পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢šwr বঙ্গদর্শন ! [ ৩য় বর্ষ, চৈত্র । ভাবিয়া বাহির করিতে হইবে না—আমি নিজে সমস্ত বিস্তারিত বলিয়া দিব। প্রপম দফায় আমি পানটা কিছু বেশি খুই, কিন্তু সুপারি গোটা-গোট থাকিলে চলিবে না । জামাকে বশীভূত করা সহজ ব্যাপার না— কিন্তু মার ঐ হালি-মুখখানিতে কাজ অনেকটা অগ্রসর হইয়াছে । আহা, এমন হাসি ত আমি কোথাও দেখি নাই ! ওরে, তোর নাম কিরে ” উমেশ উত্তর দিল না । সে রাগিয়াছিল --তাহার মনে হইতেছিল, কমলার স্নেহরাজ্যে বৃদ্ধ যেন তাহার সরিক হইয়া-আপিয়া উপস্থিত হইয়াছে। কমলা তাহাকে মৌন দেখিয়া কছিল, ওর নাম উমেশ ।” বৃদ্ধ কছিলেন, “এ ছোকরাটি বেশ ভাল । একদমে ইহার মন পাওয়া যায় না, তাহ স্পষ্ট দেখিতেছি, কিন্তু দেখো মা, আমি তোমাকে লিখির-পড়িয়া দিতে পারি, এর সঙ্গে আমার বলিবে । কিন্তু আর বেলা করিয়ে না, আমার রান্না হইতে কিছুমাত্র বিলম্ব হইবে না ।” কমলা যে একটা শূন্ততা অমুভব করিতেছিল, এই বৃদ্ধকে পাইয় তাহ ভুলিয়া গেল। তাহার প্রথম পরিচয়ের কুষ্ঠিত স্মিতহাস্ত দেখিতে দেখিতে সকৌতুক কলহাস্তে পরিণত হইল। রমেশও এই বৃদ্ধের আগমনে এখনকার মত কতকটা নিশ্চিস্ত হইল । সে বুঝিয়াছিল, কমলার সহিত তাহার সম্বন্ধটা কমলার কাছেও প্রহেলিকা হইয়া উঠিয়াছিল। যদি ও কমল সংসারে অনভিজ্ঞ, তবুও রমেশের ৰ্যবহারে সে একটা-কি বেতাল-বেস্থর অমু ভব করিতেছিল— এমন অবস্থায় পরম্পরে A . মধ্যে একটা সহজভাব রক্ষণ করা উত্তরোত্তর দুরূহ হইয়া উঠে। প্রথম কয়মাস যখন রমেশ কমলাকে আপনার স্ত্রী বলিয়াই জানিত, তখন তাহার আচরণ, তখন পরস্পরের বাধাবিহীন নিকটবৰ্ত্তিতা এখনকার হইতে এতই তফাৎ যে, এই হঠাৎ প্রভেদ বালিকার মনকে আঘাত না করিয়া থাকিতে পারে না । এমন সময়ে এই চক্রবর্তী আসিয়া রমেশের দিক হইতে কমলার চিস্তাকে যদি থানিকট বিক্ষিপ্ত করিতে পারে, তবে রমেশ আপনার হৃদয়ের ক্ষতবেদনায় অখণ্ড মনোযোগ দিয়া বঁাচে ।

  • রমেশবাবু!” “আজ্ঞে !” “আপনারা বড়লোক-গোলাপজল অবশুই ব্যবহার করিয়া থাকেন। আচ্ছা দেখুন দেখি, একটু নমুনা আপনার জন্ত মানিলাম --গন্ধটা কি-রকম ?”

গোলাপজলের সম্বন্ধে রমেশের বুৎপত্তি যে সাধারণের চেয়ে কিছুমাত্র বেশি ছিল, তাহ নহে, কিন্তু সে বলিল—“বাঃ. চমৎকার । এ কোথায় পাইলেন ?” চক্ৰবৰ্ত্তী কহিলেন—“এ আমাৰু নিজের কারখানায় চোলাই করা । আপনারা ত মামুষের পরিচয় লওরা আবশুক বোধ করেন ন—কাজেই আমাকে নিজের পরিচয় নিজেই দিতে হয় । আমি গাজিপুরে থাকি । সেখানে আমি গবর্মেন্ট, স্কুলে পঞ্চমশ্রেণীতে অঙ্ক কষাই’। কবিরাজিও করি । একটা দোকান ও রাখিয়াছি—তাহাতে বিলাতি জিনিষ থাকে —সাহেবরা আমাকে ভালবাসে—সবাই আমার খরিদার । ষে বৎসর স্থৰিধ দেপি,