ఫిలిస్రి বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ, ভাত্র । (ছ) বক্তিয়ার খিলিজি জীবিত থাকিতে বরেন্দ্রের কিয়দংশমাত্রই মুসলমানের অধিকারভুক্ত হয়। র্তাহীর মৃত্যুর পর রাঢ় পরাজিত হয় এবং বক্তিয়ারের বঙ্গাগমনের ৬০ বৎসর পরেও মুসলমান ইতিহাসলেখক বঙ্গ (পূর্ববঙ্গ ) হিন্দুরাজার অধিকারভুক্ত থাকে, ইহা স্বচক্ষে দর্শন করিয়া স্বরচিত ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন । এই সকল সিদ্ধান্ত কোন কোন প্রমাণমূলে কিরূপে পণ্ডিতসমাজে স্বীকৃত হইয়াছে, তাহার আলোচনায় প্রবৃত্ত হইবার পূৰ্ব্বে বক্তিয়ার থিলিজির সংক্ষিপ্ত জীবনকাহিনীর আলোচনা করা আবশুক । এই আলোচনায় প্রবৃত্ত হইবার পূর্বেই বলিয়া রাখি,— মুসলমানলিখিত ইতিহাসে বাঙালীর পুরাবৃত্ত নিতান্ত সংক্ষিপ্তভাবে আলোচিত হইয়াছে ; তাহাতে অনুসন্ধিৎসা পরিতৃপ্ত হয় না। সে যুগে যাহারা ইতিহাসরচনা করিয়া গিয়াছেন, র্তাহারা বিচারবুদ্ধির সহায়তা গ্রহণ করেন নাই ; যাহা শুনিয়াছেন, যাহা জানিয়াছেন, যাহা দেখিয়াছেন এবং যাহা অনুমান করিয়াছেন, তাহাই অবলীলাক্রমে লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন । ভারতবর্ষের ইতিহাসে প্রসঙ্গক্রমে যিনি বঙ্গভূমির কথা যতটুকু লিখিয়া গিয়াছেন, তাহাই বাঙলার ইতিহাসের অবলম্বন । বক্তিয়ার খিলিজির সমসময়ে কোন মুসলমান লেখক বাঙলার স্বতন্ত্র ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেন নাই ; করিয়া থাকিলেও সেরূপ গ্রন্থ বর্তমান নাই । স্বতরাং বক্তিয়ার খিলিজির দিগ্বিজয়সম্বন্ধে অধিক কিছু জানিবার উপায় নাই । " $২৬০ খৃষ্টাব্দের সমকালে আবু উমর মিনহাজ উদ্দীন “তবকৎ-ই-নাসেরী”নামক ইতিহাসের বিংশতিতম অধ্যায়ে বঙ্গভূমির ষে ংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদান করিয়া গিয়াছেন, তাহাই মুসলমানলিখিত বাঙলার ইতিহাসের আদিগ্রন্থ । অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে মালদহপ্রবাসী গোলাম-হোসেন-সঙ্কলিত “রিয়াজ-উস-সলাতিন নামক গ্রন্থ ভিন্ন বাঙলার আদ্যস্তের ধারাবাহিক আর কোন গ্রন্থ মুসলমানকর্তৃক.লিখিত হয় নাই। মিনহাজের গ্রস্থের ইংরাজী ও গোলাম হোসেনের গ্রন্থের বাঙলা অম্বুবাদ প্রকাশিত হইস্থাছে । কিন্তু ইহার কোন গ্রন্থেই গৌড়ীয় হিন্দুসাম্রাজ্যের বিশ্বাসযোগ্য ইতিহাস প্রাপ্ত হওয়া যায় না । অদ্যান্ত প্রমাণ বলে সেকালের ইতিহাসের ছায়ামাত্র ঈষৎ প্রতিভাত হইতে পারে । মুসলমান-শাসন প্রবৰ্ত্তিত হইবার অৰ্যবহিত পূৰ্ব্বে আর্য্যাবর্তের পূর্বাঞ্চলে নানা রাষ্ট্রবিপ্লব সংঘটিত হইয়াছিল । তাহাতে পুরাতন মগধ, কান্তকুজ ও গৌড়ীয় হিন্দুসাম্রাজ্যের সীমা ও অধিকার বহুবার বিপর্য্যস্ত ও পরিবৰ্ত্তিত হইরা যায় । কান্তকুজ প্রৰল হইয়া মগধের পশ্চিমাঞ্চল অপহরণ করায়, পলায়নপর মগধেশ্বর গৌড়ের কিয়দংশ অধিকার করেন, পরে গৌড়ীয় হিন্দুসাম্রাজ্যে পাল ও সেন বংশীয় নরপালবর্গের কলহবিবাদ নিরস্ত হইলে, গৌড়ীয় হিন্দুসাম্রাজ্য সেনরাজংশের অধিকারভুক্ত হয় । সেনরাজবংশের অধিকারসময়েই বক্তিয়ার খিলিজি গৌড়রাজ্য আক্রমণ করেন । - তৎকালে গৌড়ীয় হিন্দুসাম্রাজ্য রছি, বরেন্দ্র ও বঙ্গ নামক তিনটি প্রধান বিভাগে
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৩৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।