পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

في العجوي পরিত্যক্ত এবং একাকিনী বলিয়া মনে হুইল —সেই ক্ষুদ্র কাঠের ঘরটা একটা-কোনো নিষ্ঠুর অপরিচিত জন্তুর হী-কর মুখের মত তাহার কাছে আপনার অন্ধকার মেলিয়া দিল । কোথায় সে যাইবে ? কোনখানে আপনার ক্ষুদ্র শরীরটি পাতিয়া-দিয়া সে চোখ বুজিয়া বলিতে পারিবে, "এই অামার আপনার স্থান ?” স্বরের মধ্যে উকি মারিয়াই কমলা আবার বাহিরে আসিল । বাহিরে আসিবার সময় রমেশের ছাতাটা টিনেয় তোরঙ্গের উপর পড়িয়া-গিয়া একটা শব্দ হুইল । সেই শব্দে চকিত হইল্প রমেশ মুখ তুলিল এবং চৌকি ছাড়িয়া উঠিল্প দেখিল, কমলা তাহার শুইবার কামরার সাম্নে দাড়াইয়া আছে । কহিল— “একি কমলা ! আমি মনে করিয়াছিলাম, তুমি এতক্ষণে গুইয়াছ ! তোমার কি ভয় করিতেছে নাকি ? আচ্ছা, আমি আর বাহিরে বসিব না—আমি এই পাশের ঘরেই শুইতে গেলাম--মাঝের দরজাটি বরঞ্চ খুলিয়া রাখিতেছি ।” 够 কমলা উদ্ধতস্বরে কfহল—“ভয় আমি করি না !” বলিয়া সবেগে অন্ধকার ঘরের *[GĢIJ ছুকিল এবং যে দরজা রমেশ খোলা রাখিয়াছিল, তাই সে বন্ধ করিয়া দিল । .বিছানার উপরে আপনাকে নিক্ষেপ করিয়া মুখের উপরে একটা চাদর ঢাকিল সে বেন জগতে আর-কাহীকে ও না পাইয়া কেবল আপনাকে দিয়া আপনাকে নিবিড়ভাবে ৰেষ্টন করিল । রদেশ মলে করিপ্লাছিল, এতক্ষণে কমলা শুইতে গেছে –এ ছাড়। কমলাসম্বন্ধে জার-কিছু তাহার মনে কল্পি বঙ্গদর্শন । [ ৩য় ৰূখ, ফান্ধন । বার ছিল না ! কমলা দিনের বেলা কাজ করিবে এবং সন্ধ্যা হইলেই শুইতে যাইবে— কমলার আর-কিছুই প্রয়োজন নাই ! রমেশ মনে করিয়াছে, কমলার ভয় করিতেছে ! রাগে লজ্জায় কমলা ঘুমাইতে পারিল না--- তাহার চোখ-দুটা জ্বলিতে লাগিল, চোখে জল আসিল না । তাহার সমস্ত হৃদয় বিদ্রোহী হইয়া উঠিল । যেখানে নির্ভরতাও নাই, স্বাধীনতাও নাই, সেখানে প্রাণ বাচে কি করিয়া ? রাত্রি আর কাটে না । পাশের ঘরে রমেশ এতক্ষণে ঘুমাইয়া পড়িয়াছে । বিছানার মধ্যে কমল। আল্প থাকিতে পারিল না । আস্তে আস্তে বাহিরে চলিয়া আসিল । জাহাজের রেলিং ধরিয়া তারের দিকে চাহিয়া রহিল । কোথাও জন প্রাণীর সাড়গশব্দ নাই —চাদ পশ্চিমের দিকে নামিয়া পড়িতেছে। দুই ধারের শস্তক্ষেত্রের মাঝখান দিয়া যে সঙ্কীর্ণপথ অদৃশু হইয় গেছে, সেই দিকে চাহিয়া কমলা ভাবিতে লাগিল, “এই পথ দিল্পী কত মেল্পে জল লইয়। প্রত্যহ জ্ঞাপন ঘরে ষার !” ঘর ;–ঘর বলতেই তাহার প্রাণ যেন বুকের বাহিরে ছুটিয়৷ আসিতে চাহিল ! একটুখানিমাত্র ঘর—কিন্তু সে ঘর কোথায় ! শূন্ততীর ধুধু করিতেছে—প্রকাও আকাশ দিগন্ত হইতে দিগন্ত পর্য্যস্ত স্তব্ধ । অনাখণ্ডক আকাশ-- অনাবশুক পৃথিবী—স্কুদ্র খালিকার পক্ষে এই অন্তহীন বিশালতা অপরিসীম অনাৰণ্ডক— কেবল তাহার একটিমাত্র ঘরের প্রয়োজন ছিল। এমন-সময় হঠাৎ কমল চমকিয়া উঠিল —কে একজন তাহার অনতিদূরে দঁাড়াইল্পী জাছে । . -