পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম সংখ্যা । ] মুক্তি । 8æጫ কেই মিথ্যা বলিয়া জানি, তখন আত্মাতে অণর জগতের কর্তৃত্ব আরোপের প্রয়োজন থাকে না । যাহা লাই, তাহার আর কৰ্ত্তা কি ? কাজেই ব্যাবহারিক হিসাবে আত্মা ঈশ্বর ও সোপাধিক ; পরমার্থত আত্মা কর্তৃত্বহীন, নিগুৰ্ণ ও নিরুপাধিক ।” অদ্বয়মতে অামি পরমার্থত উপাধিশুম্ভ, কিন্তু ব্যবহারত উপাধিযুক্ত ৷ এক ভাবে দেখিলে আমার কোন গুণ নাই, কর্তৃত্ব পৰ্য্যস্ত নাই, অন্তভাবে দেখিলে আমিই জগৎকর্তা । এই জগৎকর্তৃত্বরূপ উপাধি, বাহা অামি আমাতে আরোপ করিয়া মৎকল্পিত স্বষ্টিপ্রণালীর ব্যাখ্যা করি, ইহার পারিভাষিক নাম মায়া । বেদাস্তের ভাষায়, আত্মা মায়েtপাধিক হইলে ঈশ্বর হয়, অর্থাৎ আমি আমাতে মায়ানামক উপাধি আরোপ করিয়া জগতের স্বষ্টি করি । ঐন্দ্রজালিককে মায়াবী বলে , সে ব্যক্তি ষে ক্ষমতায় দৃষ্টিবিভ্রম উৎপাদন করিয়া শূন্তমধ্যে ঘরবাড়ী নিৰ্ম্মাণ করে, কাটামুণ্ডে কথা কহায়, আমগাছে নারিকেল ফলায়, সেই ক্ষমতার নাম মায়া । ৰাহজগৎ এইরূপ একটা প্রকাও ইজজtল ; কাজেই ধে পুরুষ সেই ইন্দ্রজাল উৎপল্প করে, 'সে মায়াৰী, সে মায়ানামক-উপাধিযুক্ত । ঐশ্রজালিকের উৎপাদিতু ঐ সকল অস্তুত দৃপ্তের বাস্তবিক অস্তিত্ব কিছুই নাই ; ঐন্দ্রজালিকেরও বস্তুগত্য আমগাছে নারিকেল ফলাইবার ক্ষমতা নাই। অজ্ঞলোকে ঐক্সজালিকে যে অলৌকিক ক্ষমতা অর্পণ করে, ঐক্রয়ালিকের সেরূপ ক্ষমতা কিছুই নাই। তবে ৰে সে ঐক্কপ জাশ্চৰ্য্য কৌশল দেখায়, তাই দর্শকগণেরই অজ্ঞতার ফল। ষে জানে, সে ঐন্দ্রজালিকের মায়ায় প্রতারিত হয় না ; - সে ঐ সকল কৌশলকে মিথ্যা দৃষ্টিভ্রম বলি স্বাই জানে ও ঐন্দ্রজালিককেও অলৌকিক শক্তিসম্পন্ন মান্বষ বলিয়া মনে করে না । সেইরূপ আত্মা যে জগতের স্বষ্টি করে, সে জগৎও অলীক পদার্থ ; ষে ইহা জানে না, সে প্রতারিত হয় ; তাহার নিকট আত্মা মায়াবী, অস্তুতশক্তিসম্পন্ন পদার্থ ; আর ৰে জগৎকে মিথ্যা কল্পনা বলিয়া জানে, সে জানে, আত্মায় ঐক্কপ ক্ষমতার আরোপ আবণ্ডক নহে। আত্মা প্রকৃতপক্ষে নিগুণ ও উপাধিশুম্ভ । ষে ব্যক্তি এই कथाप्लेकू खांप्न না, সে বদ্ধ ; আর যে জানিয়াছে, সে মুক্ত । বিষয়ীর সহিত বিষয়ের সম্বন্ধ কি, তাহ এখন বুঝা যাইবে । উভয়ের স্বরূপ কি, তাহ বুঝা গেল । বিষয় একটা অধ্যাস , উহার পারমার্থিক অস্তিত্ব নাই, ব্যাবহারিক অস্তিত্ব আছে। বিষয়ীর ব্যাবহারিক ও পারমার্থিক, উভয়বিধ অস্তিত্বই আছে ; তবে ব্যবহারত উহ মায়াবলে জগতের স্বষ্টিকৰ্ত্ত, অতএব সৰ্ব্বজ্ঞ, সৰ্ব্বশক্তিমান ; কিন্তু পরমার্থত উহ উপাধিরহিত, নিক্রিয়, কর্তৃত্বহীন । এই উভcয়র সম্বন্ধ কিরূপ হইতে পারে ? আমি আমাকে সৰ্ব্বতোভাবে প্রাকৃতিক শক্তিনিচয়ের অধীন, সসীম, সঙ্কীর্ণ, স্থখছুঃখভাগী, জরামরণশীল ক্ষুদ্র জীব বলিয়। মনে করি। কিন্তু তাহা অধ্যাসমাত্র। প্রকৃত সম্বন্ধ ঠিক ইহারু বিপরীত। আমিই বরং জগতের স্রষ্ট নিম্নস্ত। বিধাতা বলিলে ঠিক হয় । আমিই জগৎকে ঐরূপভাবে গড়িয়াছি ও ঐরূপভাবে চালাইতেছি, তাই জগৎ ঐক্কপ দেখায় ও ঐরূপ চলে । এইরূপ বলিলে ৰৱং ঠিক হয়।