পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8○8 পুরাতন অবস্থানের এবং বিলুপ্তগৌরবের পরিচয় প্রদান করিতে লাগিল। আরও কিয় অগ্রসর হইলে, বগপুর নামক পল্লী দেখিতে পাওয়া গেল । একটি সুদীর্ঘ সরোবর, তাহার তীরে একটি পুরাতন বৃক্ষ, বৃক্ষমূলে এক সুবৃহৎ দেবমূৰ্ত্তির ভগ্নাবশেষ ; —গ্রামের মধ্যে এক খনি প্রস্তরফলকে যোগাসমোপবিষ্ট নয়টি নারীমূৰ্ত্তি, দৃষ্টিপথে পতিত হইয় কৌতুহল বদ্ধিত করিয়া তুলিল । গ্রামের লোকে সন্ধান দিল,—মাঠের. মধ্যে একটি সরোবর অtছে, ত{হার নাম-—“মঠপুকুর ।” সেখানে গিয়া বিস্ময়ের অবধি রহিল না। গ্রামের লোকে ইষ্টকাহরণের লোতে সরোবরতীরে মৃত্তিক। খনন কপ্লিয়া, এক অতিপুরাতন মঠের তিক্তি বাহির করিয়া ফেলিয়াছে । তাহীদের খননশ্ৰমই সার হইয়াছে। মঠ এত পুরাতন যে তাহার ইষ্টকর্যশি জীর্ণ হইয়া গিয়াছে। নিকটে একখানি মুবৃহৎ কৃষ্ণ প্রস্তরের দ্বারফলক পড়িয়া রহিয়াছে । তখন সুর্য্যদেব অস্তাচলের আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছেন, ধরেন্দ্রের নতোন্নত বিস্তৃত প্রাস্তরের উপর সন্ধ্যার অঞ্চলছায়া ধরে ধীরে নামিয়া আসিবার আয়োজন করিতেছে । হস্তী পরিশ্রাস্ত হইয়া থাকিয়! পাকিয়া অর্জনাদ জ্ঞাপন করিতেছে । পিপাসার জল অনেকক্ষপ ফুরাইয়া গিয়াছে, মাহুত পথ ভুলিয়া যে সীমাশূন্ত প্রাস্তরের মধ্যে হস্তীকে চালিত করিয়া আনিয়াছে, তাহার কোন খানে আরম্ভ এবং কোন খানে শেষ, তাহ আর প্রতিতাত হইতেছে না। অবশেষে গৃহাভিমুথে প্রত্যাবৰ্ত্তনকারী বঙ্গদর্শন । [ ১১ম বর্গ, পৌষ, ১৩১৭ । জনৈক কৃষকের নির্দেশে কোনরূপে শিবিরে প্রত।াবর্তন করিতে করিতে রাত্রি অৰিক হুইয়া গেল । শিবিরে আনঙ্গ-কোলাহল পড়িয়া গিয়াছে। “রাজার বাপের টেকি” উঠিয়াছে, তাহাকে একেবারে মাঠের সমতলক্ষেত্রের উপর তুলিয়া রাখা হইয়াছে। “রাজার মার টেকি" সম্পূর্ণরূপে শেষ পর্যন্ত বাহির হইয়া পড়িয়ছে ;–পঞ্চাশ জন সাঁওতাল দড়িদড়। লইয়াও তাহাকে উপরে টানিয়। তুলিতে পারে নাই ! দুইটি টেকির দৈর্ঘ্য প্রায় একরূপ ;–ঢেকি নহে,—প্রদায়েশ্বর মন্দিরের দ্বারফলক,—চৌকাঠের উপরের এ 1ং নীচের প্রস্তরফলক,—কারুকার্য্য খচিত,— আট হাত,-বার ফিট,”—ইত্যাদি সংবাদ ( হস্তীর উপর হইতে অবতরণ করিতে না করিতেই } অভ্যর্থনা কfরতে লাগিল । কৌতুহল প্রবল হইলেও, সে রজনীতে আর চক্ষুকর্ণের বিবাদভঞ্জনের অবসর রহিল না। বরেন্দ্রের ননানাবাসী গ্রামনিবাসী দিবাকর ভট্টের সুযোগ্য পুত্র কুলুক ভট্ট “মকুসংহিতার” টীক। রচনা করিয়া, অমর হইয়া রহিয়াছেন । র্তাহার নাম, তাহার পণ্ডিত্য, সভ্যসমাজে সুপরিচিত । বরেঞ্জের এক নিভৃত পল্লীতে,—ভাণপুর নামক গ্রামে, -- কুলুক ভট্টের এক বংশধর এখন ৪ বাপ করিয়৷ থাকেন। আমরা প্রতুৰে ভণিপুরের নিকটবর্তী কোন কোন গ্রামে তপ্যাধুসন্ধানে বহির্গত হইব, মধ্যাছে শিবিরে প্রত্যাবর্তন করিতে পারিব না, এই সকল বিবেচন৷ করিয়া, কুলুকবংশধর স্বতঃ প্রবৃত্ত হইয়া, তাহার গৃহে মধ্যাহ্নে আতিথ্য-স্বীকারের