পঞ্চম সংখ্যt i ] সার সত্যের আলোচনা । See বন্ধন যথেষ্ট দৃঢ়, আর, পিপীলিকার মস্তক এবং উদরের মধ্যে অতীব অল্প ব্যবধান সত্ত্বেও দুয়ের মধ্যে বন্ধনের আঁট খুবই আলগা । যদি এমন হয় যে, একান্নবৰ্ত্তী পরিবারের মধ্য হইতে দশ ভাই দশ দিকে ছট্কিয়া পড়িলে ভ্রাতাদিগের কণহারে তাহ বড়একটা গায়ে লাগে না, তবে তাহতে প্রমাণ হয় এই যে, ভ্রাতাদিগের মধ্যে ঐক্যের বাধুনি বডড আলগা । কিন্তু যদি এমন হয় যে, দশ ভাইয়ের মধ্য হইতে এক ভাই পৃথক্ হইলে তাহার তো মৰ্ম্মবেদন উপস্থিত হয়ই, তা ছাড়া অপর নয় ভাইয়ের প্রত্যেকেরই প্রাণে আঘাত লাগে, তবে তাহাতে প্রমাণ হয় এই যে, ভ্রাতাদিগের মধ্যে ঐক্যের বর্ণধুনি অত্যন্ত স্বধৃঢ় । অতএব এটা যখন সকলেরই দেখা কথা যে, পিপীলিকার কিংবা বোলতার শরীর মধ্যদেশে দ্বিখণ্ডিত হইলে তাহার পূৰ্ব্বাদ্ধ এবং পশ্চাদ্ধ উভয় থওই মিনিট-দশেক ধরিয়া জীবিত থাকে ; পক্ষণস্তরে, হস্তীর সেরূপ হইলে উভয় খণ্ডেরই যুগপৎ প্রাণবিয়োগ হয় ; তখন তাহাতেই প্রমাণ হইতেছে যে, সাৰ্ব্বাত্মিক ঐক্যের বন্ধনের আঁট পিপীলিকণদেহে বড়ই আলগা, হস্তিদেহে রীতিমত দৃঢ় । তা ছাড়া, বিজ্ঞানবিং পতিতদিগের মতে এটা একটা নিৰ্ঘাত বেদবাক্য যে, পৃথিবীjহইতে স্বৰ্য্য শতকোটিযোজন দূরে অবস্থিতি করে, ইহা সত্য হইলেও স্বর্য্যের জীবনই পৃথিবীর জীবন, স্বৰ্য্যের আলোকই পৃথিবীর আলোক, স্বৰ্য্যের বলই পৃথিবীর বৃল । এইজন্য বলিতেছি যে, সাৰ্ব্বাত্মিক ঐক্যের নিকটে স্থানাস্থান-নাই, কালাকাল নাই, পাত্ৰাপাত্র নাই, দুর-নিকট নাই, বড়-ছোটো নাই । কিন্তু কি হিসাবে নাই ? সত্তা-হিসাবেই নাই । শক্তি-হিসাবে—স্থানাস্থানও আছে, কালাকালও অাছে, পাত্রাপত্রও আছে, দুর-নিকটও আছে, বড়-ছোটোও আছে । তার সাক্ষী—সত্তা-হিসাবে ( অর্থাৎ শুদ্ধকেবল "অস্তি-নাস্তি-বিবেচনায় ) শরীরের সাৰ্ব্বায়িক ঐক্য মস্তকের উচ্চ শিখরেও যেমন—পদের কনিষ্ঠ অঙ্গুলিতেও তেমনি —উভয় স্থানেই সমান । কিন্তু শক্তিহিসাবে ( অর্থাৎ শক্তির কর্তৃস্থানই বা কোথায় এবং কৰ্ম্মস্থানই বা কোথায় ; কে চালক, কে চালিত ; এইরূপ চাল্য-চালক-বিবেচনায় ) শরীরের মধ্যে মস্তকই সাৰ্ব্বাত্মিক ঐক্যের প্রধান আসন । সৰ্ব্বশরীর ব্যাপিয়া সাৰ্ব্বাত্মিক ঐক্য একই ঐক্য —এ কথা খুবই সত্য ; কিন্তু এ কথাও তেমনিই সত্য যে, সেই একই ঐক্য মস্তকের উচ্চমঞ্চে সারথিরূপে অধ্যাসীন রহিয়াছে এবং পদযুগে অশ্বযুগলরাপে যোজিত রহিয়াছে। ফলে ও এইরূপ দেখিতে পাওয়া যায় যে, আপনাকে এক বলিয়া ভাবনা করিবার সময় আমরা মস্তিষ্কমণ্ডলেই মনঃসমাধান করি— পদযুগে মনঃসমাধান করি না । «a, o মস্তিষ্কমণ্ডল যেমন ক্ষুদ্র ব্রহ্মাণ্ডের সাৰ্ব্বাত্মিক ঐক্যের প্রধান আসন, দৃশুমান স্থৰ্য্য তেমনি সৌরজগতের সাৰ্ব্বাত্মিক ঐক্যের ‘ প্রধান আসন ; আদিস্থৰ্য্য তেমনি বৃহৎ ব্ৰহ্মাণ্ডের সাৰ্ব্বাত্মিক ঐক্যের প্রধান আসন । এইজন্ত সৌরজগৎকে এক বলিয়া ভাবন। করিতে হইলে স্বৰ্য্যমণ্ডলের প্রতি প্রধানত লক্ষ্যসমাধান . করা আবগুক হয় ;– বিজ্ঞানবিৎ পণ্ডিতের করেনও তাই । বিজ্ঞানবিৎ পণ্ডিতেরা বলেন যে, স্বদুল্প
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৪৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।