পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় সংখ্যা । ] বাজে খরচ । ૧૯ . না । দোলাইগুলা মলিন হইলে সাধারণ কাপড়ের সহিত রজকালয়ে পাঠাইয়া ধোয়াইয়। লইলেই হইত, কিন্তু “আলোয়ান” কাচিবার জন্য আবার স্বতন্ত্র বন্দোবস্ত করিতে হয়। এখন জিজ্ঞাসা করি, শীতের হীত হইতে আত্মরক্ষার জন্ত প্রতি বৎসর এত টাকার বিলাতী পাট ক্রয় করা কি একান্তই আবগুক ? সময়ের পরিবর্তনের সহিত রুচির পরিবর্তন অবশুম্ভাবী, কিন্তু সে পরিবৰ্ত্তনটা যদি অবনতির দিকে হয়, তাহা হইলে সেটা আমাদের বড় গৌরবের কথা নহে। . সেদিন লেখকের একজন বন্ধু মানভূমঅঞ্চল হইতে একখানা গরদ আনাইয়া জামা প্রস্তুত করিবেন বলিয়া তিনদিন কলিকাতায় যাতায়াত করিলেন । কলিকাতায় কে একজন নাকি ভাল দরজী আছে, তাহার দ্বারা জামার ছাট শুদ্ধ করাইয়া লইবার জন্য এই কৰ্ম্মভোগ করিয়া তিনতিনদিন কলিকাতায় গমনাগমন । জামাটি যদি আমাদের দেশী পিরাণ বা পাঞ্জাবী হইত, তাহা হইলে এতু কৰ্ম্মভোগ হইত না ; সে গরদে কোটু হইবে। বাবুও কোটু ধরিয়াছেন জামাটি ছাটশুদ্ধ হওয়া চাই, তা যতই কেন খরচ হউক না ; অবশেষে সাহেববাড়ী পর্য্যন্ত দেখিবেন। বাঁবুটি শিক্ষিত,—একজন হাকিম । কলিকাতা ও নিকটবৰ্ত্তা ভদ্রযুবকদিগের পোষাকের কতটা দেশী ও কতটা বিলাতী, তাহার পরিমাণ করিলে দেখিতে পাই যে, এক পরিধানের ধুতি ছাড়া আর সমস্তই বিলাতী। জুতা ও মোজা এখন বিলাতী হইয়াও দেশী হইয়া পড়িয়াছে ; কিন্তু গেঞ্জি, শার্ট, ওয়েসকাটু, কোটু, কলার, নেকটাই, আলষ্টার, এমন কি ধুতির উপর একটা নাইট্রক্যাপ, যে দিক দিয়া দেখি, সেই দিকেই অনাবশুক বিলাতী পোষাক। কেবল ধুতির জন্তই বাবুকে ফিরিঙ্গী হইতে বিভিন্ন বলিয়া চিনিতে পারা যায় । জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসের দারুণ গ্রীষ্মের সময়ও এই সকল পোষাক ব্যবহার করিতে দেখা যায়। কেবল আলষ্টারটা শীতকালেই (তাও মধ্যান্ত্রেও বাদ যায় না ) দেখিতে পাই । একদিন হাবড়াষ্টেশনে একজন প্রাচীন বাঙালী ভদ্রলোককে দেখিলাম, তাহার সুদীর্ঘ শ্বেতৰ্ম্মশ্র দেখিয়া বোধ হয় তিনি ষাট " ছাড়াইয়া সত্তরে পদার্পণ করিতে উষ্ঠত। তাহার. . সমস্ত পোষাক খাটি দেশী ধরণের ;–ধুতি, পিরাণ, উড়ানী ; কিন্তু মাঝে হ’তে মাথায় এক নাইট্রক্যাপ এমন অদ্ভুক্ত বিসদৃশ । , এই ত গেল পোষাকবিভ্ৰাট। তাহার উপর আবার আচারব্যবহার লোকলৌকিকতা আছে । কলিকাতায় নাকি পৌষসংক্রাস্তির সওগাদের পূৰ্ব্বে আবার বড়দিনের সওগাদ দেখা দিয়াছে । কস্তার বিবাহের ব্যয় একটা অপরিহার্য্য-প্রলয়স্বরূপ হইয়। উঠিয়াছে। সে সম্বন্ধে বর্তমান প্রবন্ধে আলেtচনা অনাবশু্যক । কিন্তু বিবাহের আমুষঙ্গিক ব্যয়গুলা, যেগুলা আমাদের বুৈবাহিকের জেদ করিয়া খরচ করান না, সেগুলাও আমরা কত বিকৃত করিয়া ফেলিয়াছি। বিবাহের পুৰ্ব্বে গাত্রহরিদ্র বা অধিবাস এবং পরে ফুলশয্যা উপলক্ষ্যে আজকাল যে কিপ্রকার তুতুত আদানপ্রদান হইয়া থাকে, তাহ দেখিলে চমৎকৃত হইতে হয় । e প্রায় তিনচার বৎসর হইল, লেখকের পরিচিত কোন.বি.এ-ফেল করা যুবকের