رسوایی তাৎপৰ্য্য —প্ৰলয়কালে সমগ্র বিশ্ব বিনষ্ট হুইয়াছিল বলিয়া যে তাহার বিনাশক মৃত্যু ছিল, তাহা নহে ; আর মৃত্যু ছিল না বলিয়া যে আমরণ ছিল, তাহাও নহে। অর্থাৎ সেই ভেদরহিত অবস্থায় মৃত্যু ও অমৃত্যু-ভেদমূলক এই দুই বস্তুই ছিল না। সর্বজীবের পরি. পঙ্ক কৰ্ম্মসকলের যখন ভোগ গুইয়া যায়, তখন ভোগের অভাবে জগতের প্রয়োজনীয়তা সেই সময়ে পরমেশ্বরের মনে অনন্তর তিনিই অতএব থাকে না । জগৎ-সংঙ্গরের ইচ্ছা হয় । মৃত্যুরূপে জগৎ সংস্থার করেন । প্ৰলয়কালে মৃত্যুরই বা স্থান কোথায় এবং তদ্বভাবভূত অমৃত্যুরই বা স্থান কোথায় ? জীবের ভোগের জন্যই মুতু্য ও অমরণরূপ পরিবর্তনের লীলা । ভোগ ফুরাইলে এই লীলা ও ফুরায় । তখন রাত্রি ও থাকে না, দিন ও থাকে না, অর্থাৎ, অহোরাত্র, মাস, দিন, সংবৎসর প্রভৃতির দ্বারা নিদিষ্ট কাল থাকে না । কালের কোলে জীব ক্রীড়া করে । কালে সে সুখী হয়, কালে দুঃখী *য়, কালে জন্মে, কালে মরে । এইরূপে জীবের সুখদুঃখহেতু কালের প্রয়োজন ও অস্তিত্ব । পুনশ্চ, স্বৰ্য্য ও চন্দ্রের উদয়ই কালের হেতু । প্রলয়ে এই সকল হেতুর অভাবে কালের অভাব হয় । প্রশ্ন হইতে পারে-- যদি কাল ছিল না, তাহ হইলে “তৎকালে সৎ ছিল না” এই কাল নির্দেশ কিরূপে হইল ? ইহার উত্তর এই যে, উপচারহেতু অর্থাৎ মিথ্যাজ্ঞান ৰ মায়াহেতু এই কালের নির্দেশ ; মানুষ বখন কোন বিযয়েয় নিযেখ করে, তখন কাল সেই নিযেধের অবচ্ছেদক হইলেও মায় ঐ অবচ্ছেদের হেতু। বঙ্গদর্শন [ ১৩শ বর্ষ, ভাদ্র, ১৩২০ মায়ার অধীন জীব মায়ারহিত অবস্থার যথাযথ নির্দেশ করিতে পায়ে না, এবং জৈব ভাষাও মায়াজনিত কালকে বাদ দিয়া ঐ অবস্থা প্রকাশ করিতে পারে না । এইজন্য অবচে&দ কত্ব রহিত অকাল-অবস্থাকেও কালবাচক শব্দ দ্বারা নির্দেশ করিতে হয় । এইরূপে প্ৰলয়কালে আবরণসহ ব্ৰহ্মাণ্ড, মৃত্যু, অমৃত্যু ও কাল অর্থাৎ ভেদমূলক ও ভেদরূপী সমস্ত পদার্থই নিষিদ্ধ হই ল ৷ তাই হইলে তৎকালে কি ছিল ? ইহার উত্তরে ঋযি বলিতেছেন— সেই সকল বেদ। স্তু প্রসিদ্ধ এক ব্ৰহ্মতত্ত্ব ছিল । জীবের নিকট প্রাণই অস্তিত্বের নিদর্শন এবং প্রাণ বায়ুমূলক। ব্ৰঙ্গ কি এইরূপ বায়ুমূলক প্রাণস্থায় প্রাণিত ছিলেন ? ইহার উত্তরে ঋষি বলিতেছেন—ব্রহ্মের অস্তিত্ব বায়ুর উপর নির্ভর করে না, ত{চার প্রাণ অবfত অর্থাৎ বায়ুর অপেক্ষ রহিত । যদি এক অদ্বিতীয় ব্ৰহ্ম হজুই ছিল, তবে জগৎকারণ সত্ত্বরই স্তমোগুণান্ত্রি ঃ মায়া কে{থায় গেল ? (স্বধা = মায়। স্বস্মিন ধীয়তে প্ৰিয়তে আশ্রিত্য BBB S BS BBS SS SBBBB BBB BS BBB করিয়া যে থাকে সেই স্বধা বা মায়া বা প্রকৃতি ) মায়! সেই ব্ৰহ্মতত্ত্বের সহিত এক হইয়। আপি ভক্তরূপে ছিল । ঋষির এই বাক্য দ্বারা মায়া বা প্রকৃতির সন্ধ্ৰপত্ব অর্থাৎ পারমার্থিক নিবৃঢ়ি সন্ত প্রত্যাখ্যাত হইতেছে। ব'লতে পার, মায় যদি ব্রন্ধের সহিত এক হুইয়াছিল, তাহা হইলে ব্রহ্মসত্তাকে অবাতপ্রাণিত বলিলে কিরূপে, এবং ব্রহ্মসত্তায় যখন মায়াপত্তা ছিল, তখন‘সৎ ছিল নী” এ কথাই বা বলিলে কিরূপে । এরূপ আশঙ্কা অমূলক ; কারণ, ব্ৰহ্ম ও মায়াকে ভিন্নরূপে দৰ্শন-হেতুই
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৩২৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।