২৮২ বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ, আশ্বিন । (৩) নীহারিকা ( Nebula ) দ্বারা দিব্যলোক পুর্ণ। ফটোগ্রাফী এ বিষয়ের সাক্ষী । কিন্তু সমুদয় নীহারিক প্রকাশমান না হইতে পারে । বরং প্রথম অবস্থায় নীহারিকার অদৃশু থাকিবার সম্ভাবন । এই সকল নীহারিকণও আলোক শোষণ করিতে পারে । ( ৪ ) দিব্য রজঃ, যাহার জন্ত পরিঘের • ( Zodiacal Light ) Gsofs, sąs Evrı, যাহা বৎসরে ভূতলেই কোটি কোটি পতিত হয়,—ইহারাও তারাসমূহের আলোক শোষণ করিতেছে । বালেসের আর এক তর্ক এই যে, ব্রহ্মা গু অনন্ত হইলে সকল দি.কই সমানসংখ্যক তারা দেখিতে পাওয়া যাইত। তর্কটি নুতন নহে ; অনেক জ্যোতিষী তারাময় ব্রহ্মাণ্ডের রূপ অনুসন্ধানে ব্যস্ত আছেন । এ নিমিত্ত কথাটা কিঞ্চিৎ বিস্তারিতভাবে বলা যাইতেছে । বস্তুত আমাদিগের সকল দিকে একই সংখ্যক তারা দেখা যায় না । স্বৰ্গঙ্গা ব। ছায়াপথের দিকেই তারা অধিক, ছায়াপথের তিৰ্য্যক দিকে অল্প। ছায়াপথের যত নিকটের আকাশে দৃষ্টিপাত করা যায়, তত অধিক ও সৰ্ব্ববিধ উজ্জল তার নমুনগোচর হয় । আর ও আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, দূরবীক্ষণ দ্বারা প্রায় ছয়সহস্র তারাপুঞ্জ ও নীহারিকা দেখা গিয়াছে, কিন্তু অধিকাংশ তারাপুঞ্জ ছায়াপথের তলে ( plane ), এবং অধিকাংশ বাম্পমর নীহারিক। উক্ত তল হইতে দূরে, এমন কি, ছায়াপথের মেরুর নিকটে দেখা গিষাছে । . অতএব তারাময় •. সংস্থত “ifq'-t'n grał zodiacal Light চাই। নানা কারণ এই শব্দটি ভাল বোধ হইয়াছে । ব্ৰহ্মাণ্ডের একটা গঠন আছে । তারা ও তারাপুঞ্জ আকাশের সর্বত্র সমান ঘনসন্নিবিষ্ট নহে । ছায়াপথেরও একটা বিশেষ গঠন আছে । রাত্রিকালে নিৰ্ম্মল আকাশে ছায়াপথ নিরীক্ষণ করিলে উহাতে সমঘন তারাসন্নিবেশ দৃষ্টিগোচর হয়. না ; মনে হয়, ছায়াপথ সৌরজগতের ছায় কোন নিয়তাকার চক্র নহে । আমরা দেখি, উহা হংস ( Cygnus ) এবং বৃশ্চিক লক্ষত্রে দুই অসম শাখায় বিভক্ত হইয়াছে ; দেখি, উহা স্থানে স্থানে যেন বিদীর্ণ হইয়াছে। কোন ঋজুনদী দুর হইতে দেখিলে যেমন উহার দুই তীর পরস্পর নিকটস্থ বোধ হয়, ছায়াপথের তারা কল আমরা বহু-বহু দুর হইতে দেখি বলিয়া তাহার পরস্পর নিকটস্থ বোধ হয়, এবং ছায়াপথ চক্রাকার দেথায় । এ সকল কথাই সত্য । তারাময় ব্রহ্মাণ্ডের একটা রূপ আছে ; তারাসমুহ সকলদিকে সমান স’ থ্যায় দেখিতে পাই না । কিন্তু তা বলিয়। তাহার যে সমান দুরে আছে, এ কথা বলিতে পারা যায় না । বস্তুত ছায়াপথের তারাসমূহের পরস্পর অস্তর সমান নহে । সেখানে বহু-বহু দুরে দূরে পশ্চাতে পশ্চাতে অনেক তারা আছে ; উপরের দৃষ্টাস্তের নদীর স্থায় দূরদৃষ্টি (perspective ) হেতু তৎসমুদয় নিকটে নিকটে অবস্থিত মনে হয় । স্বৰ্য্য ছায়াপথের মধ্যস্থলে এবং তাহার তলে কি না, তাহা পৰ্য্যবেক্ষণসাপেক্ষ । ছায়াপথ ঠিক চক্রাকার লহে ; সুতরাং একটা শব্দ বুকাইত কি না, সে তর্কে প্রয়োজন নাই ।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৮৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।