পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Hඑතු বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ, কাৰ্ত্তিক । সভার অধিবেশন হইয়। অসিতেছে । এই উপলক্ষে যে সকল প্রতিনিধি প্রেরিত হয়, তাহার অধিকাংশই হিন্দু ; তাহদের পাশাপাশি অনেকগুলি মুসলমান ও অন্যান্ত ক্ষুদ্র সমাজমণ্ডলীরও প্রতিনিধি দেখিতে পাওয়া যায়। দুইএকজন পার্শি এই অনুষ্ঠানের প্রধান উদেযাগী ও কৰ্ম্মকৰ্ত্তা । যাহারা যুরোপের সমস্ত বৃত্তাস্ত বিশেষরূপে অবগত আছেন, তাহারাই এই প্রতিবাদকার্য্যের পরিচালক । এই সকল বৃত্তাস্ত অবলম্বন করিয়া তাহারা যেরূপ পরিপাটী যুক্তিবিদ্যাস করেন, তাহা যুরোপের সৰ্ব্বোত্তম-শিক্ষিত ব্যক্তিদেরই অনুরূপ । সিপাহীবিদ্রোহের দ্যায় ইহা কোন বিদ্রোহব্যাপার নহে, ইংরাজকে তাড়াইয়া দেশীয় পূৰ্ব্বাধিপত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা ইহার উদ্দেশু নহে। এই আন্দোলনটি দেশীয় উকিল-মোক্তারডাক্তারদিগের নিরুপদ্রব আন্দোলন । যুরোপের প্রচলিত কুঞ্জনৈতিক মূলস্থত্রের দোহাই দিয়া, যাহাতে যুরোপীয় রাজ্যতন্ত্রের মধ্যে তাহারাও একটু স্থান করিয়া লইতে পারেন, ইহাই তাহাদের চেষ্টা । ১৮৯৮ অব্দের কংগ্রেসের একজন বিশিষ্ট সভ্য এইরূপ বলিয়াছিলেন –“এই কথাটি আপনারা বিশেষরূপে মনে রাখিবেন যে, আমরা সকলেই ইংরাজ-রাজত্ব-রক্ষণের পক্ষপাতী। ইংরাজের বিরুদ্ধে উত্থান করা দুরে থাক, আমরা মনে করি, ইংরাজ-রাজত্বের উচ্ছেদ হইলে, আমাদের মহাদুর্ভাগ্য ও অনর্থ উপস্থিত হইবে। ফলত ইংরাজের প্রসাদেই আমরা ‘জাতীয় ভাবে'র ভাবুক হইতে সমর্থ হইয়াছি ; এতদিনের পর এই সৰ্ব্ব প্রথমে আমাদের মধ্যে জাতীয় ভাবের উদ্রেক হইয়াছে। ইংরাজের প্রসাদেই আমরা জাতিভেদ ও ধৰ্ম্মভেদ ভুলিতে সক্ষম হইয়াছি ; ইংরাজের নিকট হইতেই আমরা একটি সাধারণ ভাষা প্রাপ্ত হইয়াছি ; কেন না, এই কংগ্রেসে আমাদের সমস্ত আলোচনা ইংরাজি ভাষাতেই হইয়া থাকে । আমরা কিসের জন্ত এত অসুযোগ-অভিযোগ করি ? — ইংরাজস্থলভ সুধিকার, ইংরাজস্থলভ পদমর্য্যাদা লাভ করিবার জন্তই কি নহে ? “আমরা ব্রিটিশ রাজ্যের প্রজা’ এই কথা বলিবার অধিকার ও সার্থকতা লাভ করাই কি আমাদের প্রার্থনাদির মূল উদ্দেশু মহে ?” এই আন্দোলনের নেতৃগণ এ সম্বন্ধে যাহকিছু বলিয়াছেন, তাহার সার-মৰ্ম্মটি এইরূপে বাক্ত করা যাইতে পারে ৪—“আমরা রাজভক্ত প্রজা ; অন্ত উপনিবেশসমুহকে যে অধিকার প্রদত্ত হইয়াছে, তাহার অধিক আমরা কিছুই প্রার্থনা করি না ; কিন্তু আমরা চাহি, যে-সকল মূলস্থত্রের উপর ইংরাজের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত, সেই সকল মূলস্বত্র আমাদের সম্বন্ধেও কাৰ্য্যত প্রয়োগ করা হয় ।” দ্যাশানাল-কংগ্রেসের প্রার্থনা-তালিকা পাঠ করিলে, একজন য়ুরোপীয়ের মনে, প্রথমে আহুকুল ধারণাই হইয়া থাকে ; কেন না, উহা যুরোপীয় ধরণের দাবীদাওয়া স্মরণ করাইয়া দের । কিন্তু একটু বিবেচনা করিয়া দেখিলে প্রতীতি হইবে, উহা একটু বেশিমাত্রায় যুরোপীয়--উল্লাহ। ভারতবর্ষের পক্ষে ঠিক থাটে না । এই প্রতিবাদকারীদিগের দলগুষ্টি