পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

بههها স্বাসায় গিয়া গা-ঢাকা দিয়া রহিল-ইহা সত্বেও তোমরা সকলে পূর্বের মত বিশ্বাসেই তাহকে ঘরে ডাকিয়া আনিলে ? আমি থাকিলে এমন কি কখনো ঘটিতে পারিত ?” হেমনলিনী চুপ করিয়া রছিল। যোগেন্দ্র । রমেশের এইরূপ ব্যবহারের কোন অর্থ তোমরা খুজিয়া পাইয়াছ ? এ সম্বন্ধে একটা প্রশ্ন ও কি তোমাদের মনে উদয় হয় নাই ? রমেশের পরে এত গভীর বিশ্বাস ? , হেমনলিনী নিরুত্তর রহিল । যোগেন্দ্র । আচ্ছা বেশ কথা—তোমরা সরলস্বভাব, কাহাকেও সন্দেহ কর না-— আশা করি, অামার উপরেও তোমার কতকটা বিশ্বাস আছে। আমি নিজে ইস্কুলে গিয়া খবর লইয়াছি, রমেশ তাহার স্ত্রী কমলাকে সেখানে বোর্ডার রাখিয়া পড়াইতেছিল । ছুটির সময়েও তাহাকে সেখানে রাখিবার বন্দোবস্ত করিয়াছিল। হঠাৎ দুই-তিন-দিন হইল, ইস্কুলের কত্রীর নিকট হইতে রমেশ চিঠি পাইয়াছে যে, ছুটির সময়ে কমলাকে ইস্কুলে রাখা হইবে না । আজ তাহীদের ছুটি ফুরাইয়াছে—কমলাকে ইস্কুলের গাড়ি দৰ্জ্জিপাড়ায় তাহাদের " সাবেক বাসায় পৌছাইয়া দিয়াছে। সেই বাসায় আমি -- নিজে গিয়াছি। গিয়া দেখিলাম, কমলা ঘঁটিতে আপেলের খোসা ছাড়াইয়া কাটিয়া দিতেছে, রমেশ তাহার স্বমুখে মাটিতে বসিয়া এক-এক টুকরা লইয়া মুখে পুরিতেছে । . রমেশকে জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘ব্যাপারখানা কি ? রমেশ বলিল, “সে এখন এবং আমাদের षष्क्रङ्ग*ब ।। [ ৩য় বর্ষ, অগ্রহায়ণ । কাছে কিছুই বলিবে না । যদি রমেশ একটা কথাও বলিভ যে, কমলা তাহার স্ত্রী নয়, তা হলেও না হয় সেই কথাটুকুর উপর নির্ভর করিয়া কোনমতে সন্দেহকে শাস্ত । করিয়া রাখিবার চেষ্টা করা যাইত । কিন্তু সে র্হা, ন, কিছুই বলিতে চায় না । এখন, ইহার পরেও কি রমেশের উপর বিশ্বাস রাখিতে চাও ?” - প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষীয় যোগেজ হেমনলিনীর মুখের প্রতি নিরীক্ষণ করিয়া দেখিল, তাহার মুখ অস্বাভাবিক বিবর্ণ হুইয়া গেছে, এবং তাহার যতটা জোর আছে, দুই হাতে চৌকির হাত চাপিয়া ধরিবার চেষ্টা করিতেছে । মুহূৰ্ত্তকাল পরেই সম্মুখের দিকে কুকিয়া-পড়িয়া মুচ্ছিত্ত হইয়া চৌকি হইতে সে নীচে পড়িয়া গেল । অন্নদাবাবু ব্যাকুল হইয়া পড়িলেন । তিনি ভুলুষ্টিত হেমনলিনীর মাথা দুই হাতে বুকের কাছে তুলিয়া-লইয়া কছিলেন—“ম, কি হইল মা ! ওদের কথা তুমি কিছুই বিশ্বাস করিয়ো না—সব মিথ্যা - - যোগেন্দ্ৰ"তাহায় পিতাকে সরাইয়া তাড়াতাড়ি হেমনলিনীকে একটা সোফার উপর তুলিল,—নিকটেই কুঁজায় জল ছিল, সেই জল লইয়া তাহার মুখে-চোখে বারংবার ছিটাইয়৷ দিল—এবং অক্ষয় একখানা হাতপাখা লইয়া তাহাকে বেগে বাতাস করিতে লাগিল । হেমনলিনী অনতিকাল পয়ে চোখ খুলিয়াই চমকিয়া উঠিল-অল্পদাৰাবুর দিকে চাহিয়া চীৎকার করিয়া বলিল, বাক্ট, বাবা, অক্ষবাবুকে এখান হইতে সরি যাইতে বল ।” - - = *