দ্বিতীয় সংখ্যা । ] আপনাকে আর ফুস্কৃতিকারী বলিয়া স্বীকার করে না । এখন রমেশ মনকে এই কথা বলে যে, কি অপরাধে বাল্যবিবাহকে একেবারে নির্বাসনদণ্ড দিতে চাহিয়াছিলাম, তাহা এখন বুঝিতে পারি না । মিলনের, বাৎসল্য হইতে সখ্যে, সখ্য হইতে শ্রদ্ধায়, লাল হইতে প্রণয়ে, প্রণয় হইতে মঙ্গলে পুরিণত হইবার প্রত্যেক সোপানটি মধুর, এবং প্রত্যেকটিই অত্যাধশুক । পরস্পরের জীবন এইরূপ ক্রমে ক্রমে স্তরে স্তরে সানারসের মধ্য দিয়া মিশিয়া গেলে তবেই সে মিলন সম্পূর্ণ হয় । স্ত্রীকে যে আপনার সহিত ও আপনার পরিবারের সহিত একাত্ম করিতে চায়, সে দাম্পত্য সন্মিলনের গঙ্গোত্রী হইতে সাগরসঙ্গম পৰ্য্যস্ত অভিব্যক্তির কোন পৰ্য্যায়কেই উপেক্ষা করিতে পারে না । 激 এমুনি করিয়া রমেশ নিজেকে বেশ করিয়া বুঝাইল । ন বুঝাইলেও বধূর প্রতি আকর্ষণ কিছুমাত্র কম হইত, তাহ নহে । সে এই বালিকার মধ্যে কল্পনার দ্বারা তাহার ভবিষ্যৎ গৃহলক্ষ্মীকে উদ্ভাসিত করিয়া তুলিয়াছে। সেই উপায়ে তাহার স্ত্রী একই কালে বালিকা বধু, তরুণী প্রেয়সী, এবং সস্তানদিগের অপ্ৰগলভ মাতা রূপে তাহার ধলননেকের সম্মুখে বিচিত্রভাবে বিকশিত হইয়া উঠিয়াছে। চিত্রকর তাহার ভাবা চিত্রকে, কবি তাহার ভাবী কাব্যকে যেরূপ সম্পূর্ণ স্বর্নররূপে কল্পনা করিয়া হৃদরের মধ্যে • একান্ত অাদরে লালন করিতে থাকে, রমেশ সেইরূপ . এই ক্ষুদ্র বালিকাকে উপলক্ষ্যমাত্র করিয়া ভাবী প্রেস্তুসীকে—কল্যাণীকে পুর্ণমহীয়সী মূৰ্ত্তিতে নৌকাডুবি । & a . হৃদয়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করিল। এ নিজের জীবনের একটি সুদুরব্যাপী ছবি তাহার মনের সম্মুখে জাগিয়া উঠিল । দেখিল, ম্যালেরিয়া- • গ্রস্ত বাংলাদেশের বাহিরে খণ্ডপ্রস্তরে আকীর্ণ একটি ছোট নদীর ধারে গিরিবন্ধুর প্রাস্তরের প্রান্তে শালবনের ছায়ায় তাহদের নুতনবাধা গৃহ ;--সহরে কাছারির কাজ সারিয়া এইখানে যখন সে ফিরিয়া আসে, তখন অপরাহ্ন বনশ্রেণীর মধ্যে সন্ধ্যার রক্তিময় মিলাইয়া যায়, নীড় প্রত্যাগত নীরব পার্থীদের বিশ্রামের মধ্য দিয়া ছায়াপথে তাহার গাড়িটি বাড়ীর দ্বারে আসিয়া দাড়ায় । তাহদের, বাড়ার অদূরে শৈলমুলে ফুটিএকটি গ্রাম আছে—সেখানকার সরল গ্রাম্য নারীরা ডালায় করিয়া ক্ষেতের ফল্পমূল-শাকসবজি । বিক্রয় করিতে আসিয়াছে ; তরুণী গৃহকত্রী পিঠের উপরে শাড়ীর আঁচলটি তুলিয়া বারান্দায় টবের গাছগুলির মধ্যে একখানি ছোট মোড়া লইয়া বসিয়া গৈছেন ; যাহার একপয়সা দাম, তাহ দুপয়সা দিয়া কিনিতেছেন, এবং এই ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে গ্রাম্য হিন্দিতে আলাপের খুব ধুম পড়িয়া গেছে । রমেশ আসিয়া পৌছিতেই পিঠের আঁচলটি কবরীর প্রাস্তুভাগে টানিয়া দিয়া গৃহিণী ঈষৎ হাসিমুখে উঠিয় দাড়াইলেন। রমেশ একটু পরিহাস করিয়া বুলিল, “ঠাকরুণ, তুমি যে সওদাগরা আরম্ভ করিয়াছ, আমাকে ফেল করিবে দেখিতেছি।” ঠাকুরুণ তাহার, উত্তর না দিয়। রমেশের আহারের ব্যবস্থা করিতে চলিলেন । এই কেন উপলক্ষ্য করিয়া রমেশনী পল্লীর মেয়েদের অগপনার করিয়া #इब्रारश्न-डिनि ইচ্ছাপূৰ্ব্বক
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৬২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।