ఇ33 বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ, অগ্রহায়ণ । বেঙ্কাইয়াছিলেন, সেই ভিষক্রাজ এই পৃথি- করিয়া যাইতেছেন, আমরা তাহাজের দৃষ্টান্তে বাঁতে,ষে জ্যোতিৰ্ম্ময় সিংহাসনে অধিরূঢ় হইয়া নাচিয়া-উঠিয়া কয়েকখানি বংশযষ্টি সংগ্ৰহ রহিয়াছেন—তাহার বৈরাগ্যের শুভ্ৰদীপ্তি শত শত ময়ুরাসনের তীব্র জ্যোতি স্নান করিয়া দিতেছে। বঙ্গদেশ হইতে বহুদূরে নহে— কপিলাবস্তুর বনরাজির চিরহরিৎ পল্লবনিচয় আমাদিগকে যে বৈরাগ্যের স্বপ্ন দেখাইতেছে, তাহা প্রত্যাখ্যান করিলে আমাদের প্রকৃত • মহিমা বিদূরিত হইবে । এই বৈরাগ্যজনিত মহাপ্রেম একদিন বস্তার দ্যায় নবদ্বীপ হইতে বঙ্গদেশকে ভাসাইয়া দিয়াছিল । আমাদের যাহ্বা-কিছু গৌরব, যাহা-কিছু মহিমা—তাহ নিবৃত্তির, তাহা বৈরাগ্যের । হিন্দু পান্থ, এই পূৰ্ব্বপুরুষপ্রদর্শিত পন্থা ত্যাগ করিলে তোমাদের অস্তিত্বরক্ষার সম্ভাবনা নাই । প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনে বাল্য, যৌবন ও বাৰ্দ্ধক্য উপস্থিত হয় ; বালক বৃদ্ধের মত হইয়া পড়িলে তাহার অকাল জ্যেষ্ঠতাতত্বের জন্ত সে নিন্দিত হয়, বৃদ্ধও যৌবনের আড়ম্বরপ্রকাশে উৎসাহী হইলে তাহার গু4েক্ষর কলপ * ও পরিচ্ছদের পরিপাট্য হণস্ত্যের উন্ত্রেক করে । হিন্দুজাতি এখন বয়োবৃদ্ধ । যাহার এখন নবযৌবনের স্ফৰ্ত্তিতে দুই হাতে বিজয়ডঙ্কা বাজাইয়া পৃথিবী চমকিত করিয়া তুলিতেছেন, রাজ্যলুন্ধ ও ধনগৃদ্ধ হইয়া সৰ্ব্বজনীন হিতের মস্তকে বজাঘাত করিতেছেন,—পশুহননের জন্ত নহে, স্বজাতির সংহারকামনায় ভয়স্কর শত শত মৃত্যুর উপায় উদ্ভাবন করিতেছেন, বাহারা মনুষ্যজাতির প্রতি স্বগীয়সখ্যজ্ঞাপক মহাগ্রন্থ বাইবেলের নীতি মুখে স্বীকার করিয়াও সেই পুস্তকের ছত্ৰে ছত্ৰে শেল বিন্ধ করিয়া জগতে বরণীয় হইব, ইহা নিতান্তই উপহাসের কথা—এই বংশদণ্ডের বীরত্ব ও প্রতাপাদিত্যের প্রেতাত্মার আমন্ত্রণ—অামাদের ললাটে গৌরবচিহ্র অঙ্কিত করিতে পারিবে না । ইহার অপেক্ষ উপহাসের কথা কি হইতে পারে ষে, যেকালে ম্যাক্সিম গন প্রভৃতুি মৃত্যুর ভয়াবহ যন্ত্ৰসকল উদ্ভাবিত হইতেছে এবং বৈজ্ঞানিক যুদ্ধবিস্তার লোলরসনা বিনাশশক্তি তাণ্ডবনৃত্যের সুচমা দেখাইয়া জগৎকে আতঙ্কিত করিতেছে, সেইকালে আমরা জগতের একপ্রান্তে বসিয়া কয়েকটি বংশযষ্টিতে সর্ষপতৈল সংযোগ করিতেছি ও প্রতাপাদিত্য, উদয়াদিত্য প্রভৃতি পল্লিবীরগণের মৃতস্বপ্নের পুনরুদ্ধারকল্পে সচেষ্ট হইয়া রঙ্গালয়ের ক্ষণিক উত্তেজনার আত্মপ্রসাদে চরিতার্থ হইতেছি । গীতার “স্বধৰ্ম্মে নিধনং শ্রেয়ঃ” সকলেই জানেন । আমরা এখন ঐরূপ বীরত্বে অনুপ্রাণিত হইবার অবস্থা অতিক্রম কয়িয়া আসিয়াছি—উহা আমাদের ধৰ্ম্ম নহে । বৃদ্ধ ব্যক্তির গুস্ফে কলপ দেওয়ার হ্যায় এই ধার-করা বীরত্ব উপহাসের স্বষ্টি করিতেছে মাত্র । আমরা দেশীয় ব্যায়ামের পুনঃপ্রতিষ্ঠার হিসাবে এই বংশযষ্টির অন্ধুশীলন স্বাস্থ্যের হিতকর বলিয়া , গণ্য করি, কিন্তু কোন রাষ্ট্রবিপ্লবের সময় ইহা অামাদের রাজেশল্পতির নির্ভরদও হুইৰে—এ কল্পনা নিতান্ত অসাড়। আশা করি, এরূপ উদভ্ৰাস্ত কল্পনা কাহার ও মাথায় আইসে নাই । বয়োবৃন্ধের যে সম্মান, তাহ আমাদের ষথেষ্ট ছিল, বর্তমান কালের ছিড়িকে অধির
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৯৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।