পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাদশ সংখ্য । ] • কমলা কথাটা না বুঝিয়া চাহিয়া রহিল । বৃদ্ধ কহিলেন, “রমেশবাবু তবে কি এখনো তোমাকে বলেন নাই ? তোমাদের যে কাশি ষা ওয়া স্টির হুইয়াছে ।” শুনিয়া কমল। ‘হঁ-ন।” কিছুই বলিল না । কিছুক্ষণ পরে কহিল, “খুড়োমশায়, তুমি পারিত্বে লা, দণ ও, তোমার বাক আমি সাজাইয়া দিই ।” কাশি-ঘা ওয়-সম্বন্ধে কমলার এই ঔদাসান্তে চক্ৰবৰ্ত্তী হাদয়ের মধ্যে একটা গভীর আঘাত পাইলেন । মনে মনে ভাবিলেন, “ভালই হইতেছে, আমার মত বয়সে আবার নুতন জাল জড়ানো কেন ?” ইতিমধ্যে কাশী যা ওয়ার কথা কমলাকে জানাইবার জন্য রমেশ আসিয়া উপস্থিত হইল । কহিল, “ মামি তোমাকে খুজিতেছিলাম।” . কমলা চক্ৰবৰ্ত্তীর করিয়া গুছাই তে লাগিল । “কমলা, এবার আমাদের গাণ্ডি পুরে যাওয়া হইল না . আমি . স্থির করিয়াছি, কাশীতে গিয়া প্রাকৃটিস্ করিব । তুমি কি বল ?” কমলা চুক্ৰব শ্রীর বাক্স হইতে চোখ ন৷ তুলিয়া কহিল, “না, আমি গাজিপুরেই যাইব । আমি সমস্ত জিনিষপত্র গুছাইয়। লই য়াছি।” কমলার এই দ্বিধাহাম উত্তরে রমেশ কিছু আশ্চৰ্য্য হইয় গেল কহিল, “তুমি কি একলাই যাইবে নাকি ?” কমল চক্ৰবৰ্ত্তীর মুখের দিকে তাহার স্নিগ্ধচকুতুলিয়া কছিল, “কেন, সেখানে ত খুঁড়োমশায় অাছেল ?” কমলার এই কথায় চক্রবর্তী কুষ্ঠিত হইয়া কাপড়চোপড় ভাজ রমেশ কহিল, নৌকাডুবি &శిన পড়িলেন—কহিলেন, “মা, তুমি যদি সস্তানের প্রতি এতদূর পক্ষপাত দেখাও, তাহ হইলে রমেশবাবু আমাকে ছচক্ষে দেখিতে পারিবেন না ।” ইঙ্গর উত্তর কমলা কেবল কহিল, “আমি গাজিপুরে যাইব ।” এ সম্বন্ধে যে কাহারে কোন সম্মতির অপেক্ষ আছে, কমলার কণ্ঠস্বরে এরূপ প্রকাশ পাইল না । রমেশ কহিল,“খুড়ো, তবে গণজিপুরই স্থির।” ঝড় জলের পর সেদিন রাত্রে জ্যোৎস্না পরিষ্কার হুইয়া ফুটিয়াছে । রমেশ ডেকের কেদারায় বসিয়া ভাবিতে লাগিল—“এমন করিয়া আর চলিবে না । ক্রমেই বিদ্রোহী কমলাকে লইয়। জীবনের সমস্ত অত্যন্ত দুরূহ হইয়। উঠিবে। এমন করিয়া কাছে থাকিয়া দুরত্বরক্ষা করা দুরূহ। এবারে হাল ছাড়িয়া দিব ! কমলাই আমার স্ত্রা—আমি ত উহাকে স্ত্রী বুলিয়াই গ্রহণ করিয়াছিলাম । মন্ত্র-পড়া হয় নাই বলিয়াই কোনো সঙ্কোচ করা অন্যায়। যমরাজ সেদিন কমলাকে বধুরূপে আমার পাশ্বে আনিয়া-দিয়া সেই নির্জন সৈকতদ্বাপে স্বয়ং গ্রন্থিবশ্বন করিয়া দিয়াছেন— তাহার মত এমন পুরোহিত জগতে কোথায় আছে ?” 峻 হেমনলিনী এবং রমেশের মাঝখানে একট। যুদ্ধক্ষেত্র পড়িয়া আছে । বাধা, অপমান, অবিশ্বাস কাটিয়া যদি রমেশ জয়ী হইতে পারে, তবেই সে মাথা তুলিয়া হেমনলিনীর পাশ্বে গিয়া দাড়াইতে পারিবে । সেই যুদ্ধের কথা মনে হইলে তাহার ভয় হয়---জিতিবার কোনো আশা থাকে না । কেমন করিয়া