পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

《8었 { ৩য় বর্ষ, ফাঙ্কন । কাড়িয়া লইলে যে মরিয়া ব্রহ্মদৈত্য হইতে হইবে ! আমার বুঝি সে ভর নাই ? রমেশের ব্রহ্মদৈত্য হইবার আশঙ্কায় কমলার হঠাৎ হাসি পাইয়া গেল । সে হাসিতে হাসিতে কহিল—“কথখন না । দিয়া বাড়িয়া লইলে বুঝি ব্রহ্মদৈত্য হইতে হয় ? আমি ত কখনো শুনি নাই ।” এই অকস্মাৎ হাসি হইতে সন্ধির স্বত্রপাত হইল । রমেশ কহিল-“আম্ভের কাছে কেমন করিয়া শুনিবে ? যদি কখনো কোনো ব্ৰহ্মদৈত্যের দেখা পাও, তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেই সত্য-মিথা জানিতে পরিবে ।” কমলা হঠাৎ কুতূহলী হইয়া-উঠিয়া জিজ্ঞাসা কfরল—“আচ্ছা, ঠাট্ট নয়—তুমি কখনো সত্যকার ব্রহ্মদৈত্য দেখিয়াছ ” রমেশ কহিল—“সত্যকার নয়, এমন অনেক ব্রহ্মদৈত্য দেখিয়াছি ! ঠিক খাটিজিনিষটি সংসারে &লভ ।” কমলা । কেন, উমেশ যে বলে--- . রমেশ । উমেশ ? উমেশ ব্যক্তিটি কে ? কমল । আঃ, ঐ যে ছেলেটি আমাদের সঙ্গে যাইতেছে, ও নিজে ব্রহ্মদৈত্য দেখি স্বাছে ৷ রমেশ । এ সমস্ত বিয়ং ফু পর্য্যবেক্ষণশক্তিতে আমি উমেশের সমকক্ষ সহি, এ কথ। .আমাকে স্বীকার করতেই হইবে । ব্ৰহ্মদৈত্যসম্বন্ধে আমার জ্ঞান অত্যস্ত সঙ্কীর্ণ । ইতিমধ্যে বহুচেষ্টায় খালাসির দল জাহাজ ভাসাইয়। ছাড়িয়া দি সুগ্ৰছে । "দুর গেছে, এমৃন সময়ে মাথায় একটা চাঙারি লইয়া একটা লোক তার দিয়া ছুটিতে ছুটিতে হাত তুলির জাহাজ থামাইবার জন্ত অমুনর

  • नl न1,

কিছু করিতে লাগিল । সারেং তাহার ব্যাকুলতায় দৃকপাত করিল না । তখন সে লোকটা রমেশের প্রতি লক্ষ্য করিয়। “বাবু বাবু” করিয়া চৎকার আরম্ভ করির দিল । রমেশ কহিল, “আমাকে লোকটী ষ্টীমারের টিকিটবাবু বলিয়। মনে করিয়াছে।”--রমেশ তাহাকে দুই হাত ঘুরাইয়। জানাইয়া দিল, স্কীমার থামাইবার ক্ষমতা তাহার নাই । হঠাৎ কমলা বলিয়া উঠিল, “ঐ ত উমেশ ! ওকে ফেলিয়। যাইয়ো না—ওকে তুলিয়। লও!” - রমেশ কহিল, “ আমার কথায় ষ্টীমার থামাইবে কেন ?” কমলা কাতয় হইয়া কহিল, “না, তুমি থামাইতে বল বল ন৷ তুমি—ডাঙা ত বেশি দুর নয় !" রমেশ তখন সারেংকে গিয়া ষ্টীমার থামাইতে অনুরোধ করিল . সারেং কহিল, “বাবু, কোম্পানির নিয়ম নাই ।” কমলা বাহির হইয়া গিয়া কহিল— “উহাকে ফেলিয়। যাইতে পারিবে না— একটু থামাও : ও আমাদের উমেশ " রমেশ তখন নিয়মলঙ্ঘন ও মাপ ও ভঞ্জনের সহজ উপায় অবলম্বন করল । পুরস্কারের আশ্বাসে সারেং জাহাজ থামাহয়। উমেশকে তুলিয়া-নহয় তাহার প্রতি বহুতর ভৎপনা প্রয়োগ করিতে লাগিল । সে তাহাতে ভ্ৰক্ষেপমাত্র না করিয়া কমলার পায়ের কাছে ঝুড়িট নামাইয়া, ধেন কিছুই হয় নাই, এমনি ভাবে হাসিতে লাগিল । কমলার তখনে বক্ষের ক্ষোভ দুর হয় ।