২২ e ত্যাগ করিয়া সমুলে ধৰ্ম্মলোপ করিয়াছেন। আপনি পিতৃ-আজ্ঞা শিরোধাৰ্য্য করিয়া বনবাসী হওয়াতেই আপনার প্রাণাধিক পত্নীকে রাক্ষসেরা অপহরণ, করিয়াছে।” এই প্রথরব্যক্তিত্বশালী যুবক শুধু সেহগুণেই একাত্তরূপে ব্যক্তিত্বহীরা হইয়া পড়িয়াছিলেন। ভরতের চরিত্র রমণীজনোচিত কোমল মধুরতায় ভূষিত, উহা সাত্বিক বৃত্তির উপর অধিষ্ঠিত । রামের মত বলশালী চরিত্র রামায়ণে আর নাই এবং রামের মত দুৰ্ব্বলও বোধ হয় রামায়ণে আর কেহ নহে । রামচরিত্র বড় জটিল । কিন্তু লক্ষ্মণের চরিত্রে আদ্যন্ত পুরুষকারের মহিমা দৃষ্ট হয়। উহাতে ভরতের মত করুণরসের স্নিগ্ধতা ও স্ত্রীলোকস্থলভ খেদমুখর কোমলতা নাই। উহা সতত দৃঢ়, পুরুষোচিত ও বিপদে নিৰ্ভীক । লক্ষ্মণ অবস্থার কোন বিপৰ্য্যয়েই নমিত হইয়া পড়েন নাই । বিরাধরাক্ষসের হস্তে সীতাকে নিঃসহায়ভাবে পতিত দেখিয়া রামচজ “হায়, আজ মাতা কৈকয়ীর আশা পূর্ণ হইল” বলিয়া অবসর হইয়া পড়িলেন । লক্ষ্মণ ভ্রাতাকে তদবস্থ দেখিয়া ক্রুদ্ধ সপের স্তায় নিশ্বাসত্যাগ করিয়া বলিলেন—“ইন্দ্রতুল্য-পরাক্রাস্ত হইয়া আপনি কেন অনাথের ভায় পরিতাপ করিতেছেন ? অামুন, আমরা ক্লাক্ষসকে বধ করি ।” শেলবিদ্ধ লক্ষ্মণ পুনর্জীবন লাভ করিয়া যখন দেখিতে পাইলেন, রাম তাহার শোকে অধীর হইয়া সজলচক্ষে স্ত্রীলোকের মত বিলাপ করিতেছেন, তখন তিনি সেই কাতর অবস্থাতেই রামকে এরূপ পৌরুষহীন মোহপ্রাপ্তির জন্ত তিরস্কার করিয়াছিলেন । शञनश्-मि । [ ৩য় বর্ষ, ভাজ । বিরহের অবস্থায় রামের একাত্ত বিহবলতা দেখিয়া তিনি ব্যথিতচিত্তে রামকে কত্ত উপদেশ দিয়াছিলেন—তাহা একদিকে যেমন সুগভীর ভালবাসার ব্যঞ্জক, অপর দিকে সেইরূপ র্তাহার চরিত্রের দৃঢ়তাস্থচক । “আপনি উৎসাহশূন্ত হইবেন না”, “জাপনার এরূপ দৌৰ্ব্বল্যপ্রদর্শন উচিত নহে*, পুরুষকার অবলম্বন করুন” ইত্যাদিরূপ নানাবিধ মেহের গঞ্জনা করিয়া তিনি একদিন বলিয়াছিলেন —“দেবগণের অমৃতলাভের দ্যায় বহু তপস্তল ও কৃচ্ছসাধন করিয়া মহারাজ দশরথ আপনাকে লাভ করিয়াছিলেন, সে সকল কথা আমি ভরতের মুখে শুনিয়াছি —আপনি তপস্তার ফলস্বরূপ । যদি ৰিপদে পড়িয়া আপনার দ্যায় ধৰ্ম্মস্থা সহ করিতে ন পারেন, তবে অল্পসত্ব ইতর ব্যক্তিরা কিরূপে সহ করিবে ?” রামের প্রতি জ্ঞাতসারে হউক ৰ৷ অজ্ঞাতসারে হউক, যে কেহ অদ্যাপ্ত করিয়াছে, লক্ষ্মণ তাহা ক্ষমা করেন নাই, এ কথা পূৰ্ব্বেই বলিস্বাছি । দশরথের গুণরাশি তাহার সমস্তই বিদিত ছিল, ক্রোধের উত্তেজনায় তিনি যাহাই বলুন না কেন, দশরথ যে পুত্ৰশোকে প্রাণত্যাগ করিবেন, এ কথাও তিনি পূৰ্ব্বেই অনুমান করিয়াছিলেন, তথাপি তিনি দশরথকে মনে মনে ক্ষমা করেন নাই । স্বমন্ত্র বিদায়কালে যখন লক্ষ্মণকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কুমার, পিতৃসকাশে আপনার কিছু বক্তব্য আছে কি ?” তখন লক্ষ্মণ বলিলেন, “রাজাকে বলিও, রামকে তিনি কেন বনে পাঠাইলেন, নিরপরাধ জ্যেষ্ঠপুত্রকে কেন পরিত্যাগ করিলেন, তাহ আমি চিত্তা
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২২৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।