\లి:ఫిy কিছুই বলিল না—গাড়ির অন্ধকারে চুপ করিয়া বসিয়া রহিল । দেখিতে দেখিতে গাড়ির কোণে মাথা রাখিয়া , কমলা আবার ঘুমাইয়া পড়িল। ক্ষণকালের জন্ত কমলার অস্তিত্বকে রমেশের যেন অসহ বোধ হইল । প্রাণপণ শক্তিতে ইহার বন্ধন একেবারে ছিন্ন করিয়া ফেলিতে ইচ্ছা করিল। একটিমাত্র এই বালিক। তাহার ভবিষ্যৎকে এমন কল্পিয়া আবৃত করিয়া দাড়াইয়াছে যে, যে দিকেই তাকায়, কোথাও সে কোন পথ খুজিয়া পায় ন । রাত্রে গাড়ি যখন দুষ্ট পাশ্বের হস্ম্যশ্রেণীর মাঝখান দিয়৷ ছুটিয়া চলিতে লাগিল, তাহার মনে হইতে লাগিল, কমলা যেন একটা বস্তার মত তাহার পরিচিত লোকালয় হইতে রমেশকে একট। কালো লোতের উপর দিয়া ছৰ্নিবার বেগে ভাসাইয়। লইয়া চলিয়াছে—কোথায় ঠেকিবে, কোথায় থামিবে, কিছুই জানা নাই এবং রমেশের সমস্ত আশ্রয়স্তান এই স্রোতের সংঘাতে ভাঙিয়া-চুরিয়া কি দশা পাইবে, তাহা ও কল্পনা কর। কঠিন । সাতার দিবার সময় পায়ে কাপড় জড়াইয়া ডুবিবায় মত হইলে মজ্জমান ব্যক্তি বন্ধনমোচনের জন্ত যেমন করিয়া পা ছুড়িতে থাকে, রমেশের সমস্ত মনটা ভিতরে-ভিতরে তেমনি হাসফাস করিতে লাগিল। ইচ্ছা করিতে লাগিল, এখনি গাড়ি ফুিরাইয়। সেই গলির মধ্যে সেই বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করে এবং সকলের সামনে কমলাকে রাখিয়া আজ রাত্রেই সকল কথা পরিষ্কার করিয়া বলে । কিন্তু কথা পরিষ্কার হইবার পক্ষে অনেক বিলম্ব হইয়া গেছে। দেশে তাঙ্গাদের পরিবারের মধ্যে রমেশ
- वञ्चमश्लॅन ।
[ ৩য় বর্ষ, পৌষ । কমলাকে লইয়া স্বামিস্ত্রীর মত অনেকদিন যাপন করিয়াছে—কমলার ইতিহাস হইতে তাহ মুছিয়া ফেলিবার আর কোন উপায় নাই ; এখন সত্য কথা বলিতে গেলে কমলাকে একেবারে ভাসাইয়া দিতে হয় । যদি তাহার স্বামী থাকে, তবে সে অবলম্বন হইতে কমলা ভ্ৰষ্ট হইয়াছে ; আর সমাজে বৈধব্যের যে নিভৃত আশ্রয়, তাহা হইতেও কমল বিচাত। এমন অবস্থায় তাহাকে একাকিনী ফেলিয়া অণর কেহ পলায়ন করিতে পারে, কিন্তু রমেশ পারে না । গাড়ি যথাসময়ে ষ্টেশনে পৌছিল । একটি সেকেণ্ড-ক্লাস গাড়ি পূৰ্ব্ব হইতেই রিজাভ করা ছিল—রমেশ ও কমলা তাহাতে উঠিল । একদিকের বেঞ্চিতে কমলার জন্ত বিছান। পাতিয়া গাড়ির বাতির নীচে পর্দা টানিয়া অন্ধকার করিয়া দিয়া রমেশ কমলাকে কহিল, “অনেকক্ষণ তোমার শেবার সময় হইয়া গেছে, এইখানে তুমি ঘুমাও ।” কমলা কহিল, “গাড়ি ছাড়িলে আমি ঘুমাইব, ততক্ষণ আমি এই জানালার ধারে বসিয়া একটু দেখিব ?” - রমেশ রাক্তি হইল । কমলা • মাথtল্প কাপড় টানিয়া প্ল্যাটফৰ্ম্মের দিকের আসনপ্রাস্তে বসিয়া লোকজনের আনাগোনা দেখিতে লাগিল । রমেশ মাঝের আসনে বসিয়া অদ্যমনস্কভাবে চাহিয়া রহিল । গাড়ি যখন সবে ছাড়িয়াছে, এমন-সময় রমেশ চমূকিয়া উঠিল—হঠাৎ মনে হইল, তাহার একজন চেনালোক গাড়ির অভিমুখে ছুটিয়াছে । পরক্ষণেই কমলা খিলখিল করিয়া হাসিয়া উঠিল । রমেশ জানলা হইতে মুখ