(tఫిష్చి চাঞ্চল্য তাহার পক্ষে সফলতার কারণ নহে । তাহাকে গভীরভাবে শিকড় নামাইতে হইবে, তাহাকে বিস্তীর্ণভাবে ডালপালা মেলিতে হইবে, তাহাকে ধীরভাবে সমস্ত পল্লব দিয়া সুর্য্যালোক গ্রহণ করিতে হইবে । ইহাই সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন হইলে তাহার পরে যাহা ফল ফলিবার, তাহা ফলিবে । কিন্তু বর্তমানকালে আমাদের ধৰ্ম্মচর্চার গভীরতা যে পরিমাণে হ্রাস পাইয়াছে, আমাদের ধৰ্ম্মসমাজের চাঞ্চল্য ও সেই পরিমাণে বাড়িয়া উঠিয়াছে ৷ ‘এস আমরা সভা করি, এস আমরা প্রচার করিতে বাহির হই, এই বলিয়া আমরা পরস্পরকে উত্তেজিত করি এবং প্রভূতপরিমাণ অপরিণত শক্তির অপব্যয় করিয়া থাকি । শুদ্ধমাত্র নিষ্ফলতাই যদি ইহার পরিণাম হইত, তবে ইহাকে আমি তত অধিক ক্ষতি বলিয়া গণ্য করিতাম না । কৃষিকাৰ্য্য ষে কিছুই জানে না, সে যদি উৎসাহসহকারে বীজবপন করিতে প্রবৃত্ত হয়, তবে যে কেবল ফসল না জন্মিয়াই অনিষ্ট করে, তাহা নহে, বীজও নষ্ট হয় । আধ্যাত্মিক সত্যকে যে ব্যক্তি সাধনার দ্বারা জীবনের মধ্যে লাভ না করিতে পারিয়াছে, সে ব্যক্তি এই সত্যপ্রচারের ভার লইলে কেবল যে প্রচারকাৰ্য্য ব্যর্থ হয়, তাহা নহে, সত্য মান হয়, সত্য অসত্য হইয়া উঠে । ছভাগ্যক্রমে ধৰ্ম্মপ্রচারের অধিকারসম্বন্ধে আমরা বড় অধিক চিন্তাই করি না । ধৰ্ম্মের পুরাতন কথাগুলিকে যেমন-তেমন করিয়া পুনঃপুন আবৃত্তি করিয়৷ ষাইবার জন্ত ইচ্ছ, অবকাশ এবং বাকুপটুতা থাকিলে বঙ্গদশন । [ ৩য় বর্ষ, ফাঙ্কন । আর বেশি-কিছুর প্রয়োজন হয় না, এইরূপ আমাদের ধারণা । সকল কম্মেল্প অপেক্ষা ধৰ্ম্মপ্রচারের ব্যবসায়ে যোগ্যতার প্রয়োজন অল্প আছে, আমাদের ব্যবহারে এইরূপ প্রমাণ হয় । মনে করি, উৎসাহ এবং অহমিকাই প্রচারকের পক্ষে যথেষ্ট সম্বল । মনে করি, প্রচারের অভাবেই দেশে ধৰ্ম্মের অবনতি হইতেছে, সাধনা এবং অভিজ্ঞতার অভাবে নহে। মনুষ্যত্বের সমস্ত মহাসত্যগুলিই পুরাতন এবং ‘ঈশ্বর আছেন? এ কথা পুরাণতম । এই পুরাতনকে মামুষের কাছে চিরদিন নুতন করিয়া রাখাই মহাপুরুষের কাজ । জগতের চিরস্তন ধৰ্ম্মগুরুগণ কোনো নুতন সত্য আবিষ্কার করিয়াছেন, তাহ নহে—তাহার। পুরাতনকে তাহাদের জীবনের মধ্যে নুতন করিয়া পাইয়াছেন এবং সংসারের মধ্যে তাহাকে নুতন করিয়া তুলিয়াছেন । একদিন সরস্বতীনদীতীরে তপোবনচ্ছায়ায় ভারতের ঋষি উচ্ছ,সিতস্বরে বলিরা উঠিয়াছিলেন – “শৃগৃত্ত বিশ্বে অমৃতস্ত পুত্র আযে ধামানি দিব্যানি অস্থ – বেদাহমেতং পুরুষং মহাস্তমাদিত্যবর্ণং তমস: পরস্তাৎ । তমেব বেদিত্বাতিমৃত্যুমেতি নান্যঃ পন্থ বিদ্যতে অয়নায় ” হে দিব্যধামবাসি অমৃতের পুত্ৰগণ, সকলে শোন—আমি সেই জ্যোতিৰ্ম্ময় তিমিরাতীত মহানু পুরুষকে জানিয়াছি—তাহাকে জানিস্বাই মৃত্যু অতিক্রম করা যায়, মুক্তির অন্ত কোনো পথ নাই । ● ইহ নুতন সত্যের কথা নহে, ইহা নুতন উপলব্ধির কথা । ঋষির এই উপলব্ধির উচ্ছ সেই আমাদিগকে স্পর্শ করে, সচেতন
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫২৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।