হরগৌরী। হে হিমাত্রি, দেবতাত্মা, শৈলে শৈলে আজিও তোমার অভেদাঙ্গ হরগৌরী আপনারে যেন বারম্বার শৃঙ্গে শৃঙ্গে বিস্তারিয়া ধরিছেন বিচিত্র মুরতি । ওই হেরি ধ্যানাসনে নিত্যকাল স্তন্ধ পশুপতি, ছৰ্গম ছঃসহ মৌন –জটাপুঞ্জ তুষারসংঘাত নিঃশব্দে গ্রহণ করে উদয়াস্ত রবিরশ্মিপাত পুজাস্বর্ণপদ্মদল ৷ কঠিন প্রস্তরকলেবর মহান-দরিদ্র, রিক্ত, আভরণহীন দিগম্বর ! হের তারে অঙ্গে অঙ্গে একি লীলা করেছে বেষ্টন— মৌনেরে ঘিরেছে গান, স্তৰূেরে করেছে আলিঙ্গন সফেনচঞ্চল নৃত্য, রিক্ত কঠিনেরে ওই চুমে কোমল শুমলশোভা নিত্যনব পল্পবে কুসুমে ছায়ারেীদ্রে মেঘের খেলায় ! গিরিশেরে রয়েছেন ঘিরি পাৰ্ব্বতী মাধুরীচ্ছবি তব শৈলগৃহে হিমগিরি ! তপোমূৰ্ত্তি । তুমি আছ হিমাচল ভারতের অনস্তসঞ্চিত তপস্তার মত ! স্তন্ধ ভুমানন্দ যেন রোমাঞ্চিত নিবিড় নিগুঢ় ভাবে পথশূন্ত তোমার নির্জনে, নিষ্কলঙ্ক নীহণরের অভ্ৰভেদী আত্মবিসৰ্জ্জনে ! তোমার সহস্রশৃঙ্গ বাহু তুলি কহিছে নীরবে ঋষির আশ্বাসবাণী—“শুন শুন বিশ্বজন সবে জেনেছি, জেনেছি আমি !” যে ওস্কার আনন্দ-আলোতে উঠেছিল ভারতের বিরাট্ট গভীর বক্ষ হ’তে আদিঅস্তবিহীনের অখওঅমৃতলোকপানে, সে আজি উঠিছে বাজি, গিরি, তব বিপুল পাষাণে । একদিন এ ভারতে বনে বনে হোমাগ্নি-আহুতি ভাষাহারা মহাবার্তা প্রকাশিতে করেছে আকুতি, সেই বহিৰাণী আজি অচলপ্রস্তরশিখণরূপে শৃঙ্গে শৃঙ্গে কোন মস্ত্রে উচ্ছসিছে মেঘধুম সূপে ।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৯৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।