之をや প্রতিদিনই তাহার প্রমাণ পাওয়া বাই তেছে । প্রাণের মাহাত্ম্য ইংরাজ আমাদের চেয়ে বেশি বোঝে, সে কথা না হয় স্বীকার করিস্নাই লওয়া গেল । অতএব সেই ইংরাজ যখন প্রাণ হনন করে, তখন তাহার অপরাধের গুরুত্ব আমাদের মত অৰ্দ্ধসভ্যের চেয়ে বেশি । অথচ দেখিতে পাই, দেশীয়কে হত্যা করিয়া কোনো ইংরাজ খুনি, ইংরাজ জজ ও ইংরাজ জুরির বিচারে ফাসি যার নাই। প্রাণের মাহাত্ম্যসম্বন্ধে তাহণদের বোধশক্তি যে অত্যন্ত স্বক্ষ, ইংরাজ অপরাধী হয় ত তাহার প্রমাণ পায়, কিন্তু সে প্রমাণ দেশীয় লোকদের কাছে কিছু অসম্পূর্ণ বলিয়াই ঠেকে। এইরূপ বিচার আমাদিগকে দুই দিকৃ হইতে আঘাত করে। প্রাণ যা যাবার, সে ত যায়ই, ও দিকে মান ও নষ্ট হয় । ইহাতে আমাদের জাতির প্রতি যে অবজ্ঞা প্রকাশ পায়, তাহা আমাদের সকলেরই গায়ে বাজে ! ইংলণ্ডে গ্লোবু বলিয়া একটি সংবাদপত্র আছে । সেটা সেখানকার ভদ্রলোকেরই কাগজ —তাহাতে লিখিয়াছে, টমি অ্যাইকিন (অর্থাৎ পল্টনের গোর। ) দেশি লোককে মারিয়া ফেলিবে বলিয়া মারে না, কিন্তু মার খাইলেই দেশি লোকগুলা মরিয়া যায় —এইজন্ত টমিবেচারার লঘুদণ্ড হইলেই দেশি খবরের কাগজগুলা চাংকার করিয়া মরে । টমি অ্যাট্কিনের প্রতি দরদ খুব দেখিতেছি, কিন্তু স্যাঙ্ক টিটি অফ লাইফ কোনখানে । যে পাশৰ আঘাতে আমাদের পল ফাটে, এই ভদ্রকাগজের কথছত্রের মধ্যে ও কি সেই আঘাতেরই বেগ নাই ? স্বজাতিকত খুনকে , वत्रन-नि । [ ৩য় বর্ষ, আশ্বিন। কোমল স্নেহের সহিত দেখিয়া হতব্যক্তির আত্মীয়সম্প্রদায়ের বিলাপকে যাহার বিরক্তির সহিত ধিক্কার দেয়, তাহারাও কি খুন পোষণ করিতেছে না ? কিছুকাল হইতে আমরা দেখিতেছি, য়ুরোপীয় সভ্যতায় ধৰ্ম্মনীতির আদর্শ সাধারণত অভ্যাসের উপরেই প্রতিষ্ঠিত—ধৰ্ম্মবোধশক্তি এই সভ্যতার অন্তঃকরণের মধ্যে উদ্ভাসিত হয় নাই । এইজন্ত অভ্যাসের গণ্ডির বাহিরে এই আদর্শ পথ খুজিয়া পায় না, অনেকসময় বিপথে মারা যায় । যুরোপীয় সমাজে ঘরে-ঘরে কাটাকাটিখুনাখুনি হইতে পারে ন—এরূপ ব্যবহার সেখানকার সাধারণ স্বার্থের বিরোধী । বিষ প্রয়োগ বা অস্ত্রাঘাতের দ্বারা খুন করাটা যুরোপের পক্ষে কয়েক শতাব্দী হইতে ক্রমশ অনভ্যস্ত হইয়া আসিয়াছে । কিন্তু খুন বিনা অস্ত্রাঘাতে— বিনা রক্তপাতে হইতে পারে । ধৰ্ম্মবোধ যদি অকৃত্রিম আভ্যস্তরিক হয়, তবে সেরূপ খুনও নিন্দনীয় এবং অসম্ভব হইয়া পড়ে । একটি বিশেষ দৃষ্টান্ত অবলম্বন করিয়া এ কথাটা স্পষ্ট করিয়া তোলা যাক । হেনরি স্তাভেজ ল্যাওর একজন বিখ্যাত ভ্রমণকারী । তিব্বতের তীর্থস্থান রাসায় যাইবার জন্য র্তাহার ছনিবার ঔৎসুক্য জন্মে । সকলেই জানেন, তিববতীর যুরোপীয় ভ্রমণকারী ও মিশনারী প্রভূতিকে সন্দেহ করিয়া থাকে । তাহাদের দুর্গম পথঘাট বিদেশীর কাছে পরিচিত নহে, ইহাই তাত্ন্যদের আত্মরক্ষার প্রধান অস্ত্র—সেই অস্ত্রটি যদি তাহারা ঞ্জি ওগ্রাফিকাল সোসাইটির হস্তে সমর্পণ
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৫৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।