বঙ্গদর্শন মনোমত কেহ এতক জুটে নাই! দেবী কারুবকী স্বয়ংমঞ্জুলার অভিভাবিক ; যে সৌভাগ্যবান মঞ্জুলাকে লাভ করিবে, সে ত রূপ গুণ ধন সম্পদ-আকাঙ্ক্ষার সমস্ত বস্তু একাধারে লাভ করিবে !” স্মিতমুখে উৎপলা বললেন – “লোভ হর কি ?—দেখি ও উপকৃতাই বা শেষে বাঞ্ছিত হয় !” Qおや [ ১৩শ বর্ষ, অগ্রহায়ণ, ১৩২০ প্রমীত হাসিয়া উঠিলেন ; উৎপলার মুখ চুম্বন করিয়া কৰলেন ;–“রূপ গুণ ধন সম্পদ কি কবচ ভেদ করিতে পারে ” প্রমীত হাসিলেন ; কিন্তু সে হং স ধেন ফুল্ল হৃদয়ের স্বচ্ছন্দজাত ললিত হৃষ্ট হাসি নষ্ঠে, কিছু যেন উদ্বেগজড়িত, সঙ্কুচিত হাসি ! মুগ্ধ উৎপল। কিন্তু উচ্ছসিত হৃদয়ে স্বামীদত্ত ঋণ সদ্য পল্লিশোধ করিলেন । ক্রমশঃ শ্ৰীভবানীচরণ ঘোষ। বেহার-চিত্র (রলপথে অপরাহ হইয়া আসিয়াছে ; জামালপুর হইতে গরার গাড়ী ছাড়িবার আয় বিলম্ব নাই। “পুরি—মিঠাই,” “পান-বিড়ি— দেয়াসলাই," "ক্ষীরা—কাকড়ি-তরমুজা” —ফেরিওরালাদের বিচিত্র সুর ক্রমে মন্দীভূত হইয়া আদিতেছে ; গার্ডসাহেব হরিৎ নিশান হস্তে ধীরে ধীরে পাদচারণা করিতেছেণ । এমন সময় একজন বিশালদেহ মাড়োয়ারি গলদঘর্ক্সকলেবরে হাপাইতে হাপাইতে মধ্যশ্রেণীর কক্ষে প্রবেশ করলেন । র্তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ একজন কুলি এক বিশাল মোট এবং বাক্স লইয়া উপস্থিত হইল । শেঠজি মোট নামাইয়া লইয়া কুলিকে দিয়া ‘বেঞ্চের উপর আপনার শয্যা রচনা করছিয়া লইলেন, তাহার পর অত্যন্ত উদার ভাবে জটিল বস্ত্রগ্রন্থ উন্মোচন করিয়া তাহার হস্তে দুইটি পয়সা দিয়া বলিলেন, “লেও বকৃসিস।” কুলী চীৎকার করিয়া উঠিল “ওপার হইতে এপারে মোট আনিবার সাধারণ মজুরিই এক আনা ; তাহার উপর সে দুই জনের মোট —একাকী বহন করির অনিরছে । তাহার এই মজুরি ” উভয়ে ঘোরতর তর্ক বিতর্ক লাগিয়া গেল । বহুতর্কের পরে শেঠfজ হতাশ হইয়া বললেন যে এ সকল বড়ই “জুলুমের” কথা। একটা মোট বাঁহবার মজুরি এক আনা । এরূপ অবস্থায় ভদ্রলোকের পক্ষে অষ্ট কাজ না করিয়া মজুরি করাষ্ট ত ভাল ! জটিলতর গ্রন্থি বহুকষ্টে উন্মোচন করিয়া শেঠজি কাতর ভাবে আর একটি পরসা বাহির করিয়া বলিলেন “লেও ভাই মিনসে তুম্ থুপ হোও।” কুলি আর তর্ক করা বৃথা বুঝিয়া অমুচ্চস্বরে শেঠজির সম্বন্ধে নানা অযথা বিষয়ের আলোচনা করিতে করিতে ৰিদায় গ্রহণ করিল।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৪৭৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।