পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৬২ दछलुमि ! [ ৩য় বর্ষ, মাঘ । লুদ্ধ বালকের ফলারের উৎসাহে কমলাও উৎসাহিত হইয়া উঠিল—কহিল, “পয়সা কিছু বাচিয়াছে উমেশ ?” উমেশ কহিল—“কিছু না মা স্থ কমলা মুস্কিলে পড়িয়া গেল । রমেশের কাছে কেমন করিয়া মুখ ফুটিয়া টাকা চাহিবে, তাই ভাবিতে লাগিল । একটু পরে বলিল— “তোর ভাগ্যে আজ যদি ফলার না-ই জোটে, তবে লুচি আছে—তোর ভাবনা নাই । চল, ময়দ মাখবি চল!” উমেশ কহিল—“কিন্তু মা, দই যা দেখিয়া . আসিলাম, সে আর কি বলিব ।” কমলা কহিল, “দেখ উমেশ, বাবু যখন খাইতে বসিবেন, তখন তুই তোর বাজারের পয়সা চাহিতে আসিস।” রমেশের আহার কতকটা অগ্রসর হইলে, উমেশ আসিয়া দাড়াইয়া সসঙ্কোচে মাথা চুলকাইতে লাগিল । রমেশ তাহার মুখের দিকে চাহিল । সে অৰ্দ্ধোক্তিতে কহিল – *মা, বাজারের পয়সা—” - এ তখন রমেশের হঠাৎ চেতনা হইল যে, অণহারের আয়োজন করিতে হইলে অর্থের প্রয়োজন হয়, আলাদানের প্রদাপের অপেক্ষ। করিলে চলে না । য্যস্ত হইয়া কহিল— “কমল, তোমার কাছে ত টাকা কিছুই নাই । অামাকে মনে করাইয়া দাও নাই কেন ?” কমলা নীরবে অপরাধ স্বীকার করিয়া লইল । আহারাস্তে রমেশ কমলার হাতে একটি ছোট ক্যাশবাক্স দিয়া কহিল—“এখনকার মত তোমার ধনরত্ন সব এইটেতেই ब्रष्ट्रिब्नु ।” এইরূপে গৃহিণীপনার সমস্ত ভারই আপন হইতেই কমলার হাতে গিয়া পড়িতেছে, রমেশ তাহণ প্রত্যক্ষ করিয়া আবার একবার জাহাজের রেলিং ধরিয়া পশ্চিম আকাশের দিকে চাহিল । পশ্চিম আকাশ দেখিতে দেখিতে তাহার চোখের উপরে সম্পূর্ণ অন্ধকার হইয়া আসিল । উমেশ আজ পেট ভরিয়া চিড়ে-দই-কলা মাখিয়া ফলার করিল। কমলা সম্মুখে দাড়াইয়। তাহার জীবনবৃত্তাস্ত সবিস্তারে আয়ত্ত করিয়া লইল । বিমাতা-শাসিত গৃহের উপেক্ষিত উমেশ কাশীতে তাহার মাতামহীর কাছে পালাইয়া যাইতেছিল—সে কহিল, “যা, যদি তোমাদের কাছেই রাখ, তবে অামি আর কোথাও যাই না ।” মাতৃহীন বালকের মুখে মা-সম্ভাষণ শুনিয়া বালিকার কোমল হৃদয়ের কোন এক গভীরদেশ হইতে জননী সাড়া দিল— কমলা স্নিগ্ধস্বরে কহিল—“বেশ ত উমেশ, তুই আমাদের সঙ্গেই চল !” ՀԳ তারের বনস্লাজি অবিচ্ছিন্ন মসীলেখায় সন্ধ্যiবধুর সোনার অঞ্চলে কালে পাড় টানিয়া দিল । গ্রামাস্তরের বিলের মধ্যে সমস্তদিন চরিয়া বদ্যহংসের দল আকাশের মানায়মান স্বৰ্য্যাস্তদাপ্তির মধ্য দিয়া ওপারের তরুশূন্ত বালুচরে নিভৃত জলাশয়গুলিতে রাত্রিযাপনের জন্ত চলিয়াছে। কাকেদের বাসায় আসিবার কলরব থামিয়া - গেছে ! নদীতে তখন নৌকা ছিল না – ' একটিমাত্র বড় ডিঙি গাঢ় সোনালিসবুর্ণ