পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম সংখ্যা । ] মুক্তি । 8సి) দশ বিপৰ্য্যয়কে উপমিত করা চলে। আমাকে অামি এই সংসারচক্রে ঘুর্ণমান, পরিমিত, কৰ্ম্মবন্ধনবন্ধ বিষয়tধীন জীব বলিয়া মনে করিয়া থাকি । ঐ বিষয় সৰ্ব্বতোভাবে অামা হইতে স্বাধীন, স্বতন্ত্র, বহিঃস্থ, ও আমা অপেক্ষা সৰ্ব্বতোভাবে শক্তিশালী, ইহাই আমার বিশ্বাস । উহা অাপন নিয়মে চলিতেছে, সেই নিরমের উপর আমার প্রভুত্ব নাই ; কখন বা আমি চেষ্ট. দ্বারা নিয়মকে আমার অমুকুল করিয়া লই বটে, কিন্তু সেই নিয়ম সৰ্ব্বতোভাবে আমার অনধীন ও শেষ পর্য্যস্ত উহা অামাকে পরাভব করে ; তখন আমি জগদযন্ত্রের চাকার তলে দলিত, পিষ্ট, অভিভূত হইয়া থাকি । আমার সহিত জগতের সম্বন্ধ আপাতত আমার ঐরূপ বোধ হয় । বোধ হয়, জীব ক্ষুদ্র, জগৎ বৃহৎ । জীব জগতের অধীন এবং জগতের অধীনতাবশে মুখদুঃখভাগী ও জরামরণশীল । বৈদাস্তিক এইখানে অগসিয়া বলেন, “যাহা মনে করিতেছ, তাহ ভুল । জীবের স্বভাৰ ঐক্কপ নহে, জগতের স্বরূপ ও ঐরূপ নহে ; এবং উভয়ের সম্বন্ধ যাহা ভাবিতেছ, ঠিক তাহীর উণ্ট । ঐ যে জগৎ, "ঐ যে বিষয়, উহার পারমার্থিক অস্তিত্ব নাই ; উহ! বিষন্ত্রীর অর্থাৎ আমার কল্পিত পদার্থ। পরমার্থত উহা স্বপ্লবৎ অলীক পদ । এ কথা ৰে বৈষ্কাস্তিক এক বলেন, তাহা শহে । ইহা প্রাচ্য দার্শনিকের আফিমখুরি নহে । বার্কলি ও হিউম হইতে জন ইয়ার্ট মিল ও টমাস হেনরি হক্সলী পৰ্য্যন্ত সকলেই জগতের *ब्रमेॉर्थिक अरिष्ठद्ध चर्चौकांग्न करब्रन । ॐांशলর যুক্তি কাটিতে বিনি সাহস করিবেন, * * তিনি করুন । আমরা সেই যুক্তির সারবত্তসম্বন্ধে বিচারে প্রবৃত্ত হইব না । আমরা র্তাহাদের সহিত মানিয়া লইৰ—বিষয়ের নিরপেক্ষ স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নাই, উহা বিষয়ীর কল্পনামাত্র । বিষয়ী উহাকে স্বষ্টি করিয়া আপনার বাহিরে প্রক্ষিপ্ত করিয়াছে । এইখানে স্থষ্টিশব্দ একটু বিশিষ্ট অর্থে ব্যবহার করা গেল । ইংরেজিতে যাহাকে creation বলে, আজকাল আমর। স্থষ্টিশব্দ সেই অর্থে ব্যবহার করি । ইংরেজি creationশব্দে কখনও গঠন বা নিৰ্ম্মাণ বুঝার, কখনও অভিব্যক্ত করা বা মুৰ্ত্তাস্তর দেওরা বুঝায়, আবার কখনও বা অভাব হইতে ভাবপদার্থের উৎপাদন বুঝায়। কিন্তু বিষয়ী যে অর্থে বিষয়কে স্বষ্টি করে, আমি যে অর্থে আমার জগৎকে স্বষ্টি করিয়াছি, তাহা ঐক্কপ creation বলিলে বুঝায় না । এই স্বষ্টিশব্দের অর্থ কি, তাহা ও উমেশচন্দ্র বটব্যাল র্তাহার সাংখ্যদর্শনপুস্তকে অতি সুন্দর রূপে বুঝাইয়াছেন । এস্থলে তাহার ভাষা উদ্ধৃত করিবার প্রলোভন সংবরণ করিতে পারিলাম না । “স্বজ-ধাতুর আদিম অর্থ বোধ হয় ত্যাগ বা নিক্ষেপ । এই ধাতু হইতে বিসজর্জন, সর্গ, বিহুই, বিস্বষ্টি, স্বষ্টি ইত্যাদি শব্দ নিৰ্ম্মিত হইয়াছে । যে প্রক্রিয়া দ্বারা আত্মা আপনার জ্ঞানরাশিকে জ্ঞেয়ের উপর নিক্ষেপ করে, আপন হইতে বহিস্কৃত করিয়৷ তদ্বারা জ্ঞেয়কে আবৃত করে—অর্থাৎ আত্মা হইতে যেরূপে স্থলভূতের আবির্ভাব হয়—তাহার নাম দার্শনিক স্বষ্টি । যেমন ওটিপোকায় রেশমের কোয়া নিৰ্ম্মাণ করিয়া আপনাকে তষ্মধ্যস্থ করে, তন্ধপ নরনারী যে প্রক্রিয়া