অষ্টম সংখ্যা । ] : ছিলেন, অপর জগতের সারধন বেঙ্গকে রক্ষণ করিয়াছেন ; আর বুদ্ধদেব এই নিষ্ঠুর রাজ্যে স্বগীয় করুণার বেদি স্থাপন করিয়া গিয়াছেন। ইহার সময়োপযোগী ভিন্ন ভিন্ন মূৰ্ত্তিতে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন সত্য—কিন্তু প্রত্যেকের উদ্দেশু এক ছিল - পৃথিবীর সঙ্গে যখন স্বর্গের সম্পর্ক লুপ্ত হইয়া যাইবার আশঙ্কণ হইয়াছিল, তখন ইহার সেই সম্পর্কের পুনরুদ্ধার করিতে উপস্থিত হইয়াছিলেন । এখন যদি গারো কিংবা কুকিজাতির মধ্যে মহাপুরুষের আবির্ভাবের প্রয়োজন হয়, তবে বোধ হয় তাহাকে নরসিংহের মত মূৰ্ত্তিতে উপস্থিত হইতে হইবে, পরমসৌম্য বুদ্ধের মহিমা সেই সকল সমাজের উপযোগী নহে ; কিন্তু তাই বলিয়া বুদ্ধ ও নরসিংহের মধ্যে প্রকৃত পার্থক্য কিছুই নাই - চিরস্তুন বিশ্ববিধানের পবিত্রতারক্ষাই মহাপুরুষের আবির্ভাবের কারণ । প্রথম কয়টি অবতারের কথা যদি রূপকথা ৰলিয়া গণ্য হয়, ভগবানেয় অপার করুণায় বিশ্বাসই সেই রূপকথার স্বষ্টি করিয়াছিল, সন্দেহ নাই । আiমাদেয় দেশ এখন একজন মহাপুরুষের আগমন প্রতীক্ষণ করিতেছে ; আমরা বিপৎসাগরে পতিত ; যে মহিমা হিন্দুস্থানের ললাটে উজ্জ্বল এবং প্রকৃত রাজচিছু আঁকিয়া রাখিয়া ছিল, তাহ মুছিয়া মাহবার উপক্রম হইয়াছে। আমরা পরপ্রেক্ষী, অনশনতপ্ত ও নানা অপমানে লাঞ্ছিত । আমাদের এই অন্ধ তমসাচ্ছন্ন রাত্রি কোন তেজস্ব মহানের মহিমায় কাটিয়া যাইবে ? শত শত বৎসর ষে ছিন্দুস্থান স্বীয় নিবৃত্তি ও সংযমের অামাদের জনস্বী অবতার । వీరి পুণ্য যজ্ঞাপ্পি সম্মুখে রাখিয়া তপশ্চরণে নিযুক্ত ছিল—যে ব্রতসিদ্ধির ফলস্বরূপ শত শত মহাজন আবির্ভূত হইয়া এই দেশ হইতে ধৰ্ম্ম, দর্শন ও কবিত্বের সাধু-শুভ্র জ্যোতি চিরকালের জন্ত জগতের অন্ধকার দুর করিতে নিযুক্ত রাখিয়াছেন - সেই ব্রত কি এতদিনে সাঙ্গ হইয়াছে ? এই ৰে উপবাস, সংযম, দেবারাধনা, নির্জন-চিন্তা— যাহা হিন্দুস্থানের শুভ্রতম-কিরীটম্বরূপ, তাহ দুর করিয়া কোন অন্ধ সভ্যতা আমাদের মধ্যে অতৃপ্ত বিলাস ও বুভুক্ষণর অগ্নি জালিয়। দিল ? হায়! আমাদের বুঝি ধ্বংস হইবার দিন সম্মুখীন ! -এইজন্ত স্বর্গের অালো ছাড়িয়া আমরা আলেয়ার আশ্রয়ে সুগম পস্থার আবিষ্কার করিতে চাহিতেছি! আমাদের যোগসাধনা করিবার প্রাচীন কেীপীনখানি ফেলিয়া রাখিয়াছি ও য়ুরোপীয় বিলাসের রঙিন দ্যাকৃড়ার শোভাম্বিত হইতে চাহিতেছি। কিন্তু যদি মহাপরীক্ষার দিনে হিন্দুস্থানকে গৰ্ব্ব করিয়া স্বীয় নিজস্ব প্রমাণ করিতে হয় —জগতের সম্মানশালায় তাহার • আত্মপয়িচর দিতে হর, তবে সেই ছিন্ন-গলিত কেীপীনখানিরই অঙ্গুসন্ধান করিতে হইবে ; সেই বেদস্তধৰ্ম্ম হিমালয়ের তুঙ্গশূঙ্গ হইতে জগৎকে নিৰ্ম্মলতম, শুভ্রতম আলো দেখাইয়। আমন্ত্রণ করিতেছে—আমাদেয় পরিত্যক্ত কেীপীনখানি সেই বেদান্তকারগণের পবিত্র স্মৃতিচিহ্ল,—আমরা বহভাগ্যে উত্তরাধিকারস্বত্রে তাহ পাইয়াছি, আমাদের উহাই জাতীয় পতাকা । ধিনি মানবজাতির ছঃখবিমোচনের জন্ত রাজপুত্র হইয়াও ফকিরের বেশে বনে বনে কি-এক স্বৰ্গীয় ঔষধ খুজিয়া
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৯৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।