পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(tՀԵ “ঈশ বাস্তমিদং সৰ্ব্বং যৎকিঞ্চি জগত্যাং জগৎ । তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জীথ মী গৃধঃ কস্ত স্বিন্ধনম্।” ‘বিশ্বজগতে যাহা-কিছু চলিতেছে, সমস্তকেই ঈশ্বরের দ্বারা আবৃত দেখিতে হইবে—এবং তিনি যাহা দান করিয়াছেন, তাহাই ভোগ করিতে হইবে—অন্তের ধনে লোভ করিবে नीं * ইহার অর্থ এমন নহে যে, “ঈশ্বর সর্ববাণপী” এই কথাটা স্বীকার করিয়া লইয়া, তাহার পরে সংসারে যেমন ইচ্ছা, তেমনি করিয়া চলা । যথার্থভাবে ঈশ্বরের দ্বার সমস্তকে আচ্ছন্ন করিয়া দেখিবার অর্থ অত্যস্ত বৃহৎ— সেরূপ করিয়া না দেখিলে সংসারকে সত্য করিয়া দেখা হয় না এবং জীবনকে অন্ধ করিয়া রাখা হয় । “ঈশ বাস্তমিদং সৰ্ব্বম”— ইহা কাজের কথা—ইহা কাল্পনিক কিছু নহে—ইহা কেবল শুনিয়া জানার এবং উচ্চারণদ্বারা মানিয়া লইবার মন্ত্র নহে । গুরুর নিকট এই, মন্ত্র গ্রহণ করিয়া লইয়া তাহার পরে দিনে দিনে পদে পদে ইহাকে জীবনের মধ্যে সফল করিতে হইবে । সংসারকে ক্রমে ক্রমে ঈশ্বরের মধ্যে ব্যাপ্ত করিয়া দেখিতে হইবে । পিতাকে সেই পিতার মধ্যে, মাতাকে সেই মাতার মধ্যে, বন্ধুকে সেই বন্ধুর মধ্যে, প্রতিবেশী, স্বদেশী ও মনুষ্যসমাজকে সেই সৰ্ব্বভূতান্তরাত্মার মধ্যে উপলব্ধি করিতে হইবে । ঋষিরা যে ব্ৰহ্মকে কতখানি সত্য বলিয়া দেখিয়াছিলেন, তাহ। তাহাদের একটি কথাতেই বুঝিতে পারি।--তাহার। বলিয়াছেন – “তেৰামেবৈব ব্ৰহ্মলোকে যেষাং তপে ব্রহ্মচৰ্য্যং যেষ্ণু সত্যং প্রতিষ্ঠিতম।” दछनश्वॉन ! [ ৩য় বর্ষ, ফাঙ্কন । ‘এই যে ব্রহ্মলোক অর্থাৎ যে ব্রহ্মলোক সৰ্ব্বত্রই রহিয়াছে—-ইহা তাহীদেরই, তপস্যা যাহাদের, ব্রহ্মচর্য্য যাহাদের, সত্য র্যাহাঁদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত ।” অর্থাৎ র্যাহারা যথার্থভাবে ইচ্ছ। করেন, যথার্থভাবে চেষ্টা করেন, যথার্থ উপায় অবলম্বন করেন । তপস্ত। একটা কোনে কৌশলবিশেষ নহে, তাহ কোনো গোপনরহস্ত নহে—“খতং তপঃ সত্যং তপঃ শ্রুতং তপঃ শাস্তং তপো দানং তপো যজ্ঞস্তপো ভুভু বঃম্বর ন্ধৈতদুপাস্তৈতৎ তপঃ”—ঋতই তপস্ত, সত্যই তপস্তা, শ্রুত তপস্তা, ইক্রিয়নিগ্রহ তপস্তা, দান তপস্তা, কৰ্ম্ম তপস্ত। এবং ভূলোক-ভুবলোক-স্বলোকব্যাপী এই যে ব্রহ্ম, ইহার উপাসনাই তপস্তল । অর্থাৎ ব্রহ্মচর্য্যের দ্বার। বল, তেজ, শাস্তি, সস্তোষ, নিষ্ঠ ও পবিত্রতা লাভ করিয়া, দান ও কৰ্ম্ম দ্বারা স্বাৰ্থপাশ হইতে মুক্তিলাভ করিয়। তবে অন্তরে-বাহিরে, আত্মায় পরে, লোকলোকস্তরে ব্রহ্মকে লাভ করা যায় । এরূপ উপলব্ধি কখনই শুস্কমাত্র ভাবের দ্বারা, সপ্তাহে সপ্তাহে শ্রবণ ও কীৰ্ত্তনের দ্বারা হইতে পারে না, ইহা প্রতিদিনের কন্মের দ্বারাই সম্ভবপর। পরের সেবা ন! করিয়া আমরা কেবল দুরে বসিয়া ধ্যান করিয়া . পরকে আপনার করিতে, আপনার বলিয়া জানিতে পারি না ।“ পরকে যে পরিমাণে আপনার করিব, সেই পরিমাণেই ব্রহ্মের মধ্যে বিশ্বকে উপলব্ধি করিব।--সেই উপলব্ধিই সত্য উপলব্ধি—তাহা আমাদের অস্তরগত আত্মরচিত কুহেলিকা মহে । এই উপলব্ধির পরিমাণ পাওয়া যায়, ইহাকে পরীক্ষা করিতে পারি—এই উপলব্ধির আদর্শ গ্রহণ করিলে