ক্ষান্তি । ক্ষান্ত করিয়াছ তুমি আপনারে, তাই হের আজি তোমার সৰ্ব্বাঙ্গ ঘেরি পুলকিছে শু্যাম শম্পরাজি প্রফুটিত পুষ্পজগলে ; বনস্পতি শত বরষার আনন্দবর্ষণকাব্য লিখিতেছে পত্রপুঞ্জ তার বন্ধলে শৈবালে জটে ; স্বছৰ্গম তোমার শিখর নির্ভয় বিহঙ্গ যত গীতোল্লাসে করিছে মুখর। আসি নরনারীদল তোমার বিপুল বক্ষপটে নিঃশঙ্ক কুটীরগুলি বাধিয়াছে নিঝরিণীতটে । • যেদিন উঠিয়াছিলে অগ্নিতেজে স্পদ্ধিতে আকাশ, কম্পমান ভূমণ্ডলে, চন্দ্রস্বৰ্য্য করিবারে গ্রাস,— সে দিন, হে গিরি, তব এক সঙ্গী আছিল প্রলয় : যখনি খেমেছ তুমি বলিয়াছ, “আর নয়, নয়,চারিদিক্ হ’তে এল তোমা’পরে আনন্দ-নিশ্বাস, তোমার সমাপ্তি ঘেরি বিস্তারিল বিশ্বের বিশ্বাস । শিলালিপি । আজি হেরিতেছি আমি, হে হিমাদ্রি, গভীর নির্জনে পাঠকের মত তুমি বসে অছি অচল আসনে, সনাতন পুথিখানি তুলিয়া লয়েছ অঙ্ক’পরে। পাষাণের পত্রগুলি খুলিয়া গিয়াছে থরে থরে, পড়িতেছ একমনে । ভাঙিল গড়িল কত দেশ, গেল এল কত যুগ—পড়া তব হইল না শেষ । আলোকের দৃষ্টিপথে এই ষে সহস্ৰ খোলা পাতা ইহাতে কি লেখা আছে ভব-ভবানীর প্রেমগাথা ? নিরাসক্ত নিরাকণজক ধ্যানাতীত মহাযোগীশ্বর কেমনে দিলেন ধরা স্বকোমল ছৰ্ব্বল স্বন্দর বাহুর করুণ আকর্ষণে ? কিছু নাহি চাহি যায়, তিনি কেন চাহিলেন—ভাল বাসিলেন নিৰ্ব্বিকৰ্ণয়,পরিলেন পরিণয়পাশ ? এই যে প্রেমের লীলা ইহারি কাহিনী বহে, হে শৈল, তোমার যত শিলা ?
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৯৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।