পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম সংখ্যা । ] তত্ত্বজ্ঞানের অধিকার থাকা বিনা প্রমাণে ব্যাখ্যা না করিয়া, লিখিয়া গিয়াছেন ;– “বিজ্ঞানে ব্রহ্মবিদ্যায়াং মৈত্র্যাক্রেয়্যাদিবৎ অবহিস্কৃতাং তত্ৰাপ্যধিকারিণীমিত্যর্থঃ।” মৈত্রী, আত্ৰেয়ী প্রভৃতি ভারতরমণীগণ যেমন পুরাকালে রমণী হইয়া ও ব্রহ্মবিদ্যাধিকার হইতে বহিস্কৃত হন নাই, পরন্তু অধিকারিণী বলিয়। স্বীকৃত হইয়াছিলেন, শবরী ও তদ্রুপ গুরুকুলকর্তৃক সন্ন্যাস ও তত্ত্বজ্ঞানে অধিকার লাভ করিয়াছিলেন । তীর্থ ও কতক নামধেয় টীকাকারগণের এই মূলামুগত ব্যাখ্য উত্তরকালে গৃহীত হয় নাই । ইহা “স্ত্রীশূদ্ৰদ্বিজ নাং ত্রয়ী ন শ্রুতিগোচরণ” এত শাসনবাক্যের নিতাস্ত বিরোধা বলিয়া, উত্তরকালের টীকাকার রামানুজ রামায়ণের এই শ্লোকার্থের ব্যাখ্যায় এক নুতন অর্থ আবিস্কারের চেষ্টা করিয়া গিয়াছেন । সে অথ এই—“বিশিষ্টং জ্ঞানং যেষাং তেষাং সম্বন্ধে। যস্থাস্তংসম্বোধনে হে বিজ্ঞানে । ইতি সম্বোধ্য, তাং নিত্যমবহিস্কৃতাং ভোজনাদিব্যাপারাদিতি শেষঃ, তদত্তমাহারাদিকমঙ্গীকৃত্য ।” বলা বাহুল্য, রামান্থজের এই ব্যাথ্যা নিতান্ত কষ্টকল্পিত বোধ হয়, তাছার সময়ে জনসমাজ স্ত্রীলোকের ব্রহ্মবিদ্যায় অধিকার থাক। স্বীকার করিভেন না বলিয়া, রামানুজ রামায়ণের সরল বাক্যাথের এরূপ কুটিল কষ্টকল্পিত বিকৃত ব্যাখ্যা লিপিবদ্ধ করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন । শাক্যসিংহ ধৰ্ম্ম প্রচারে নিযুক্ত হইলে, কপিলবস্তুর ক্ষত্রিম্বরমণীগণ নবধৰ্ম্ম গ্রহণ অনিয়াছিলেন। র্তাহার। গৃহে বাস করির

  • Rockhill's Life of Buddha, p. 61.

শ্রমণ । 8 >Q গৃহীর ধৰ্ম্ম প্রতিপালন করা অপেক্ষ শাক্যসিংহের স্থায় সন্ন্যাসগ্রহণের জন্ত ব্যাকুলা হইলে, শাক্যসিংহ তাহাদিগের প্রার্থনাম কর্ণপাত করিতে অসম্মত হন । পরে তিনি আনন্দের বিবিধ অকুনরবাক্যে নিতান্ত বাধ্য হইয়। রমণীগণকে সন্ন্যাসাধিকার প্রদান করেন । তৎকালে শাক্যসিংহ রমণীগণের পক্ষে যে সকল কঠোর ব্রত ও নিয়ম পালনের ব্যবস্থা করিয়াছিলেন, তাহার আলোচনা করিলে দেখিতে পাওয়া যায়,— তিনি সন্ন্যাসধম্মের উচ্চ আদর্শ অবিকৃত রাখিবার উদ্দেশু্যেই মহিলামণ্ডলীর সন্ন্যাস- . গ্রহণের প্রতিবাদী হইয়াছিলেন ।* বৌদ্ধভিক্ষুণীগণ সন্ন্যাসগ্রহণের অধিকার লাভ করিয়া, শ্রমণী বা শ্রমণ নাম প্রাপ্ত হহ iাছিলেন কি না, তাহ নিঃসনোহে নির্ণয় করা যায় না । তাহার। ভিক্ষুণী নামেই সাহিত্যে সুপরিচিত। যাহা হউক, শাক্যসিংহের ধৰ্ম্ম প্রচারের পুৰ্ব্ব হইতেই যে “শ্রমণ”শব্দ প্রচলিত ছিল, তাছার সন্দেহ নাই । শাক্যাবির্ভাবের পূর্বকালবিরচিত পাণিনিস্থত্রেও “শ্রমণ।” শব্দ দেখিতে পাওয়া যায়। যথা --- “কুমারঃ শ্রমণাদিভিঃ ॥” ২১৷৭ • ॥ * কুমারশব্দঃ শ্রমণাদিভিঃ সহ সমস্ততে, তৎপুরুষশ্চ সমাসো ভবতি ।” শ্রমণ, প্রত্ৰজিতা, কুলটা, গর্ভিণী, তাপসী, দাসী, বন্ধকী প্রভৃতি শব্দ সংস্কৃতব্যাকরণে “শ্রমণাদি’ 鸚 শব্দ বলিয়া পরিচিত । এই সকল শব্দের সহিত “কুমার”শব মিলিত হইয়া “তৎপুরুষ” সমাস নিম্পন্ন হইবার কথা পাণিনিসুত্রে ব্যক্ত হইয়াছে। এই স্বত্রীকুসারে “কুমারী শ্রমণা"