পঞ্চম সংখ্যা । ] বিভক্ত ছিল এবং লক্ষ্মণাবতী, লক্ষেীর ও ঐবিক্রমপুরে এই তিন বিভাগের রাজধানী ছিল । সমগ্ৰ গৌড়ীয় সাম্রাজ্য নানা উপবিভাগে অর্থাৎ “বিষয়”নামক থওরাজ্যে বিভক্ত ছিল । এই সকল বিষয় বা উপবিভাগ বিষয়পতির দ্বারা শাসিত হইত । গৌড়েশ্বর সাধারণত রাজধানীতে বাস করিতেন । তিনটি রাজধানীর মধ্যে লক্ষ্মণাবর্তী গঙ্গাতীরে অবস্থিত থাকায় এবং পুরাতন গৌড়য়াজ্যের রাজধানী বলিয়া সৰ্ব্বত্র সমাদর লাভ করায়, লক্ষ্মণসেনদেব শেষজীবন তথায় বাস করিয়া নিজনামানুসারে তাহাকে “লক্ষ্মণাবতী” নাম প্রদান করেন। মুসলমানের আদি ইতিহাসে লক্ষ্মণাবতী “লক্ষেীতি” নামে পরিচিত ; তাহাতে গৌড়নামের উল্লেখ নাই । মিনহাজের গ্রন্থ রচিত হইবার সময়ে এই তিনটি পুরাতন হিন্দুরাজধানীর মধ্যে ঐবিক্রমপুর হিন্দুরাজার অধিকারভুক্ত ছিল ; অপর দুইটি মুসলমানের হস্তগত হইয়াছিল । মুসলমানলিখিত ইতিহাসে দেখিতে পাওয়া যায়, বক্তিয়ার খিলিজি লক্ষ্ণৌতি অধিকার করেন, এবং তাহার মৃত্যুর পর তাহার সেনাপতি মহম্মদ শেরান কর্তৃক লক্ষেীর অধিকৃত হয় । কিরূপে এই দিগ্বিজয় সাধিত হইয়াছিল, তাহার বিস্তৃত বিবরণ প্রাপ্ত হইবার উপায় নাই। মিনহাজ ও তাহার পরবর্তী মুসলমান ইতিহাসলেখকগণের গ্রন্থে বক্তিস্বার খিলিজি ও তাহার রাজ্যবিস্তারের যতদুর বিবরণ প্রাপ্ত হওয়া যায়, তাহাই অামাদের প্রধান অবলম্বন। শহম্মদ ঘোরীর ক্রীতদাস ও প্রধান সেনাপতি কুতবউদ্দীন দিল্লীর সিংহাসনে উপ বক্তিয়ার খিলিজির বঙ্গবিজয়। వరిe বেশন করিবার সময়ে এদেশে কি অভূতপূৰ্ব্ব পরিবর্তনই না সাধিত হইয়াছিল ! তুর্কিস্থানের কোন এক অজ্ঞাতকুলশীল দরিদ্র পরিবারে কুতবের জন্ম হয়। র্তাহাকে শৈশবে দাসবিপণীতে বিক্রীত হইতে হইয়াছিল। ভারতবর্ষের প্রথম মুসলমান সম্রাটু এইরূপে দাসবিপণী হইতে প্রভূপৃহে ও তথা হইতে ক্রীতদাসরূপে ক্রমে মহম্মদ ঘোরীর নিকট উপঢৌকনদ্রব্যের সঙ্গে প্রেরিত হইয়াছিলেন। র্তাহার কনিষ্ঠাঙ্গুলি নষ্ট হইয়াছিল বলিয়া সুলতান তাহাকে “আইবকৃ” বলিয়া ডাকিতেন । আইবকৃ যে একদিন দিল্লীর সিংহাসনে উপবেশন করিবেন, তাহ কে জানিত ? বক্তিয়ার খিলিজির বাল্যজীবনও কুতবউদ্দীনের দ্যায় অজ্ঞাত । তিনি ঘোর-প্রদেশের থিলিজিবংশে জন্মগ্রহণ করেন, কিন্তু কদাকার বলিয়া কোনস্থলেই তাহার প্রতিভার সমাদর হইত না । মহম্মদঘোরী এবং কুতবউদ্দীন উভয়েই কুলশীল অপেক্ষা প্রতিভার সমাদর করিতেন বলিয়া বক্তিয়ার বড় অণশ করিয়া প্রথমে ঘোরীর নিকট, পরে কুতবের নিকট উপনীত হইয়াছিলেন । কিন্তু তাহার খৰ্ব্ব স্থল কদাকার দেহ উভয় স্থলেই তাহার সকল আশা নষ্ট করিয়া দিয়াছিল। তাহার সাহস ছিল, বাহুবল ছিল, রণকৌশল ছিল, কিন্তু কদাকার বলিয়া তিনি স্বলতানের বা দিল্লীশ্বরের সেনাদলে প্রবেশ করিতে পারেন নাই । অবশেষে দোয়াবপ্রদেশের অভিনৰ মুসলমানরাজ্যে, তিনি জায়গীর প্রাপ্ত হইয়। প্রতিভার পরিচয়দানের অবসর লাভ করিয়া ছিলেন । 鬱
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।