পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ, জ্যৈষ্ঠ । و امانة " হইবে না। একে একে সেই কথা সেই দেবদত্ত শঙ্খ লইয়া দৈত্যবধ করিতে গিয়াছিলেন । বিষ্ণু কি ইন্দ্রের শঙ্খটাও বলিতেছি । t (১) চক্রটি বিষ্ণুর পৈতৃক সম্পত্তি ; ওটি নিশ্চয়ই আদিত্যের চক্র । তবে এ চক্রটি বড় সুন্দরদর্শন এবং ইন্দ্রের দম্ভোলি অপেক্ষাও ক্ষমতাসম্পন্ন । (২) পদ্মটি জ্ঞাতিকুলের বা পূৰ্ব্বপুরুষের সম্পত্তি নহে। শিবপূজাপ্রবন্ধে বলিয়াছি যে, পৌরাণিক যুগের সূত্রপাত -বৈদিক বৌদ্ধ এবং অনার্য্যধৰ্ম্মের মিশ্রণে । বৌন্ধেরা যে বুদ্ধদেবকে ত্রিমূৰ্ত্তিবিশিষ্ট করিয়াছিল, সে কথাও কিঞ্চিৎ বলিয়ছিলাম ; বজ্রপাণি বুদ্ধ, অমিতাভ বুদ্ধ এবং পদ্মপাণি বুদ্ধ লইয়া এই ত্রিমূৰ্ত্তি । শিব বা মহেশ্বর যে বজপাণি বুদ্ধের স্থলাভিষিক্ত, সে কথা পূৰ্ব্বে লিখিগছি। পৌরাণিক ত্রিমূৰ্ত্তিকল্পনা যখন বৈদিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত নহে, তখন ব্ৰহ্মা এবং মহেশ্বর যে ঐ ত্রিমূৰ্ত্তির অনুরূপ নব দেবতা, তাহাতে সন্দেহ থাকে না । বিষ্ণু যে পদ্মপাণি বুদ্ধের পদ্মটি হাতে করিয়া উপস্থিত, তাহ তাহার শান্তিময়-স্বরূপ-বর্ণনা হইতেও কতকটা বুঝিতে পারা যায়। ব্ৰহ্মার সম্বন্ধেও ঐ কথা । ত্রযুক্ত দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের বৌদ্ধ, ও হিন্দুধৰ্ম্মের ঘাতপ্রতিমাত প্রবন্ধে এ বিষয়ের বিশেষ বিবৃতি আছে ! তিনিলিখিয়াছেন যে, “অমিতাভ বুদ্ধ, কিনা অপরিমিত জ্যোতি —ইহাকে স্ববৰ্ণজ্যোতি হিরণ্যগৰ্ভ ব্ৰহ্মা বলিলেও চলে ।” এ সকল কথার পর পদ্মের অন্য উৎপত্তি স্বীকার করা জুসাধ্য নহে । (৩) শঙ্গের ইতিহাস? একটু জটিল । ইন্দ্ৰ বেচারার একটা শঙ্খ ছিল ; অর্জুন লইয়া আসিয়াছিলেন ? পুরাণে দেখিতে পাই যে, একবার আর্য্যবিদ্বেষী একটা দৈত্য অপৰ্য্যদিগের অনেক স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি চুরি করিয়া সমুদ্রগর্ভে চলিয়া গিয়াছিল । অস্থাবর সম্পত্তি কুবেরের শঙ্খনিধি এবং স্থাবর সম্পত্তি বেদ । বিষ্ণু তখন মৎস্ত হইয়া বেদ উদ্ধার করিলেন এবং শঙ্খটিও লইয়া আসিলেন । শখটি কি পুরস্কারের হিসাবে হাতেই রহিয়া গিয়াছিল ? এখানে বলিয়া রাখি যে, বিষ্ণুর অবতারকল্পনার । জন্ত জলপ্লাবনের মৎস্তের কথাটা এখানে নুতনভাবে রচিত। আবার অন্যত্র দেখিতে পাই যে, এক একটি জাতি বা বংশে এক একটি বিশেষ রণবাদ্যের যন্ত্র ছিল । শ্ৰীকৃষ্ণ পঞ্চজন অসুরকে বধ করিয়া পাঞ্চজন্ত শঙ্খ লাভ করিয়াছিলেন । এখন কথা এই যে, বিষ্ণুর হস্তে একটা শঙ্খ ছিল বলিয়া কৃষ্ণকে একটি শঙ্খ দেওয়া হইয়াছে, অথবা যদুকুলে শঙ্খ ছিল বলিয়া বিষ্ণুর হস্তে ইন্দ্রের শঙ্খ ক্লিয়া বিষ্ণু এবং কৃষ্ণের অভেদ কল্পিত হইয়াছে ? ( ৪ ) শ্ৰীবৎসলাঞ্ছন বড় সহজ রকমের জিনিষ নহে। যাত্রার দলের কৃষ্ণ যে কুলকিনার না পাইয়া “খড়িমাটিরে বলদেব” বলিয়াছিল, তাহাতে অণর বিস্ময় হয় না । পুরাণকৰ্ত্তারা বলেন য়ে, একটা বিশেষ আকৃতিতে কুঞ্চিত শুক্লবর্ণের বক্ষোরোমের নাম শ্ৰীবৎস । জৈনদিগের দশম জিনের বক্ষেও ঐ চিহ্ল ছিল । জিনের চিন্তু বিষ্ণু লইয়াছেন কিংবা বিষ্ণুর চিন্তু জিন লইয়াছেন, তাহ নিৰ্দ্ধারণ করা সহজ নহে ; কারণ,