্ষর মুসলমানও তাহার খবর রাখে ; কাবুলের আমীর যে তাহাদেরি সহধৰ্ম্মী ;—এমন কি, আরো দুরে—রুশসৈন্তমধ্যে মুসলমানের যে, সেনাধ্যক্ষপদে নিযুক্ত হইয়াছে—এই সকল বিষয়ে তাহারও কতকটা অস্পষ্ট ধারণা আছে, দেখিতে পাওয়া যায়। . ভারতে মুসলমানরাজত্ব বিলুপ্ত হইয়াছে, কিন্তু তাহার স্মৃতি মুসলমানদিগের মধ্যে জাগরূক রহিয়াছে। একজন সামান্ত মুসলমান-ভূত্য, সে-ও জানে, একসময়ে মুসলমানেরা ভারতবর্ষের রাজা ছিল এবং তাহাদের বাদশার দিল্লি, আগ্রা প্রভৃতি স্থানে জমৃকালো স্মৃতিচিহ্লসকল রাখিয়া গিয়াছেন । তবে কি মুসলমানদিগের প্রতিশোধ লইবার ইচ্ছা আছে ?—পূর্বরাজত্ব আবার তাহাদের হস্তগত হইবে, এরূপ আশা কি তাহারা এখনও করিয়া থাকে ?—ইহা ঠিক করিয়া বলিতে পারা যায় না । কেন না, দেখা যায়, মুসলমানের সর্বত্রই স্বল্পভাৰী ; খঞ্জনদিগের নিকট কোনো কথা উহার বিশ্বাস করিয়া বলে না । তবে, যতক্ষণ তাহাদের চাকুরি করে, ততক্ষণ তাহাঙ্গেয় প্রতি একপ্রকার মুকসন্মান প্রদর্শন করে মাত্র । মুসলমানের স্বীয় অবিচলিত গাম্ভীৰ্য্যআবরণের মধ্যে নিজ মনোভাব গোপন করিয়া রাখে। এই বিষয়ে হিন্দুদিগের সহিত তাহাদের প্রভেদ স্পষ্টরূপে লক্ষিত হয় । মুসলমানদের নিকট হইতে এইটুকুমাত্র জানা যায় যে, তাহদের বিশ্বাস—তাহার হিন্দু কাফেরদের অপেক্ষা অনস্তগুণে শ্রেষ্ঠ । ভারতবর্ষের সমস্ত জাতির প্রতিনিধিগণ যে “দ্যাশনাল কংগ্রেসে” প্রতিবৎসর সমবেত হইয়া থাকেন, সেই কংগ্রেস-সভায় একজন পয়গম্বরের বংশধর বলিয়াছিলেন যে, “অনতিকাল পূৰ্ব্বে, হিন্দুদিগের অপেক্ষ মুসলমানদিগের স্বাতন্ত্র্যপ্রিয়তা, কার্য্যোদ্যম, উৎসাহবীৰ্য্য অধিক ছিল । আরো তিনি এই কথা বলিয়াছিলেন যে, “পুৰ্ব্বতন জেতুবংশের যাহারা প্রতিনিধি, সেই প্রকৃত মুসলমানদিগের অণন্তরিক সাহায্য না পাইলে, কংগ্রেস কিছুই করিয়া উঠিতে পারিবে না । আমাদের পুৰ্ব্বতন যোদ্ধাদিগের বংশধরেরা যদি কংগ্রেসের কাজে অস্তরের সহিত যোগ দেন, তবেই কংগ্রেস সফলতা লাভ করিতে পারিবে ।” যাহার এইরূপ ধরণের কথাবার্তা কহে, তাহাদের কথা শুনিয়া হঠাৎ যাহা মনে হয়, আসলে তাহী নহে—ইংরাজরাজত্বের বিদ্রোহী হইতে তাহারা আদেী প্রস্তুত নহে। মনে হয়, আকবর-রাজত্বের পুনরুদ্ধার করিবার আশা আপাতত তাহারা একেবারেই পরিত্যাগ করিয়াছে। এক্ষণে তাহীদের আশাভরসা ভারতের সীমা • ছাড়াইয়া সমস্ত মুসলমানরাজ্যের উপর দ্যস্ত। তাহাদের দৃঢ়ৰিশ্বাস, এক সময়ে মহম্মদের ধৰ্ম্ম সমস্ত পৃথিবী জয় করিবে। যদিও আপাতত ক্ষণকালের জন্ত উহার গতি স্তম্ভিত হইয়াছে, কিন্তু কোন-এক-সময়ে ভূমণ্ডলের অপর