ষষ্ঠ সংখ্যা । ] “যদা যদ। চ কৌশল্য দাসীবচ্চ সর্থীব চ। ভাৰ্য্যাবস্তুগিনীবচ্চ মাতৃবচ্চোপতিষ্ঠতে ॥ সততং প্রিয়কাম মে প্লিয়পুত্র প্রিয়ংবদা । ন ময় সৎকৃত। দেৰী সৎকারস্থ কৃতে তব ।” “কৌশল্যা দণসীর দ্যায়, সখীর দ্যায়, স্ত্রীর দ্যায়, ভগিনীর স্থায় এবং মাতার দ্যায় আমার অনুবৃত্তি করিয়া থাকেন । তিনি আমার নিয়ত হিতৈষিণী এবং প্রিয়ভাষিণী ও প্রির পুত্রের জননী । তিনি সৰ্ব্বতোভাবে সমাদরের যোগ্য, আমি তোমার জন্ত তাহাকে আদর করিতে পারি নাই ।” কৈকয়ী ক্রুদ্ধ হইয়া বলিয়াছিলেন “সহ কৌশল্যয় নিত্যং ৱস্তমিচ্ছসি দুৰ্ম্মতে ।" কিন্তু অযোধ্যা ছাড়িয়া রামচন্দ্র যখন চলিয়া গেলেন, যখন মৌনভাবে কৌশল্যা দশরথের সঙ্গে সঙ্গে রামের রথের অসুবৰ্ত্তিনী হইয়া বিসংজ্ঞ হুইয়া পড়িলেন, তখন হইতে দশরথের জীবনের শেষ করে কটি দিবসে কৌশলণর প্রতি তাহার অfদর ও স্নেহ অসীম হইয়া উঠিয়াছিল । দশরথ পথে মুছিত হইয়া পড়িয়াছিলেন, কিন্তু জ্ঞানলাভ করিয়া বলিলেন, “আমাকে মহারাণী কৌশলা"র গৃহে লই ৷ চল, আমি অন্ত্যক্র শাস্তি পাইব না ।” অদ্ধরাত্রে শোকাবেগে আচ্ছন্ন হইয়া কৌশল্যাঁকে তিনি বলিলেন,—“দেবি, রামের রথের ধূলির দিকে চাহিয়া থাকিতে থাকিতে আমি দৃষ্টি হার হইয়াছি, আমি তোমাকে দেখিতে পাইতেছি না, তুমি আমাকে হস্তদ্বারা স্পশ কর ।” নিভৃত প্রকোষ্ঠে দশরথকে পাইয়া কৌশল্যা তাহাকে কটুক্তি করিয়াছিলেন। মাহ প্রাণের এই নিদারুণ বেদনা, সপত্নীর কৌশল্য । ( বশীভূত স্বামীর এই ব্যবহার লোকসমক্ষে তিনি মৌনভাবে সহিয়াছিলেন, কিন্তু আজি সেই কষ্ট তিনি আর সহিতে পারিলেন না । কঁাদিতে কঁাদিতে দশরথকে বলিলেন— “পৃথিবীর সর্বত্র তুমি যশস্বী, প্রিয়বাদী ও বদান্ত বলিয়া কীৰ্ত্তিত। কি বলিয়া তুমি পুত্রস্বয় ও সীতাকে ত্যাগ করিলে ?— সুকুমারী চিরস্থখোচিত জানকী কিরূপে শীতাতপ সহিবেন ! স্বপকারগণের প্রস্তুত, বিবিধ উপাদেয় খাদ্য যিনি আহার করিতে অভ্যস্ত, তিনি বনের কষায় ফল খাইয়া কিরূপে জীবনধারণ করিবেন । রামচন্দ্রের স্ককেশাস্ত পদ্মবর্ণ ও পদ্মগন্ধিনিশ্বাসযুক্ত মুখ আমি জীবনে আর কি দেখিতে পাইব ?” এইরূপ বিলাপ করিতে করিতে কৌশল্য। অধীর হইয়া স্বামীর প্রতি কটুবাক্য প্রয়োগ করিলেন—“জলজন্তুরা যেরূপ স্বীয় সন্তানকে ত্যাগ করে, তুমি সেইরূপ করিয়াছ । তুমি রাজ্যনাশ ও পেীয়জনের সর্বনাশ করিলে । মন্ত্রীরা একেবারে নিশ্চেষ্ট ও বিমূঢ় হইয়া পড়িয়াছেন, আমিও পুত্রের সহিত উৎসল্প হইলাম । গতিরেক পতিন যা দ্বিতীয়। গতিরাত্মজঃ । তৃতীয় জ্ঞতয়ে রাজন চতুর্থী নৈব বিদ্যতে ॥” কৌশল্যার মুখে এই নিদারুণ বাক্য শুনিয়া দশরথ মুহূৰ্ত্তকাল দুঃখিতভাবে মেীন হইয়া রহিলেন, তাহার যেন সংজ্ঞা লুপ্ত হইয়া আসিল । জ্ঞানলাভাস্তে তিনি সাশ্রুমৃেত্রে । তপ্ত দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া পাশ্বে কৌশল্যাকে দেখিয়া পুনরায় চিন্তিত ও মৌন হইলেন। তিনি স্বীয় পূৰ্ব্বাপরাধ স্মরণ করিয়া শোকে দগ্ধ হইতে লাগিলেন এবং অশ্রু
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।