পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԳեր বৎসে, আতপসন্তপ্ত পদ্মের ন্যায়, ধূলিধ্বস্ত কাঞ্চনের ন্তায় তোমার মুখের ছটা বিবর্ণ হইয়া গিয়াছে, তোমার এ মলিন মুখ দেখিয়া । আমার হৃদয় দগ্ধ হইয়া যাইতেছে।” রাম ইঙ্গুদীফল দিয়া পিতৃপিও প্রদান করিয়াছিলেন,—ভূতলে দক্ষিণাগ্র দর্ভের উপর প্রদত্ত সেই ইক্ষুদীফলের পিও দেখিয়া কৌশল্য বিলাপ করিয়া বলিলেন —“রাম এই ইক্ষুদীফলে পিতৃপিও দান করিয়াছেন, এ দৃগু আমার সহ হয় না—” "তুরান্তাঃ মহীং ভুক্ত মহেন্দ্রসদৃশে ভুবি। কথমিজুদিপিণ্যাকংস ভুঙক্তে বহুধাবিপঃ ॥ অতো দুঃখতরং লোকে ন কিঞ্চিৎ প্রতিভাতি মে । যত্র রামঃ পিতুর্দ্যাদিজুীক্ষোরমৃদ্ধিমান ।” “ইন্দ্রতুল্যপরাক্রান্ত মহারাজ দশরথ সসাগর পৃথিবী ভোগ করিয়া এই ইক্ষুদীফল কিরূপে ভক্ষণ করিবেন ? রামচন্দ্র ইঙ্গুদীফলের পিও পিতাকে প্রদান করলেন, ইহা হইতে আমার অধিকতর দুঃখ আর কিছুই নাই।” সামান্ত বিষয় লইয়া এই সকল বিলাপপূৰ্ণ উক্তির একদিকে পুত্রের বনবাসে জননীর দারুণ দুঃখ, অপরদিকে স্বামিবিয়োগে সাধবীর সুগভীর মৰ্ম্মবেদনা ফুটিয়া উঠি झोप्टक्क ! এই কৌশল্যচিত্র হিন্দুস্থানের অাদর্শজননীর চিত্র–আদর্শ স্ত্রীচরিত্র। প্রতি পল্লী • বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ন, আশ্বিন। গৃহের হিন্দুবালক এখনও এই স্নেহ ও আত্মত্যাগ উপলব্ধি করিয়া ধন্ত হইতেছেন। এখনও শত শত স্নেহময়ী কৌশল্য হিন্দুস্থানের প্রতি তরুপল্লবচ্ছায়ায় স্বীয় কোমল বাহবন্ধনে আশ্রিত শিশুগণকে পালন করিতেছেন ও তাহাদের শুভকামনায় কঠোর ব্ৰত-উপবাস ও দেবারাধনা করিয়া নিরস্তর স্নেহাৰ্থ আত্মবিসর্জন করিতেছেন । এখনও বঙ্গদেশের কবি “কে আসে ধীরে ধীরে আকুল নয়ননীরে” প্রভৃতি সুমিষ্ট বন্দনাগীতে সেই স্নেহপ্রতিমার অর্চনা করিতেছেন। কিন্তু কৌশল্যার মত কয়জন জননী এখন ধৰ্ম্মব্ৰতে আয়ু মুখবিসর্জনকারী বল্কলধারী পুত্রকে বলিতে পারেন – “ন শক্যতে বাররিতুং গচ্ছেদানীং রযুত্তম । শীঘ্রঞ্চ বিনিবৰ্ত্তস্ব বর্ভূক্ষ্ম চ সত্যং ক্রমে n যং প{লয়সি ধৰ্ম্ম ত্বং প্রীতা চ নিয়মেন চ । স বৈ রাঘবশাল ধৰ্ম্মস্বমতিরক্ষভু " ‘বংস, তোমাকে আমি কিছুতেই নিবারণ করিয়া রাখিতে পারিলাম না, এক্ষণে তুমি প্রস্থান কর, কিন্তু শীঘ্রই ফিরিয়া আসিও এবং সৎপথে প্রতিষ্ঠিত থাকিও। তুমি প্রীতির সহিত—নিয়মের সহিত যে ধৰ্ম্মপালনে প্রবৃত্ত হইয়াছ, সেই ধৰ্ম্ম তোমায় রক্ষা করুন।” আমাদের চিরপুজাৰ্হা শচীমাতাও বুক বাধিয়া এমন কথা বলিতে পারেন নাই । ঐদীনেশচন্দ্র সেন ।