○ミや জন্ত সৰ্ব্বদা পাহারা দাড়াইয়া নাই। ব্রহ্মচৰ্য্য, গণহস্থ্য, বান প্রস্থ প্রভৃতি আশ্রমগুলি এই ধৰ্ম্মকেই জীবনের মধ্যে, সংসারের মধ্যে সৰ্ব্বতোভাবে সার্থক করিবার সোপান । ধৰ্ম্ম সংসারের আংশিক প্রয়োজন সাধনের জন্ত নহে, সমগ্র সংসারই ধৰ্ম্মসাধনের জন্ত । এইরূপে ধৰ্ম্ম গৃহের মধ্যে গৃহধৰ্ম্ম, রাজত্বের মধ্যে রাজধৰ্ম্ম হইয়া ভারতবর্ষের সমগ্র সমাজকে একটি অখও তাৎপর্য্য দান করিয়াছিল। সেইজন্য ভারতবর্ষে, যাহা অধৰ্ম্ম, তাহাই অনুপযোগী ছিল—ধৰ্ম্মের দ্বারাই সফলতা বিচার করা হইত, অন্ত সফলতা দ্বারা ধৰ্ম্মের বিচার চলিত না । এইজন্ত ভারতবর্ষীয় আর্য্যসমাজে শিক্ষার কালকে ব্রহ্মচর্য্য নাম দেওয়া হইয়াছিল । ভারতবর্ষ জানিত, ব্ৰহ্মলাভের দ্বারা মনুষ্যত্বলাভই শিক্ষা । সেই শিক্ষা ব্যতীত গৃহস্থতনয় গৃহী, রাজপুত্র রাজা হইতে পারে না । কারণ গৃহকৰ্ম্মের মধ্য দিয়াই ব্রহ্মকুাভ, রাজকৰ্ম্মের মধ্য দিয়াই ব্ৰহ্মপ্রাপ্তি ভারতবর্ষের লক্ষ্য । সকল কৰ্ম্ম, সকল আশ্রমের সাহায্যেই ব্ৰহ্ম-উপলব্ধি যখন ভারতবর্ষের চরমসাধনা, তখন ব্রহ্মচর্য্যই তাঙ্গার শিক্ষা না হইয়া থাকিতে পারে না । কিন্তু অধুনা ব্ৰহ্মলাভকেই আমরা জাবনের একমাত্র সম্পূর্ণত ও লক্ষ্য বলিয়। যখন জ্ঞান করি ন—যখন আমরা ধনমানের অর্জনকে, ঐশ্বর্য্যের আড়স্বরকে, স্বখের চরিতার্থতাকেই সকলের উচ্চে রাখিস্নাছি, এমন কি. দেশহিত-লোকহিতকে যখন আমল্প দশের অনুবৰ্ত্তলস্বরূপে অন্ধভাবে পালন করিয়া যাই – ব্রহ্মের সহিত 化ー前5「 বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ, ফাঙ্কন । যুক্ত করিয়া তাহার নিত্যসত্যতা দেখি না, তাহার বিশুদ্ধিরক্ষা করি না, তাহাকে সঙ্কীর্ণ করিয়া নষ্ট করি—স্কুদ্রের অনুরোধে বৃহৎকে, উপস্থিতের অনুরোধে চিরন্তনকে, স্বাদেশিকতার অনুরোধে মনুষ্যত্বকে, প্রয়োজনের অনুরোধে কল্যাণকে বিসর্জন দিই, তখন স্বভাবতই ব্রহ্মচর্য্যের স্থান ব্রাহ্মসমাজ অধিকার করে, তখন সমস্ত জীবনের সাধনার পরিবর্তে দলবদ্ধ সৃপ্তিাহিক উপাসনাই প্রধান হইরা উঠে এবং তখন ব্রহ্মসাধনার মূল্য এতই কমিয়া যায় যে, যে ইচ্ছা বেদীতে আরোহণ করিয়া যাহা ইচ্ছ। বলিয়৷ গেলে আমরা বিশেষ বিস্মিত হই না । ‘অথ পরা যয়৷ তদক্ষরমধিগম্যতে”—যে বিদ্যা দ্বারা সেই অক্ষর পুরুষকে জানা যায়, তাহাকেই যদি পরা বিদ্য বলিয়া জানিতাম, প্রতিদিনের কৰ্ম্মে সেই অক্ষর পুরুষকে সমস্ত জীবনের মধ্যে লাভ করাই যদি একমাত্র . লাভ বলিয়া জ্ঞান করিতাম—যদি আমাদের প্রার্থনা সত্য হইত, আমাদের লক্ষ্য ধ্রুব হইত, তবে নিজে নিজে ব্রাহ্মনাম ধরিয়া, ব্ৰহ্মনামের ধ্বজ তুলিয়া সঙ্কীৰ্ত্তন করিয়া, প্রচারফণ্ডে কিছু কিছু চাদ দিয়া অন্ত সকল সমাজের চেয়ে আপনাদিগকে বড় মনে করিয়া আনন্দিত থাকি তাম না । যে যাহা যথার্থভাবে চায়, সে তাহার উপায়ু সেইরূপ যথার্থভাবে ত,বলম্বন করে । যুরোপ যাহ। কামনা করে, বাল্যকাল হইতে তাহার পথ সে প্রস্তুত করে, তাহার সমাজে, তাহার প্রাত্যহিক জীবনে সেই লক্ষ্য জ্ঞাতসারে এবং অজ্ঞাতসারে সে ধরিয়ী রাখে । এই কারণেই যুরোপ দেশজয় করে, ঐশ্বৰ্য্যলাভ করে, প্রাকৃতিক শক্তিকে নিজের সেবা
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫২৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।