ষষ্ঠ সংখ্যা । H করিতে co পাইতেছিলেন ; সজল নেত্রপ্রান্তের অশ্রু অঞ্চলাগ্রে মুছিতে মুছিতে কৌশল্য সকলই শুনিতেছিলেন–র্তাহার পর্শ্বে ধৰ্ম্মাবতার সৌম্যমূৰ্ত্তি মাতৃস্থঃখে বিষণ্ণ রামচন্দ্র ধৰ্ম্মের জন্ত, পবিত্র প্রতিশ্রুতিপালনের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করিবার অটল সঙ্কল্প স্নেহবশীভূত অথচ দৃঢ় কষ্ঠে জ্ঞাপন করিতেছিলেন, এবং ক্রুদ্ধ লক্ষ্মণের হস্তধারণপূর্বক তাহার উত্তেজনা প্রশমনার্থ অমুনয় করিয়া বলিতেছিলেন –দেবীরূপিণী কৌশল্য দেবরূপী পুত্রের অপূৰ্ব্ব ধৰ্ম্মভাব দেখিয়া অপূৰ্ব্বভাবে সহিষ্ণু হইয়া উঠিলেন –ধৰ্ম্মের কথা কৌশল্যার হৃদয়ে ব্যর্থ হইবার নহে । সহসা পুত্ৰশোকার্জ মহিষী ধীরগম্ভীর মূৰ্ত্তিতে উঠিয়া দাড়াইলেন এবং রামের বনগমন অনুমোদন করিয়া অঞগদগদ কণ্ঠে আশীৰ্ব্বাদ করিতে লাগিলেন— “গচ্ছ পুত্র স্বমেকগ্রে ভদ্রস্থেsস্থ সর। লিভে । পুনস্তুয়ি নিবৃত্তে তু ভবিষ্যামি গতক্ৰম ॥ পিছুরাণুশতাং প্রাপ্তে স্থপিষ্যে পরমং স্বথম । গচ্ছপানী: মহাবাহে ক্ষেমেণ পুনরাগত । নন্দগ্লিসার্সি মাং পুত্র সাম্ন প্লঙ্কেন চারণ " “পুত্র, তুমি একাগ্রমনে বনগমন কর, তোমার মঙ্গল হউক, তুমি ফিরিয়া আসিলে আমার সমস্ত দুঃখ অপনোদিত হইবে । তুমি এই চতুর্দশবংসর ব্রতপালনপুৰ্ব্বক পিতৃঋণ হইতে মুক্ত হইলে আমি পরমস্বথে নিদ্রা যাইব । বৎস, এখন প্রস্থান কর, নিৰ্ব্বিয়ে পুনরাগত হইয়া হৃদয়হারী নিৰ্ম্মল সাস্থনাবাক্যে আমাকে আনন্দিত করিও ।” সেই করুণ শোকধ্বনি, ধৰ্ম্মপুর্ণ সঙ্কল্প ও ক্রোধের নানা কথtয় মুখরিত প্রকোষ্ঠে কৌশল্যাদেবীর কৌশল্য । S ఖరి এই চিত্র সহসা মহত্বগৌরবে আপূরিত হইয়া উঠিল। কৌশল্যাদেবী যে দেবতাদিগকে রামের অভিষেকের জন্ত পূজা করিতেছিলেনতাহাদিগকেই বনে রামের শুভসম্পাদনের জঙ্গ প্রার্থনা করিয়: পুনরায় পূজা করিতে লাগিলেন। কৃতাঞ্জলি হইয়। রামের বনবাসে। শুভকামনা করিয়া বলিতে লাগিলেন—“হে ধৰ্ম্ম, তোমাকে আমার বালক আশ্রয় কৰুিr য়াছে, তুমি ইহাকে রক্ষা করিও । হে দেবগণ, চৈত্য ও আয়তন সমূহে রাম তোমাদিগকে নিত্য পূজা করিয়াছে, তোমরা ইহাকে রক্ষা করিও । হে বিশ্বামিত্রপ্রদত্ত . দেবপ্রভাব অস্ত্ৰসকল, তোমরা রামকে রক্ষণকরি ও । পিতৃমাতৃসেবা দ্বারা যে পুণ্যসঞ্চয় করিয়াছে, সেই সকল পুণ্য যেন বনাশ্রিত রামকে রক্ষা করে।” অশ্রুপূর্ণচক্ষে ধৰ্ম্মশীলা কৌশল্যা একটি একটি করিয়া সমস্ত দেবতার, নিকট রামচন্দ্রের মঙ্গলকামনা করিলেন । পুত্রের মস্তকে শুভাশিষ প্রদায়ী হস্ত অর্পণ করিয়া বলিলেন—“আমার মুনিবেশধারী ফলমূল্যেপজীবী কুমার যেন রাক্ষস ও দানবদিগের হস্ত হইতে রক্ষিত হয় ; দংশ, মশক, বৃশ্চিক, কীট ও সরীস্বপেরা যেন ইহার শরীর স্পশ না করে ; সিংহ, ব্যাঘ্ৰ, মহাকায় হস্তী, বরাহ, শৃঙ্গী ও মহিষেরা এবং নরখাদক রাক্ষসগণ ..ন ধৰ্ম্মাশ্রিত পিতৃসত্যপালনরত ত্যাগী বালকের দ্রোহাচরণ না করে। হে পুত্র, তোমার পথ মুখকর হউক, তোমার পরাক্রম সতত সিদ্ধ হউক,—তুমি বনে গমম কর, আমি অনুমতি দিতেছি।”—বলিতে বলিতে ধৰ্ম্মশীল। রাণী গৌরবদ্ধৃপ্ত হইয়া পুজায় উপকরণ লইয়া ধ্যানস্থ হইলেন, তাহার ধৰ্ম্মবিশ্নাস এতটুকুও
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৭৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।