৩৪২ খঙ্গদর্শন। [ ৩য় বর্ষ, কাৰ্ত্তিক । হেমন্তঃ "ফ টমেব সেনজননক্ষেত্রোঘপুণ্যাবলীশালিগ্ৰাঘ্যবিপাকপীবরগুণস্তেষামহুদ্বংশজ: ॥৪ এই হেমন্তসেনের পুত্রের নাম বিজয়সেন । তিনি “বিজয়ী” বিশেষণে বর্ণিত হইয়াছেন । বিজয়সেনদেব রাজসাহীীর অন্তগত বরেন্দ্রভূমে প্রহ্লামেশ্বরনামক-শিব-মন্দির প্রতিষ্ঠিত করিয়া তাহাতে যে ফলকলিপি ংযুক্ত করিয়াছিলেন, তাহা আবিষ্কৃত হইয়া এসিয়াটিকৃ-সোসাইটি-কর্তৃক স্বরক্ষিত হইস্বাছে । উক্ত ফলকলিখিত কবিতাবলী সুবিখ্যাত উমাপতির রচিত বলিয়া ফলকে খোদিত আছে । তদনুসারে বিজয়সেনদেবের বরেন্দ্রভূমে অধিকার স্থাপন করা জানিতে পারা যার । বিজরসেনের পুত্র স্বনামখ্যাত বল্লালসেন যে “দণনসাগর”নামক গ্রন্থ রচনা করিয়া গিয়াছেন, তাহীতে পিতা বিজয়সেনের বরেন্দ্রভূমে প্রাতৃভূত হইবার কথা লিখিত আছে । এই সকল কারণে লক্ষণসেনের তাম্রশাসনে বিজয়সেনকে “বিজয়ী” বলিবার বিশেষ কারণ থাকা অনুমান করিতে হয় । এই সকল পুরাতন লিপি সমালোচনা করিয়া স্পষ্টই দেখিতে পাওয়া যার,—সেনরাজবংশের বিজয়সেনদেবই বরেন্দ্রবিজয়ী প্রথম নরপতি । তাহার পুত্র বল্লাল ও পৌত্র লক্ষ্মণসেন গৌড়রাজ্য সম্পূর্ণরূপে করতলগত করিয়া গৌড়েশ্বর উপাধি গ্রহণ করিয়াছিলেন । .বিজয়সেন ও গৌড়েশ্বর উপাধি গ্রহণ করেন, কিন্তু তখনও সমগ্র গৌড়ীয় হিন্দুসাম্রাজ্য পালবংশের অধিকারচু্যত হইয়াছিল বলিয়া বোধ হয় না । 冷 সেনরাজবংশের বিবিধ পুরাতন-লিপি আলোচনা করিয়া যে ঐতিহাসিক তথ্য লাভ করা যায়, তাহাতে বিজয়, বল্লাল ও লক্ষণসেনের সময়ে সেনসাম্রাজের অভু্যদরের পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায় ৷ লক্ষণসেনের সমcর কাশীরাজ্য পর্য্য ও যে তাহার প্রবল প্রতাপ জয়যুক্ত হইয়াছিল, লক্ষ্মণসেনের পুত্র বিশ্বরূপসেনের তা প্রশাসনে তাহার ও পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায় । বিশ্বরূপের তাম্রশাসনে “স গৰ্গযবলাম্বয় প্রলয়কালরুদ্রো নৃপঃ” বলিয়৷ বর্ণনা পাঠ করিয়া স্বীকার করিতে হয়,— লক্ষ্মণের পুত্র বিশ্বরূপের সঙ্গে ঘোরীব-শীয়দিগের যুদ্ধকলহ উপস্থিত হইয়া বিশ্বরূপ জয়লাভ করিয়াছিলেন এবং যবনগণ র্তাহাকে প্রলয় কালরুদ্ররূপে দর্শন করিতেন । মুসলমানের ইতিহাসে স্পষ্টত ইহার উল্লেখ না থাকিলেও, প্রকারাস্তরে এই কথা স্বীকৃত হইয়াছে। কারণ মুসলমানলেখক মিনহাজউদ্দীন বক্রিয়ার খিলিজির বঙ্গ গমনের ষষ্টিবৎসর পরে এদেশে পদার্পণ করিয়া তখন ও পূর্ববঙ্গ সেনরাজবংশের অধিকারভুক্ত আছে, দেখিয়া গিয়াছেন । বাহুবলে বক্রিয়ার থিলিজির আক্রমণ প্রতিহত করিতে না পারিলে, ইহা কদাচ সম্ভব হইত না । লক্ষ্মণসেনের পর তদীয় পুত্ৰগণের শাসনসমরেই যে বক্তিয়ার খিলিজি এদেশে অধিকার-বিস্তারের আয়োজন করেন, পুরাতনলিপি অনুসরণ করিলে তাহাই বিশ্বাস করিতে হর । কোন সময়ে বক্তিয়ার প্রথমে এই কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিয়াছিলেন, তাহাই এক্ষণে বিশেষভাবে আলোচনা করা অাবগুক । মুসলমানলিখিত ইতিহাসে - খৃষ্টীয় ১২০৫ সালের সমকালে বক্তিয়ার খিলিজির নিহত হইবার কথা দেখিতে পাওয়া বায় ; তৎপুৰ্ব্বে
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৪৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।