পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পার—দশদিকৃ পড়িয়া আছে—তুমি যখন ইচ্ছা! গমন কর—আমার তোমাতে কোন প্রয়োজন । নাই”--গলদশ্রনেত্র, শোকশীর্ণ, অনপরাধিনী সীতাকে এইরূপ নিৰ্ম্মম কঠোর উক্তি করিয়াছিলেন । যিনি বনবাসদণ্ডের কথা শুনিয়া কৈকয়ীর নিকট স্পৰ্দ্ধাসহকারে বলিয়াছিলেন—“বিদ্ধি মাং ঋষিভিস্তুল্যং ৰিমলং ধৰ্ম্মমাস্থিতম”—“আমাকে ঋষিগণের মত্ত বিমলধৰ্ম্মে প্রতিষ্ঠিত বলিয়া জানিবেন’, তিনিই কৌশল্যার সমীপবৰ্ত্তী হইয়। “নিশ্বসল্পিৰ কুঞ্জরঃ” পরিশ্রান্ত হস্তীর দ্যায় নিরুদ্ধ নিশ্বাস - ত্যাগ করিতে লাগিলেন, এবং সীতার অঞ্চলপার্শ্ববৰ্ত্তী হইয়। মুখে অপুৰ্ব্ব মলিনিম প্রকাশ করিয়া ফেলিলেন । লক্ষ্মণ ভরতকে বিনষ্ট করিবার সঙ্কল্প প্রকাশ করিলে যিনি তাহাকে কঠোরবাক্যে বলিয়াছিলেন– “তুমি রাজ্যলোভে এইরূপ কথা বলিয়া থাকিলে, আমি ভরতকে কহিয়া রাজ্য তোমাকে দিব” এবং যিনি ভরত তাহার “প্রাণীপেক্ষ প্রিয়তর” বারংবার এই কথা কহিতেন—তিনিই সীতার নিকট ৰলিয়াছিলেন, “তুমি ভরতের নিকট আমার প্রশংসা করিও না, ঐশ্বৰ্য্যশালী ব্যক্তিরা অপরের প্রশংসা সহ করিতে পারেন না ।” ভয়তের ভ্রাতৃভক্তির অপূৰ্ব্ব পরিচয় পাইয়া তিনি সীতাবিরহের সময়েও ভরতের দীন শোকাতুর মূৰ্ত্তি বিস্তুত হন নাই—পুষ্পভরালঙ্কৃত পম্পতিীরতরুরাজির পাশ্বে ভরতের কথা স্মরণ করিয়া অশ্রত্যাগ করিয়াছিলেন, --বিভীষণ স্বীয় জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাকে পরিত্যাগ করিয়াছে, এইজন্ত স্বগ্ৰীব তাহাকে অবিশ্বাস্ত বলিয়া নিন্দ করাতে, রামচন্দ্ৰ বলিয়া झेश्ं । { ৩য় বর্ষ, অগ্রণয়ণ । ছিলেন-—“বন্ধু, ভরতের ভীয় জ্ঞাই এই পৃথিবীতে তুমি কয়জন পাইবে ?” তিনিই জাবার বনবাসান্তে ভরদ্বাজের আশ্রমে যাইয়া হনুমানকে নন্দিগ্রামে পাঠাইবার সময় বলিয়াছিলেন,—“আমার আগমনসংৰদি শুনিয়া ভরতের মুখে কোন বিকৃতি হয় কি না, ভাল করিয়া লক্ষ্য করিও।” এইরূপ বহুবিধ আপাতবৈষম্য তাহার চরিত্রকে জটিল করিয়া তুলিয়াছে। • রামায়ণপাঠককে আমরা একটি বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করিতে অকুরোধ করি । নাটক ও মহাকাব্য দুই পৃথক সামগ্ৰী- গ্রীক রীতি অনুসারে নাটকবর্ণিত কাল তিন দিবসের উৰ্দ্ধ হওয়ার বিধান নাই । এই দিবসত্ৰয়ের ঘটনাবর্ণনায় চরিত্রবিশেষকে একভাবাপন্ন করা একান্ত জীবগুক, কোন কথাটি কাহাঁর মুখ হইতে বাহির হইবে, লেখককে সতর্কতার সহিত তাহ লক্ষ্য করিয়া নাটক রচনা করিতে হয় --চরিত্রগুলির যেটুকু বিশেষত্ব, লেখককে সেই গণ্ডীর মধ্যে আবদ্ধ থাকিয়া .তাহ - সংক্ষেপে সঙ্কলন করিতে হয়। কিন্তু যে কাব্যের ঘটনা জীবনব্যাপী, সে কাব্যের চরিত্রগুলি নাটঙ্কের রীতি অনুসারে বিচাৰ্য্য নহে । এই দীর্ঘকালে নানারূপ অবস্থাচক্রে পতিত হইয়া চরিত্রগুলির ক্রিয়াকলাপ ও কথাবার্তা বিচিত্র হইয়া থাকে- তাহ সময়োপযোগী হয় কি না—তাহাই সমধিকপরিমুণে বিচাৰ্য্য। শ্রেষ্ঠতম সাধুরও সারাজীবনের অন্তর্বর্তী ছইএকটি ঘটনা বা উক্তি বিচ্ছিন্ন করিয়া জালোকে ধরিলে তাহ তাদৃশ শোভন বলিয়া ৰিৰেচিত না হইভে-গল্পে জৰদ্ধার