পঞ্চম সংখ্যt. ] লক্ষমশ । ミ○* স্নেহার্জ হৃদয় বহন করিয়া আসিয়াছেন, আজি তিনি জেহেল্প ছন্দ ও ভাষা রোধ করিতে পারিলেন লা । পরিচয়প্রদানের পর তিনি বলিলেন—“দস্তুর নির্দেশে আজ আমরা সুগ্ৰীবের শরণাপন্ন হইতে আসিয়াছি । যে রাম শরণাগতদিগকে অগণিত ৰিক্ত অকুষ্ঠিতচিত্তে দান করিয়াছেন, সেই জগৎপুজ্য রাম আজ বানরাধিপতির শরণ পাইবার জন্য এখানে উপস্থিত।. ত্রিলোকবিশ্ৰুতকীৰ্ত্তি দশরথের জ্যেষ্ঠ পুত্র আমার গুরু রামচন্দ্র স্বয়ং বানরাধিপতির শরণ লইবার জন্ত এখানে অtসিয়াছেন । সৰ্ব্বলোক র্যাহার অtশ্রয়লাভে কৃতার্থ হুইত, যিনি প্রজাপুঞ্জের রক্ষক ও পালক ছিলেন, আজ তিনি আশ্রয়ভিক্ষা করিয়া সুগ্ৰীবের নিকট উপস্থিত। তিনি শোকাভিভূত ও আর্ত, স্বগ্রীব অবশ্যই প্রসল্প হইয়া তাহীকে শরণ দান করিবেন ।”—বলিতে বলিতে লক্ষ্মণের চিরনিরুদ্ধ অশ্রু উচ্ছসিত হইয়া উঠিল, তিনি কাদিয়া মৌন হইলেন । রামের দুরবস্থাদর্শনে লক্ষ্মণ একাস্তরূপে অভিভূত হইয়াছিলেন, তাহার দৃঢ়চরিত্র আর্দ্র ও করুণ হইয়া পড়িয়াছিল। এই নিত্য দুঃখসহায় তৃত্য, সখা ও কনিষ্ঠ ভ্রাত রামের প্রাণপ্রিয় ছিলেন, তাহ বলা বাহুল্য । অশোকবনে হকুমানের নিকট সীতা বলিয়াছিলেন, "ভ্রাতা লক্ষ্মণ আমা অপেক্ষ রামের নিয়ত প্রিয়তয় ।” রাবণের শেলে বিদ্ধ লক্ষ্মণ ঘেদিন যুদ্ধক্ষেত্রে মৃতকল্প হইয়া পড়িয়া ছিলেন, সেদিন আমরা দেখিতে পাই, জাহত শাবককে ব্যাখ্রী বেরূপ রক্ষা *দুম, রাম কনিষ্ঠকে সেইরূপ জাগুলিয়া లి বসিয়া আছেন ;–রাবণের অসংখ্য শর রামের পৃষ্ঠদেশ ছিন্নভিন্ন করিতেছিল, সেদিকে দৃকপাত না করিয়া রাম লক্ষ্মণের প্রতি সজল চক্ষু দ্যস্ত করিয়া তাহাকে রক্ষণ করিতেছিলেন । বানরসৈন্ত লক্ষ্মণের রক্ষণভার গ্রহণ করিলে তিনি যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইলেন, এবং রাবণ পৃষ্ঠভঙ্গ দিয়া চলিয়া গেলে মৃতকল্প ভ্রাতাকে অতি সুকোমলভাবে আলিঙ্গন করিয়া রাম বলিলেন—“তুমি যেরূপ আমাকে বনে অনুগমন করিয়াছিলে, আজ আমিও তেমনি তোমাকে যমালয়ে অনুগমন করিব, তোমাকে ছাড়িয়া আমি বাচিতে পারিব না । সীতার মত স্ত্রী অনেক খুজিলে পাওয়া যাইতে পারে, কিন্তু তোমার মত ভাই, মন্ত্রী ও সহায় পাওয়া যাইবে না। দেশে দেশে স্ত্রী ও বন্ধু পাওয়া যাইতে পারে, কিন্তু এমন দেশ দেখিতে পাই না, যেখানে তোমার মত ভাই জুটিবে । এখন উঠ, নয়ন উন্মীলন করিয়া আমায় একবার দেখ ; আমি পৰ্ব্বতে বা বনমধ্যে শোকার্ব, প্রমত্ত বা বিষন্ন হইলে, তুমিই প্রবোধুবাক্যে আমায় সাম্বন দিতে, এখন কেন এইরূপ নীরব হইয়া আছ ?” . রামের আজ্ঞাপালনে লক্ষ্মণ কোনকালে দ্বিরুক্তি করেন নাই, দ্যায়সঙ্গত হউক বা না হউক, লক্ষ্মণ সৰ্ব্বদা মৌনভাবে তাহ পালন করিয়াছেন। রাম সীতাকে বিপুল সৈন্তসংঘের মধ্য দিয়া শিবিক ত্যাগ করিয়া পদব্রজে আসিতে আজ্ঞা করিলেন । শতশত দৃষ্টির গোচরীভূত হইয়া সীতা লজ্জায় যেন মরিয়া যাইতেছিলেন, ত্রীড়াময়ীর সৰ্ব্বাঙ্গ কম্পিত হইতেছিল। লক্ষ্মণ এই দৃশু দেখিয়া ব্যথিত হইলেন, কিন্তু রামের কাৰ্য্যের
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২২০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।