مییابع বঙ্গদশন । [ ৩য় বর্ষ, মাঘ । অার-সকলহ তৎকর্তৃক প্রকাশিত হয় । কাজেই জগদযন্ত্র আপন হইতে নিয়মিত, স্বসংষত, সুসজ্জিত, শৃঙ্খলাবদ্ধ, উদ্ধেশ্বাস্থ কুল হইতে পারে না ; উহাকে সাজাইতে-গোছাইতে, উদ্দেশ্রামুকুল করিতে চেতন আত্মার প্রয়োজন । কিন্তু সে কোন আত্মা ? বার্কলি বলিবেন যে, সে বিশ্বাত্মা—বৃহৎ ঐশ্বরিক আত্মা—সৰ্ব্বজ্ঞ সৰ্ব্বশক্তিমান ইচ্ছাময় চৈতন্তরূপী ঈশ্বর—তিনি ঐরাপে সাজাইয়tছেন বলিয়া ইতর সঙ্কীর্ণ পরিমিত জীবাত্মা ঐরূপ সজ্জিত দেখে । হিউম এইখানে আসিয়া বলিবেন, “আচ্ছা, জড়জগতের স্বষ্টির জন্ত, জড়জগৎকে স্বনিযুত করিয়া সাজাইবার জন্ত, যদি একজন চেতনপুরুষের নিতনস্তই প্রয়োজন হয়, তবে তজ্জন্ত ঈশ্বরের কল্পনার প্রয়োজন কি ? অন্ত কোন চেতনপুরুষেও সেই বিধানক্ষমতা, সেই নিয়মরচনার ক্ষমতা অর্পণ করিতে ক্ষতি কি ?” the will of the Supreme Being may “Not only create matter, but for aught we know a priori, thc will of any other being might creatc it.” rawfত্তিক হিউমের বহুশত বৎসর পুৰ্ব্বে জন্মিরাছিলেন ; তিনিও জোরের সহিত এইখানে আসিয়া বলেন, ‘রহ, তজ্জন্ত জীবাত্মা হইতে স্বতন্ত্র বৃহত্তর আত্মার কল্পনার প্রয়োজন দেখি না ; আমাকে ছাড়া আর আত্মা নাই এবং আমিই সেই সৰ্ব্বশক্তিমান সৰ্ব্বজ্ঞ চৈতন্তরূপী মহেশ্বর । আমিই এই প্রতীয়মান বিশ্বে ঐরূপ নিয়মের প্রতিষ্ঠা করিয়াছি - আমিই আমার কল্পিত জগৎকে ঐরুপ উদেখামুকুল করিয়া সাজাইয়াছি—আমিই জগতের স্রষ্টা, কৰ্ত্ত ও ৰিধাতা—আমিই পরমাত্মা ও আমিই ব্ৰহ্ম । কথাটা ঠিক হউক আর নাই হউক, ইহার অপেক্ষ স্পষ্ট কথা আর হইতে পারে না । বেদান্ত যাহাঁকে ব্ৰহ্ম বলেন, তিনি আর কেহ নহেন, তিনি আমি-সোহহমূ—অহং ব্ৰহ্মান্মি । ইহা শ্রুতিসম্মত মহাবাক্য । ইহার অর্থ লইয়া গণ্ডগোল নিষ্ফল । ইহার অর্থ অতি স্পষ্ট । ইহার সত্যতা লইয়া তর্ক তুলিতে পরে—এই মত ভ্রান্ত কি অভ্রান্ত, তাহা লইয়া বিচার করিতে পার ; কিন্তু ইহার অর্থ লইয়া বিসংবাদের কোন অবকাশ নাই । বিশুদ্ধাদ্বয়বাদী শঙ্করাচার্য্য বেদাস্তবাক্যের যে এই অর্থ বুঝিয়াছেন, তাহ সহস্ৰ স্থল হইতে র্তাহার বাক্য উদ্ধৃত করিয়া দেখান যাইতে পারে । আত্মা অর্থে আমি, ইংরেজিতে যাহাকে I go বলে বা Self বলে, তাহাই ; এবং আমার অপর নাম ব্রহ্ম । এই ব্ৰহ্মকে যদি পরমাত্মা বলিতে চাও, আমিই সেই পরমাত্মা ; আমা ছাড়া স্বতন্ত্র বৃহত্তর পরমাত্মা কিছুই নাই । ইহাই বিশুদ্ধ অদ্বৈতবাদ —ইহাই জীবব্রহ্মের অভেদবাদ । আমা ছাড়া জীব নাই—আম ছাড়া ব্ৰহ্ম নাই—আমিই জীব ও আমিই ব্রহ্ম । যাহা জীবাত্মা, তাহাই” পরমাত্ম। কিন্তু ইহ বলিলেই অমনি কোলাহল উঠিবে। রামানুজস্বামী হইতে বার্কলি পৰ্য্যন্ত সকলেই সমস্বরে কোলাহল করিয়া উঠিবেন । কেহ লাঠি বাহির করিবেন, কেহ ভূকুট করিবেন, কেহ উপহাসের হাসি হাসিবেন এবং সকলেই গর্জন করিবেন। বলিবেন, “এ কি বাতুলের প্রলাপ, এই সঙ্কীর্ণ, সসীম, পরিমিত, কৰ্ম্মপাশবন্ধ, সংসারচক্রে
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৯১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।