পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম সংখ্যা। ] নৌকাডুবি । 8లన জাগিল—অনেকক্ষণ পরে কহিল, “আমি জানি না, সে কি করিবে—আমি ত ভাবিয়। উঠিতে পারি না ! বোধ হয়, সে মরিবে !” রমেশ কিছুক্ষণ স্তন্ধ হইয়া রহিল – কহিল, *মরিবে জানিয়াও কি চেৎসিং সকল কথা চজাকে প্রকাশ করিয়া বলিবে ?” কমলা কহিল, “তুমি বেশ যা হোক, ন৷ বলিয়া বুঝি সমস্ত গোলমাল করিয়া রাখিবে ? চন্দ্রীকে সে এক বলিয়, জানিবে, আর চন্দ্র। বুঝি তাহাকে আর বলিয় বুঝিবে ? সে যে বড় বিত্র । চন্দ্রা মরুক বা বাচুক, সমস্ত স্পষ্ট হওয়া চাই ত ।” রমেশ যন্ত্রের মত কহিল—“তা ত চাই ।” রমেশ কিছুক্ষণ পরে কহিল, “আচ্ছ।

  • -ts, afaة چ

কমলা । যদি কি ? রমেশ । মনে কর, আমিই যদি সত্য চেৎসিং হই, আর তুমি যদি চন্দ্র হও— কমলা বলিয়া উঠিল, “তুমি অমন কথা আমাকে বলিয়ো না ; সত্য বলিতেছি, আমার ভাল লাগে না ।” 3. রমেশ । না, তোমাকে বলিতেই হইবে।— তাহা হইলে আমারই বা কি কৰ্ত্তব্য, আর তোমারই বা কৰ্ত্তব্য কি ? কমলা এ কথার কেপনো উত্তর না করিয়া চৌকি ছাড়িয়া দ্রুতপদে চলিয় গেল । দেখিল, উমেশ তাহদের কামরার বাহিরে চুপ করিয়া বসিয়া নদীর দিকে চাহিয়া আছে। জিজ্ঞাসা করিল, “উমেশ, তুই কখনো ভূত দেখিআছিল ?” ● উমেশ কহিল, “দেখিয়াছি মা " . শুনিয়া কমলা অনতিদুর হইতে একটা বেতের মোড় টানিয়া-আনিয়া বসিল— কহিল, “কি-রকম ভূত দেখিয়াছিলি বল ?” কমলা বিরক্ত হইয়া চলিরা গেলে রমেশ তাহাকে ফিরিয়া ডাকিল না । চন্দ্রখণ্ড তাহার চোখের সম্মুখে ঘন বঁাশবনের অস্তরালে অদৃগু হইরা গেল। ডেকের উপরকার আলো নিবাইয়-দিরা তখন সারং-খালাসির জাহাজের নীচের তলায় আহার ও বিশ্রামের চেষ্টায় গেছে। প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণীতে ষান্ত্ৰী । কেহই ছিল না । তৃতীরশ্রেণীর অধিকাংশ যাত্রী রন্ধনাদির ব্যবস্থা করিতে জল ভাঙিয়া ডাঙায় নামিরা গেছে । তীরে । তিমিরাচ্ছন্ন ঝোপঝাপ-গাছপালার ফাকে ফণকে অদুরবর্তী বাজারের আলো দেখা যাইতেছে এবং সেখান হইতে লোকালয়ের কলগুঞ্জনধ্বনি বনভূমির ঝিল্লীরবকে আচ্ছন্ন করিয়া উঠিতেছে। , পরিপূর্ণ-নদীর খরস্রোত নোঙরের লোহার শিকলে ঝঙ্কার দিয়া, চৰিয়াছে এবং থাকিয়া-থাকিয়া জাহ্লবীর । স্ফীতনাড়ির কম্পবেগ ষ্টীমারকে স্পত্তি করিয়া তুলিতেছে। দুর পারের অদ্ধনিমগ্ন - নিজজন ঝাউবন, নিস্তরঙ্গ নদীর ধারা, এ পারের বনবেষ্টিত গ্রাম, সমস্তই অন্ধকারের মধ্যে অপরিব্যক্তভাবে স্বষ্টির আদিকালীন গর্ভবাসচ্ছবির মত দেখা যাইতেছে । e এই অপরিস্ফুট বিপুলত, এই অন্ধকারের নিবিড়ত, এই অপরিচিত দৃপ্তের প্রকাও অপুৰ্ব্বতার মধ্যে নিমগ্ন হইর। রমেশ তাহার কৰ্ত্তব্যসমস্ত উদ্ভেদ করিতে চেষ্টা করিল। রমেশ বুঝিল যে, হেমনলিনী কিংবা কমলা, উভয়েন্ত্র মধ্যে একজনকে বিসর্জন দিতেই । হুইবে । উভয়কেই রক্ষা করিয়া চলিবার ".