নবম সংখ্যা । ] কমলা কেবল সংক্ষেপে কহিল, পাগল হইয়াছ !”—ক্ষণকাল পরে সে বলিয়া উঠিল, “কিন্তু পান তৈরি করিতে পারি নাই, তুমি আমাকে পান আনাইয়া দাও নাই!” রমেশ কহিল, “নীচে পানওয়ালা পান বেচিতেছে ।” এমনি করিয়া অতি সহজেই ঘরকল্প সুরু হইল । রমেশ মনে মনে উদ্বিগ্ন হইয়। উঠিল । সে ভাবিতে লাগিল, *দাম্পত্যের ভাবকে কেমন করিয়া ঠেকাইয়া রাখা যায় ? গৃহিণীর পদ অধিকার করিয়া লইবার জন্ত কমলা বাহিরের কোন সহায়তা বা ও শিক্ষার প্রত্যাশা রাখে না । সে যতদিন তাহার মামায় বাড়ীতে ছিল, রণধিয়াছে-বাড়িয়াছে, ছেলে মানুষ করিয়াছে, ঘরের কাজ 漫 प्राँ দরের কথা { 8 е 4 চালাইয়াছে।’ তাহার নৈপুণ্য, তৎপরতা ও কৰ্ম্মের আনন্দ দেখিয়া রমেশের ভারি জলদর লাগিল—কিন্তু সেই সঙ্গে এ কথাও সে ভাবিতে লাগিল, “ভবিষ্যতে ইহাকে লইয়া কি ভাবে চল যাইবে ? ইহাকে কেমন করিয়া কাছে রাখিব, অথচ দুরে রাখিয়া দিব ? তাহীদের দুইজনের মাঝখানে গণ্ডীর রেখাটা কোনথানে টানা উচিত ? তাহাদের উভয়ের মধ্যে যদি হেমনলিনী থাকিত, তাহা হইলে সমস্তই সুন্দর হইয়া উঠিত । কিন্তু সে অাশা যদি ত্যাগ করিতেই হয়, তবে একলা কমলাকে লইয়া সমস্ত সমস্তার মীমাংসা.যে কি করিয়া হইতে পারে, তাহা ভাবিয়া পাওয়া কঠিন । রমেশ স্থির করিল, আসল কথাটা কমলকে খুলিয়া বলাই উচিত, ইহার পরে আর চাপিয়া-রাখা চলে না । ক্রমশ । মন্দিরের কথা l উড়িয্যtয় ভুবনেশ্বরের মন্দির যখন প্রথম দেখিলাম, তখন মনে হইল, একটা যেন কি নূতন গ্রন্থ পাঠ করিলাম। বেশ বুঝিলাম, এই পাথরগুলির মধ্যে কথা আছে ; সে কথা বহুশতাব্দী হইতে স্তম্ভিত বলিয়া, মুক বলিয়া, হৃদরে আরো যেন বেশি করিয়া আঘাত করে । • ঋক্-রচয়িতা ঋষি ছন্দে মন্ত্ররচনা করিয়৷ গিয়াছেন, এই মন্দিরও পাথরের মন্ত্ৰ ; হৃদয়ের কথা দৃষ্টিগোচর হইয়া আকাশ জুড়িয়া দাড়াইয়াছে । মামুযের হৃদয় এখানে কি কথা গাথিয়াছে ? ভক্তি কি রহস্ত প্রকাশ করিয়াছে ? মানুয অনন্তের মধ্য হইতে আপন অন্তঃকরণে এমন কি বাণী পাইয়াছিল, যাহার প্রকাশের প্রকাও চেষ্টায় এই শৈলপদমুলে বিস্তীর্ণ প্রান্তর আকীর্ণ হইয়া রহিয়াছে ? এই যে শতাধিক দেৰালয়—যাহার
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪১০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।