《8 অগ্রসর করি না, বরঞ্চ অভ্যস্তবাক্যের তাড়নায় বোধশক্তিকে আড়ষ্ট করিয়া ফেলি । যে সকল কথা অত্যস্ত জানা, তাহাদিগকে একটা নিয়ম বাধিয়া বারংবার শুনাইতে গেলে, হয় আমাদের মনোযোগ একেবারে নিশ্চেষ্ট হইয়া পড়ে, নয় আমাদের হৃদয় বিদ্রোহী হইয়া উঠে । ৰিপদ কেবল এই একমাত্র নহে। অনুভুতিয়ও একটা অভ্যাস আছে ৷ ‘ আমরা বিশেষ স্থানে বিশেষ ভাষাবিদ্যাসে এক প্রকার ভাবাৰেগ মাদকতার ইতায় অভ্যাস কয়িয়া ফেলিতে পারি। সেহ অভ্যস্ত আবেগকে আমরা আধ্যাত্মিক সফলতা বলিয়া ভ্ৰম করি—কিস্ত তাহ একপ্রকার সন্মোহনমাত্র । , এইরূপে ধৰ্ম্ম যখন সম্প্রদায়বিশেৰে বদ্ধ হইয় পড়ে, তখন তাহা সম্প্রদায়স্থ অধিকাংশ লোকের কাছে হপ্পু অভ্যস্ত অসাড়তায়, নয় অভ্যস্ত সন্মোহনে পরিণত হহয়৷ থাকে । তাহার প্রধান কারণ, চিরপুরাতন ধৰ্ম্মকে নুতন করিয়া বিশেষভাবে আপনার করিবার এবং সেই স্থত্রে তাহাকে পুনকবার বিশেধভাৰে সমস্ত মানবের উপযোগী কfরবার ক্ষমতা যাহাদের নাই, ধৰ্ম্মরক্ষা ও ধৰ্ম্মপ্রচারের ভার তাহারাই গ্রহণ করে । তাহারা মনে কয়ে, আমরা নিশ্চেষ্ট হইয়া থাকিলে সমাজের ক্ষতি হুইবে । এইরূপে অধোগ্যতার হস্তে ধৰ্ম্ম যখন অসত্য হইয়। উঠে, তখন নানা ছনিমিত্ত দেখা দিতে থাকে । তখন সাম্প্রদায়িক ধৰ্ম্ম শাত্তির পরিবর্তে বিরোধ, রসের পরিবর্তে তর্ক, বিনয়ের পরিবর্তে দাম্ভিকতা আনিয়া উপ বঙ্গদশন । [ ৩য় বর্ষ, ফাঙ্কন স্থিত করে । তখন সঙ্কীর্ণতা এমনি বেষ্টন করিয়া ধরে যে, ঔদার্থ্যকে ধৰ্ম্মবিরোধী বলিয়াই বোধ হয় । এই কারণেই ইতিহাস দেখিলে দেখা যায়, ধৰ্ম্মের নামে সংসারে যত অদ্যায়, যত অমঙ্গলের স্বষ্টি হইয়াছে, এমন স্বার্থের নামেও হয় নাই । এবং আজও প্রতিদিন দেখিতে পাই, সভ্যনামধারী বড় বড় জাতি নিদারুণ স্বার্থসংগ্রামে ধৰ্ম্মকে আপনার দলভুক্ত, ও ঈশ্বরকে আপনার পক্ষপাতী বলিয়া ঘোষণা করিতে লেশমাত্র সঙ্কোচ অনুভব করে না । - ধৰ্ম্মকে যাহারা সম্পূর্ণ উপলব্ধি না করিয়া প্রচার করিতে চেষ্টা করে, তাহারা ক্রমশই ধৰ্ম্মকে জীবন হইতে দুরে ঠেলিয়া দিতে থাকে। ইহারা ধৰ্ম্মকে বিশেয গণ্ডা অাকিয়৷ একটা বিশেষ সীমানার মধ্যে বদ্ধ করে । ধৰ্ম্ম বিশেষ দিনেয়, বিশেৰ স্থাম্বেয়, বিশেষ প্রণালীর ধৰ্ম্ম হইয় উঠে । তাহার কোথাও কিছু ব্যত্যয় হইলেই সম্প্রদায়ের মধ্যে হুলুসুল পড়িয়া যায়। বিষয়া নিজের জমির সীমানা এত সতর্কতার সহিত বঁাচাইতে চেষ্ট৷ করে না,—ধৰ্ম্মব্যবসায়ী যেমন প্রচণ্ড উৎসাহের সহিত ধন্মের স্বরচিত গণ্ডী রক্ষ৮ করিবার জহু সংগ্রাম করিতে থাকে । এই গণ্ডীরক্ষাকেহ তাহার। ধন্মরক্ষ বলিয়া জ্ঞান করে। বিজ্ঞানের কোনো নুতন মূলতত্ত্ব আবিষ্কৃত হইলে তাহার প্রথমে ইহাই দেখে যে, সে তত্ত্ব তাহদের গণ্ডার সীমানায় হস্তক্ষেপ করিতেছে কি না ; যদি কৃরে, তবে ধৰ্ম্ম গেল বলিয়া তাহার। ভীত হইয়া উঠে । ধন্মের বৃস্তটিকে তাহার। এতই ক্ষীণ করিয়া রাখে যে, প্রত্যেক বায়ুহিল্লোলকে তাহার
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫২৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।