পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্য\\ \, স্থাপন সত্ত্বেও তাহাকে ভগ্নীর মত ভালবাসিতেন । জ্যেষ্ঠ মহিষীর এই ক্ষমা ও উদার স্নিগ্ধতার তুলনা কোথায় ? দশরথ অনেক সময়েই কৈকয়ীর গৃহে বিশ্রাম করিতেন, তাহাও আমরা ভারতের কথাতেই জানিতে পারি। —“রাজা ভবতি ভূরিষ্ঠমিহাস্বায়া নিবেশনে ।* স্থতরাং কৌশল্যণকে আমরা যখনই দেখিতে পাই, তখনই তাহাকে ব্রত ও পুজাৰ্চনাদিতে রত দেখি, স্বামিকর্তৃক নিগৃহীত কেবল এক স্থানেই শাস্তি পাইতে পারেন । জগতে তাহার দাড়াইবার স্থান নাই, কিন্তু যিনি অনাথের আশ্রয়, যাহার মেহকোমল বাহু ব্যথিতকে আদরে ক্রেগড়ে লইয়া শান্তিদান করে, সেই পরমদেবতাকে কৌশল্যা আশ্রয় করিয়াছিলেন, তাই সংসারের দুঃথ সহ করিয়া তাহার চরিত্র কঠোর কিংবা কটু হইয়া যায় নাই, উহা যেন আরও অমুতরসে ভরপুর হইয়া উঠিয়ছিল । রামায়ণে দেবসেবানিরত কৌশল্যাকে দেখিয়া মনে হয়, যেন তিনি সৰ্ব্বদা সংসারের তাড়না ভুলিবার জন্ত ভগবানের আশ্রয়ভিক্ষা করিয়া কালাতিপাত করিতেন । এই দুঃখিনীর একমাত্র মুখ রামের মত পুত্রলাভ । যেদিন রামচন্দ্র তাহাকে স্বীয় অভিষেকের সংবাদ দিলেন, সেদিন তিনি দেবতাদিগের প্রীতিতে একান্তরূপ আস্থাস্থাপন করিলেন । ভাবিলেন, তাহার পুজা-অৰ্চনা সমস্তই এতদিনে সার্থক হইল । তিনি, রামচন্দ্রের শত শত গুণের মধ্যে যে মহাগুণে তিনি পিতৃস্নেহ লাভ করিতে পরিয়াছিলেন, সেই গুণ স্মরণেই একান্ত প্রীত ও বিস্থিত হইয়াছিলেন— \L কৌশল্য। RA “কল্যাণে বত নক্ষত্রে ময় জাতোৎসি পুত্ৰক । যেন ত্বয়া দশরথো গুণৈররোধিতঃ পিত ॥” “তুমি অতি শুভক্ষণে জন্মগ্রহণ করিয়াছ, তাই তুমি স্বগুণে দশরথ রাজার প্রীতিলাভ করিতে পারিয়াছ । দশরথ রাজার স্নেহলাভ যে কি দুর্লভ ভাগ্যের ফল, সাধবী তাহা আজিীবন তপস্তা করিয়া জানিয়াছিলেন । শুভাভিষেকস্মরণে রাণী গলদ শ্রী বস্ত্রাঞ্চলাগ্রে মার্জনা করিয়া রামচন্দ্রকে আশীৰ্ব্বাদ করিলেন । রামের অভিষেক-উৎসব ; এতদিনে দুঃখিনী মাতা আজ আনন্দের আহবানে অামঞ্জিত হইয়াছেন । কিন্তু তিনি মহার্য বস্ত্ৰালঙ্কারে শোভিত হইয়া হৰ্ষগৰ্ব্বস্ফুরিতাধরে এই প্রসঙ্গে প্ৰগলভ রমণীর দ্যার আচরণ করিলেন না । মন্থর-দাসী শশাঙ্কসঙ্কাশপ্রাসাদ-শীর্ষে দাড়াইয়া মনে মনে ভাবিল— “রামমাতা ধনং কিন্তু জনেভ্যঃ সম্প্রযচ্ছতি ” কৌশল্যা দরিদ্র, ব্রাহ্মণ ও যাচকদিগকে ধনদান করিতেছিলেন । রাম দেখিলেন, তিনি পবিত্ৰ পট্টবস্ত্র পরিয়া অগ্নিতে আহুতি দিতেছেন ও একমনে বিষ্ণুপুজায় রত রহিরাছেন। ধশ্মিষ্ঠ কৌশল্য দেবসেবা করিয়া সফলকাম হইয়াছেন, সেই দেবসেবার তিনি আরও আগ্রহসহকারে নিযুক্ত হইলেন । এই স্থানে রামচন্দ্র মাতাকে নিষ্ঠুর বনবাস- ' ংবাদ শুনাইলেন ; সে সংবাদ পুত্রসস্বল জননীর হৃদয় বিদীর্ণ করিল। “স নিকৃত্তেৰ শালস্ত যষ্টি: পরশুনা বনে । পপাত সহসা দেৰী দেবতেৰ দিবশ তা " অরণ্যে কুঠারাঘাতে কৰ্ত্তিত শালযষ্টির স্থায়,—স্বৰ্গচু্যত দেবতার স্তায় দেবী কৌশল্য।