পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম সংখ্য । ] বলিয়া তিনি উপঢৌকনাদি প্রেরণ করিয়া মৌখিক অধীনতা স্বীকার করেন । যাহা হউক, বিহারবিজয়ের পর বক্তিয়ার খিলিজির সম্বন্ধে মিনহাজের গ্রন্থে আর একটি গল্পের উল্লেখ পাওয়া যায় ; তাহ অনেক পরবর্তী মুসলমানলেখকের গ্রন্থে এবং বাঙালীর উপদ্যাসে স্থান প্রাপ্ত হইয়। সুপরিচিত হইয়াছে । গোলাম হোসেন উক্ত কাহিনী এইরূপে বর্ণনা করিয়াছেন – “মহম্মদ বক্তিয়ার বিহার জয় করিয়া সুলতানের নিকট আগমন করিলেন এবং প্রধান-অমাতাশ্রেণীভুক্ত হইলেন । র্তাহার অলোকসামান্ত বীরকাৰ্ত্তি ও বদ্ধমান সৌভাগ্য শ্ৰী সাম্রাজ্যের স্তন্ততুল্য প্রধান রাজপুরুষগণের ও বিষম ঈর্ষার বিষয় হইয়া পড়িল । তাহারা বক্তিয়ারের সর্বনাশসাধনে একমত হইলেন। একদিন রাজসভায় বক্তিয়ারের শৌর্য ও কার্য্যপটুতার বিস্ময়কর বিবরণ কথিত হইতেছিল, এমন সময়ে বক্তিয়ারের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ অমাত্যগণ কৌশলে র্তাহার ধবংসসাধনের নিমিত্ত সুলতানের নিকট একবাক্যে কহিলেন, “মহম্মদ বক্রিয়ার স্বীয় অসীম শক্তির পরিচয়প্রদানের জন্ত মত্তহস্তীর সহিত যুদ্ধ করিতে ইচ্ছা করেন । কুতবউদ্দীন বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন,-- ‘সত্যই কি বক্তিয়ার মমুষ্যের অসাধ্য-সাধনে ইচ্ছুক হইয়াছেন ? গৌরবলোপভয়ে মুখতবশত বক্তিয়ার তাহ অস্বীকার করিতে পরিলেন না । কিন্তু পরিশেষে জানিতে পরিলেন যে, তাহারই বিনাশসাধনের জন্য অমাত্যগণ এই চক্রাস্ত করিয়াছেন । যাহ ইউক, অতঃপর নির্দিষ্টদিবসে সম্রাস্ত ও সাধা বক্তিয়ার খিলিঞ্জির বঙ্গবিজয় । ఫిలిపి রণ জনগণ দরবারে উপস্থিত হইলেন। এক বলবান মত্তহস্তীকে সাদা কুঠাতে (কসবে সফেদ ) উপস্থিত করা হইল। বক্তিয়ার সসজ্জ হইয়া গদাহন্তে হস্তীর সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইয়া তাহার শুণ্ডে বিষম প্রহার করিলেন । সে আঘাতে চীৎকার করিয়া হস্তী রণভূমি ত্যাগ করিল। দর্শকগণ উচ্চৈঃ ধবনিতে বক্রিয়ারের বিজয়শ্রীর সস্বৰ্দ্ধন৷ করিলেন । সুলতান কুতবউদ্দীন লোকাতীত পরাক্রম দর্শন করিয়া বিস্ময় ও আনন্দের সহিত বক্রিয়ারকে বহু মহার্ঘ উপহার ও প্রচুর অর্থ প্রদান করিলেন । সন্ত্রান্ত রাজপুরুষগণ ও সম্রাটের আদেশে বক্তিয়ারকে বহু অর্থ উপহার দিতে বাধ্য হইলেন । মহম্মদ বক্তিয়ার নিজ হইতে আরও কিছু অর্থ দিয়া ঐ সকল অর্থ ও দ্রব্যাদি সমাগত জনগণকে বিতরণ করিলেন । বক্তিয়ারের বীরত্ব ও মহত্ত্ব দর্শনে কুতব উদ্দীন বিহার ও লক্ষ্মেীতির অধিকার তাহার হস্তে অর্পণ করিয়া নিশ্চিন্তমনে দিল্লী-অভিমুখে গমন করিলেন J” এই কাহিনীর মূল কোথায়, তাহ এতকাল পরে নির্ণয় করা অসম্ভব । ইহার মুলে কোন সত্য থাকিলে, তাহা অতিরঞ্জিত আকারে ইতিহাসে স্থানলাভ করায়, তদ্বারা, কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হইতে সাহস হয় না । তথাপি তর্কস্থলে বলা যাইতে পারে, সুলতান কুতবউদ্দীন বিহার ও লক্ষ্মণাবতী জয়ের ভার প্রদানের জন্ত অলৌকিক বীরত্বের অপেক্ষ করিতেছিলেন ; বক্তিয়ার খিলিজি সেইরূপ বীর বলিয়া পরিচয় পাইবার পর তাহাকে সনন্দ দান করেন। এই অনুমান সত্য