পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম সংখ্যা ৭ ] ঘূর্ণমান, জৱামরণশীল, দুর্বল; ক্ষীণ জীবের এত বড় স্পৰ্দ্ধা যে, সে জগৎকর্তৃত্ব, জগদবিধাতৃত্ব, সৰ্ব্বশক্তিমত্তার স্পৰ্দ্ধা করে । philosopher, not six feet high”——o ব্যক্তি বিশ্বভুবনপতির সিংহাসন গ্রহণ করিতে চাহে ! হা হতোহস্মি ! হা দগ্ধোহস্মি ! ! অপ্ৰয়বাদী হাসিয়া উত্তর দেন, ‘কে বলিল যে, আমি সঙ্কীর্ণ, সসীম, পরিমিত, কৰ্ম্মপাশবদ্ধ, জরামরণশীল ? কে বলিল, আমি সৰ্ব্বজ্ঞ সৰ্ব্বশক্তিমান নহি ? কেন আমাকে ঐক্সপে পরিমিত বিবেচনা করিব ? ঐ রূপ যদি মনে করি, তাহ আমার অবিদ্যা, তাহ আমার ভ্রান্তি, তাহা আমার অজ্ঞান, তাহ আমার জ্ঞানের অভাব । জ্ঞানের উদয় হইলেই বুঝিব, অখিল প্রপঞ্চের স্রষ্টা, বিধাতা, নিয়ন্ত আমিই সৰ্ব্বজ্ঞ, সৰ্ব্বশক্তিমান, অদ্বিতীয় ব্রহ্ম । অন্ত ব্ৰহ্ম নাই । কে বলিল, আমি মুখদুঃখভোগী পরিমিতশক্তি জীবমাত্র ? এই প্রপঞ্চ যখন আমারই কল্পনা, উহা যখন আমারই প্রত্যয়, এই স্থূলদেহ, এই জন্ম-জরা-মরণ, এই মুখ-দুঃখ, এ সমস্ত ও তখন আমারই কল্পনা । বস্তুত আমি এ সকল হইতে মুক্ত ; নিত্যশুদ্ধবিমুক্তৈকমথুণ্ডানন্দমদ্বয়ম্, সত্যং জ্ঞানমনস্তং যৎ পরং ব্ৰহ্মাহমেব তৎ । এইটুকু না জানিয়া আপনাকে সঙ্কীর্ণ ও পরিমিত মনে করাই অবিস্তা । এইটুকু জানারই নাম অবিস্কার ধ্বংস—তাহার পারিভাষিক নাম মুক্তি । প্রতিপক্ষ বলিবেন, “ইহা অদ্বয়বাদীর নিতান্তই গাল্পের জোর । জীবের সঙ্কীর্ণতা মানিব না বলিলেই কি চলিবে ? এক-মুষ্টি o “minute অল্প যাহার জীবত্বের ভিত্তি, তাহার মুথে এমন কথা বাতুলের প্রলাপ • কাজেই প্রতিপক্ষকে মুক্তি । - 8tyS নিরস্ত করিতে হইলে অদ্বয়বাদীর ঐ উক্তির তাৎপৰ্য্য আর-একটু স্পষ্টভাবে বুঝিবার চেষ্টা করিতে হইবে । পাশ্চাত্যদর্শনে যাবতীয় পদার্থকে ছুই ভাগে ভাগ করা হয় ; একের নাম Subject বা বিষয়ী ; অপরের নাম Object বা বিষয় । যে উপলব্ধি করে, সে বিষয়ী ; যাহা উপলব্ধ হয়, তাহা বিষয় । এই বিষয়ী অামি—অহংপদবাচ্য ; আর এই বিষয় তুমি—ত্ৰংপদবাচ্য। তুমি-শব্দে কেবল আমার সম্মুখবৰ্ত্তা তোমাকেমাত্র বুঝায় না । তুমি বলিতে, তিনি, সে, রাম-শুাম-হরি, বাঘ-ভালুক, কীটপতঙ্গ, গাছপালা, চন্দ্রস্থৰ্য্য, লোষ্ট্র-ইষ্টক, সবই বুঝায়। কেন না, এ সকলই কোন-না-কোন সময়ে তোমার স্থলবত্তী হইয়া আমার উপলব্ধির বিষয় ব। আমার প্রত্যক্ষ হইয়াছে বা হইতে পারে। কাজেই এ সকলই বিষয়শ্রেণিভুক্ত। এমন কি, আমার ইন্দ্রিয়, আমার মন, আমার বুদ্ধি, এ সকলও অামি কোন-না-কোন প্রমাণ দ্বারা উপলব্ধি করিয়া থাকি । কাজেই এ সকলও বিযয়স্থানীয় । এই সমগ্ৰ বিষয়ের মধ্যে কতিপয় বস্তুকে অর্থাৎ তোমাকে, র্তাহাকে, রাম-গুণম-হরিকে, আমারই মত চেতনাসম্পন্ন বলিয়া মনে করি ; আর চন্দ্রস্বর্য্য, গাছপালা, লেtষ্ট্র-ইষ্টকাদিকে চেতনাহীন বলিয়া মনে করি । উহা কেবল লোকব্যবহারের জন্ত ; উহা ব্যাবহারিক সত্য । উছাতে আমার জীবনযাত্রার সুবিধা হয়, এইমাত্র ; কিন্তু আমার জীবনযাত্রাই ব্যবহারমাত্র—স্তুতরাং পারমার্থিকভাবে অসত্য । বিষয়ী আমিই একমাত্র চেতনপদার্থ—আর আমা ছাড়া যাহ-কিছু আমার প্রত্যক্ষগোচর বা অম্লমান